ভূতদের মজলিস
কোলকাতার গড়ের মাঠে ভূত ও পেত্নীদের সভা বসেছে।নানান বিষয়ে আলোচনা চলছে।শোঁনো এখানে বসলে হাড়ে বাঁতাস লাঁগে।
সবাই হিঁ হি করে হেঁসে বলে আজকের সভা শুরু কঁরুন।
এই ভূতদের দলের নাম ছিল গুপচুপ দল।
যারা অসুখে মারা গেছে তারা একসাথেই থাকত।তাদের আবার ভাগ ,কোন রোগে মৃত্যু।
একদল ট্রেনে কাটা—একদল বাস চাপায় মৃত্যু—-নদীতে ডুবে—-কলেরা—মৃগী সব আলাদা দল।
এরা কিন্তু কবরের ভূত নয়।সব আগুনে জ্বালিয়ে দেওয়া ভূত।
আজ যাদের সভা বসেছে ওরা সব ফুচকা ভূত।ফুচকা খেয়ে মৃত্যু।
বলতো কোন খাবার আমরা খুব ভালোবাসতাম।হাতে শালপাতা নিয়ে খেতাম।সবাই হাত তোলে কেউ বলে ফুচকা,গোলগাপ্পা,পাণিপুরি,গুপচুপ,ফুলকি,টিক্কি,বাতাসী।যত নাম তত তার ধরন।
হিঁ হিঁ ঠিঁক আঁছে আচ্ছা আমরা সব এক রকম ভূত।
সভায় তাহলে বক্তৃতা শুরু হোঁক—একজন বলল আমি লালু আর রাবড়ি দেবীর কুটুম।
পাণিপুরি তো বিহারের । ঐ রাবড়ির মেয়ের বিয়েতে পাণিপুরি খেয়ে মৃত্যু হয়েছে।
ফুলকির নাম বারানসীতে শুঁনবে। বারানসী গঙ্গার ঘাটে শ খানেক ফুলকি খেয়ে কিঁ যেঁ পেটে ব্যথা।তারপর শেষ।
আঁচ্ছা ছোট্ট একটা লুচি—ভেতরে ফুটো করে মশলাদার আলু মটরের পুর— সঙ্গে তেঁতুল জল।
এ স্বাদ কোন খাবারের সঙ্গে তুলনা হয়না।
হ্যাঁ ঠিঁক বঁলেছ বঁন্ধু।
লুচিটাই তো পরে পুরভরা গোলগাপ্পা। বাংলায় তোমরা যাকে ফুচকা বঁলো।
ফুঁচকার কঁথা মনে করালে তোঁমরা।
বড় রাস্তায় এক বুড়ো গোলগাপ্পা বিক্রি করছে।চঁলো খাঁবে নাঁকি?
মহাভারতের কুঁন্তির নাম শুঁনেছিলে তো—
কুন্তী নাকি নববধূ দ্রোপদীকে আলু আর ময়দা দিয়ে বলেছিলেন পঞ্চ পান্ডবদের জন্য খাবার বানাতে। দ্রোপদী তখন বানিয়ে ছিলেন ফুচকা। কুন্তী খাবারটি খেয়ে এতটাই মুগ্ধ হয়েছিলেন যে বৌমাকে অমরত্বের বর দিয়েছিলেন।
তাঁহলে ফুঁচকার কঁথা মঁহাভারতেও ছিঁল।
বুঝতে পাঁরলাম স্থান অনুযায়ী গোলগাপ্পা,ফুচকা,টিক্কির খাবার পদ্ধতি আলাদা।
স্থান অনুযায়ী আলুর পুর, আলু মটর পুর, সব্জির পুর, স্যালাডর পুর ব্যবহৃত হয়। তেঁতুল জলের বদলে দেওয়া হয় পুদিনার জল,খেজুর জল। তেঁতুল জলের বদলে দই দেওয়া হয় ।তাকে নাকি দৈ ফুচকা বলে।
উড়িষ্যার পাণিপুরিতে পেঁয়াজ দেয়।এঁ মা তাই নাকি গো।হ্যাঁ পেঁয়াজ দেওয়া ফুঁচকা খেঁয়ে মঁরেছিলাম।এঁত বাজে লাগছিল,তাঁও দুশটা ফুঁচকা খেঁয়ে পেটগরম হয়ে মরে গেলাম।
যাঁই বলো বাংলার ফুচকা সবচেয়ে ভালো।
এঁতক্ষণ খেয়াল হয়নি আমাদের মিটিং চলাকালীন চারদিকে বিভিন্ন দলের ভূত আমাদের সব কথা শুঁনছে।তাঁদের জিঁবে ও জঁল।
চলো আজ এঁকটু ফুঁচকা খেঁয়ে গাঁছে উঁঠি। হ্যাঁ তাই চঁলো।
ফুচকা এমন খাবার মরে গিয়েও ভুলতে পারে না।