ভুলিনি তোমায় স্বাধীনতা—
সৃষ্টি-অবসাদ-মৃত্যু আর নিঃসঙ্গতায়
সময়ে-অসময়ে অস্থির বুকফাটা যন্ত্রণায়,
যেমন করে দুর্গম খাদ বেয়ে নেমে আসে উন্মত্ত ঝর্ণাধারা,
যেমন করে মাদলের দ্রিমি দ্রিমি তালে দুলে ওঠে
মনের অন্তর্বাস ছুঁয়ে থাকা অরন্যের মাদকতা,
তেমনই এক নিষ্ঠুরতায় তন্দ্রাচ্ছন্ন শ্রান্ত আঁখিতে
ধরা পড়ে স্বপ্নের ভাঙ্গা-গড়া স্বাধীনতার চিত্র,
খ্যাতি যাকে করেছে তিরস্কার নিষ্ঠুর বর্বরতায়,
বাতাসে ভাসছে আজও পরাধীনতার শৃঙ্খলের হাতছানি,
অস্থিরতার নেই কোনো পরিসমাপ্তি
তবুও অস্থায়ী স্মৃতির স্পন্দন থেকে উড়াল দিয়ে
মগজের গারদে অপেক্ষাতুর শিকারির মতো
ওঁত পেতে থাকে লাঞ্চিত অভিমান,
ভুলিনি তোমাকে স্বাধীনতা—
অবলম্বন তুমি, পাতালঘর থেকে চিলেকোঠার দূরত্ব মাপতে,
মারমুখী শৃংখলার তেজে কোন
অজাত ঊষার স্বপ্ন ধূলিতে লিপ্ত হতে,
আজও আছো তুমি, উঠোনের অলস সময়ে রক্তবিন্দু
হয়ে ঝরে পড়া বকুলের বিদ্রোহী স্মৃতিচারণে
শব্দসন্ত্রাস পাতাঝরা বৃক্ষের সঙ্গী হয়ে থাকতে,
অবলম্বন তুমি, সেই পচনশীল প্রকৃতির বিষাক্ত গহ্বর থেকে তুলে আনা এক মুঠো উন্মুক্ত দমকা বাতাস,
যার সজাগ সন্তরণে ছড়িয়ে পড়ে
আগামীর উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ মিলনের অভীপ্সা,
চাতকের প্রতীক্ষায় নষ্ট ভ্রূণ থেকে জেগে ওঠা
সহস্র আত্ম-বলিদানের কাহিনীতে ,
অথবা, রজঃস্বলা প্রকৃতির ক্রোড়ে ঘুমিয়ে থাকা
সৃষ্টির সকল সম্ভাবনায় ঢাকা স্বাধীনতার দীর্ঘশ্বাস,
তবুও, দিনলিপি জুড়ে পড়ে থাকুক পরাধীন ভাবনা যত,
যন্ত্রণার অনুরণনে মিটুক নিরন্ন সভ্যতার ক্ষত,
আদর্শ ও সততার বলে আরও একবার লালিত হোক
অখন্ড দেশপ্রেম সত্তা,
প্রগাঢ় অন্ধকারের কবর ভেঙে উঠে আসুক
স্বপ্ন-প্রগতির প্রতিভা,
ভুলিনি তোমায় স্বাধীনতা—
জয় হিন্দ !!!!