ভালবাসার সঙ্কট
সকালে, ঘুম থেকে উঠে রীতা দেখল, জানালাটা আধখোলা পাশের বিল্ডিং থেকে কান্নাকাটি চিৎকার চেঁচামেঁচি শোনা যাচ্ছে। আর জানলার পাশে রয়েছে চিঠিসহ একটা গিফট বক্স। কৌতুহলী মনে সে চিঠিটা পড়তে শুরু করে।
হাই!রীতা আমি জানি, আমি তোমার তুলনায় কিছু না, কোথায় তুমি আর কোথায় আমি, কিন্তু তুমি কি জানো, আমি তোমায় নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসি। আজ আকাশটা বেশ নীল। আমি যখন তোমায় এ কথাগুলো লিখছি, এই অন্ধকার রাতে তারাগুলো সুন্দর মিটমিট করে জ্বলছে। ওরা আমায় ডাকছিল জানো। আমি মরতে চাই না, কিন্তু তুমি যে আমায় ঘৃণা কর।আমাকে যোগ্য মনে কর না, জানো, সেই ঘৃণা আর অবজ্ঞা সহ্য করে বাঁচার ইচ্ছে নেই আমার। তোমার জন্য একটা চকলেট বক্স কিনছিলাম, আর গিফট পেপারে মোড়া ডাইরীটাও তোমার জন্য দিলাম ভালবেসে। অভিমান হচ্ছে তোমার উপর, তুমি কেন বুঝলে না আমি যে তোমায় অনেক ভালবাসি।তুমি যখন বুঝবে তখন আমি আকাশ থেকে বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে তোমার সব দুঃখ মুছে দেব, আর চাঁদ হয়ে তোমার সম্পূর্ণ জীবন স্নিগ্ধ আলোকে ভরে দেব। অপদার্থ রাজু।
চিঠিটা পড়তে পড়তে রীতার চোখে জল ভরে গেল হাত কাঁপছিল। রাজু তাকে এতো ভালবাসে!পেছনে পিসিমা কখন এসে দাঁড়িয়েছে রীতা টের পায়নি।তার মাথায় হাত দিতেই সে ঝরঝর করে কেঁদে ফেলল।পিসিমা জিজ্ঞাসা করলেন ছেলেটা কে রে? তাকে জড়িয়ে ধরে বলে, রাজু। তিনি জানতে চাইলেন রাজু কে? ও পাশের ফ্ল্যাটে থাকে। বড়লোক বাবার একমাত্র আদরের সন্তান। তবে পড়ালেখায় বাউন্ডুলে। ওর ধারণা ও আমাকে পেলে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ হবে। আমার কাছে ওর কথা ফাজলামীর মতই লেগেছিল। কারণ, আমার কাছে, রাজুর ভালবাসার অনুভূতিগুলো আমার মনকে সিক্ত করেনি। পড়ালেখায় অমনযোগী, ভবিষ্যত অনিশ্চিত তাকে নিয়ে সংসার গড়া যায় না। কাল হঠাৎ সে আমাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। আমি তখন তার গালে চড় মারি। রাজু যেন নিজের গালকে বিশ্বাস করতে পারছিল না।একসময় সে মাথা নিচু করে আমার সামনে থেকে চলে গেল, বিরক্ত হয়ে আমিও ফিরে আসি ঘরে। আজ আবার সে এই গিফটের সাথে এই চিঠিটা পাঠিয়েছে।গিফটটা কি নেওয়া যায়? বলতো পিসি আমার কি করা উচিত?