Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ভাত || Subhra Saha Shelley

ভাত || Subhra Saha Shelley

ভাত

তিনতলা ফ্ল্যাটবাড়ীটা তখন গানে, বাজনায় , অন্তাঃক্ষরীতে জমজমাট। মাঝে মাঝে চিয়ার্স এর আওয়াজ। বাচ্চারাও বাঁধন ছাড়া হয়ে সারা ছাদে হুটোপুটি করে বেড়াচ্ছে। এবারের মেনুটা মিসেস গুহই দায়িত্ব নিয়ে ঠিক করেছিলেন। বেশী হাবিজাবি না করে একদম সিম্পল খাবার। মর্টন বিরিয়ানী আর চিকেন চাপ। সাথে রায়তা আর স্যালাড। রবিবারের দুপুরে রাস্তাঘাট ফাঁকা। মাঝে মাঝে এক আধটা বাইকের আওয়াজ। হয়তো বা ভীষন কোন প্রয়োজনেই বেড়িয়েছে। এমন নিরবতা ভেঙ্গে একটা আওয়াজ ” একটু ভাত দেবে গো ,ভাত “—
কিছুক্ষন পরে ” দাও না গো , তিনদিন কিছু খাই নি। ভগবান তোমাদের ভালো করবেন। একটু ভাত —“
গগনভেদী আর্তনাদ ঢাকা পড়ে যায় ” প্যাহেলা প্যার ,প্যাহেলা নেশা—“র তলায়।
উর্দ্ধমুখী ঝোলা কাঁধে প্রানীটির তখনও বোধগম্য হয় নি তার এই আর্তি ঐ ওপর পর্যন্ত পৌঁছোতে পারে না।
এমন সময় এক পথচারী ” ভাত খাবে ? ঐ যে দুটো গলি পরে যে প্রাইমারী স্কুলটা আছে ওখানে যাও।”
আর্তনাদ ভুলে প্রানীটির চোখ জ্বলজ্বল করে ওঠে “তাই বুঝি , গেলেই খেতে দেবে ?”
“হ্যাঁ গো “
তিনদিন অনাহারে থাকা দুর্বল শরীরটা একটু ভাতের আশায় প্রাইমারী স্কুলের সামনে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে পড়ে। কিছুক্ষন পরে গরম ভাত ,ডালের গন্ধ নাকে আসতেই “তুমি তো আমার এরিয়ার না — “
ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকে তিনদিন অনাহারে থাকা প্রানীটি।
পাশ থেকে একজন বলে ওঠে ” কার্ড আছে ? কার্ড দেখাও তাহলেই হবে। “
“কার্ড ?সেটা কি “—
এবার গুরুগম্ভীর গলায় ” আরে একজনকে নিয়ে বসে থাকলে হবে ? লাইনে ভীড় কমাতে হবে তো ?”
ততক্ষনে লাইনের বাইরে দাঁড়িয়ে অনাহারে থাকা প্রানীটি বেশ কয়েকখানা ঢোক গিলে ফেলেছেন গরমভাত ,পেঁয়াজ ফোড়ন দেওয়া পাতলা মুসুর ডাল আর ঘ্যাট তরকারীর।
এমন সময় পেছন থেকে অনেকটা একইরকম দেখতে একজন বলে ” তিনদিন খাও নি তো। চলে এস এদিকটাতে ।”
হাতে তখন তার ধোঁয়া ওঠা গরম ভাত , পাতলা মুসুর ডাল আর ঘ্যাট তরকারীর শালপাতার থালা।
“আমাকে দিয়ে দিচ্ছো তুমি খাবে না ? “
“আমারও তোমার মতো তিনচারদিনের অভ্যেস আছে। —আজ আমার দ্বিতীয়দিন। তাছাড়া আজ কার্ডটাও খুঁজে পেয়ছি ।অসুবিধে নেই। আজ থেকে তোমার দায়িত্ব আমি নিলাম “

ফ্ল্যাটের গেটটুগেদ্যর শেষে বেঁচে যাওয়া মর্টন বিরিয়ানী তখন পরম যত্ন নিয়ে মিসেস এবি পথকুকুরদের খাওয়ানোতে ব্যাস্ত। সাথে মিষ্টার সিডি তার ভিডিও করে ফেবুতে —– ক্যাপশন ” পথ কুকুরদের কথাও ভাবুন “।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress