ও আমার রঙিলা নায়ের মাঝি, গহীন গাঙের ভাটিয়ালি
সুরপ্রিয় মাঝে, নাও বাইয়া কোথায় যাও? কোন্ সে গাঁয়ের
ঘাটে তুমি ভেড়াবে সাধের নাও? ওরে
গাড়িয়াল ভাই, রাঙাধুলি গায়ে নিয়ে যাবে তুমি
দুলা আর দুল্হিন নিয়ে কোন্ ঠিকানায়? হায়, আমি এই
খোলা পথে দাঁড়িয়ে রয়েছি বড় একা, আমাকেও সঙ্গে নাও।
ও আমার রঙিলা নায়ের মাঝি, তোমার গানের
শিল্পীকে খুঁজছ তুমি কোথায় এখন? গোধূলিতে কান পেতে
আছো যে সুরের জন্যে, তাঁর অপরূপ
প্রতিধ্বনি গুঞ্জরিত পদ্মা আর মেঘনার ঢেউয়ে ঢেউয়ে,
উত্তরবঙ্গের লাল মাটির অন্তরে। অতীতের দিনগুলি,
রাতগুলি মঞ্জরিত মৃত্যুঞ্জয় গায়কের সুরের নির্ঝরে।
ওহে গাড়িয়াল ভাই, যার গানের মোহন সুরে
দুলত গাড়ির চাকা, যুগল গরুর
পথ চলা, তাঁর
সুরের মায়ায় মুগ্ধ আজও নদীনালা, বাঁশবন,
প্রান্তর, পাহাড় আর শহরতলি
শান্তিনিকেতন আর রাজধানীর সুরম্য বহুতল বাড়ি।
কার গীত, কার সুর এমন সর্বত্রগামী, কে সেই মহান
প্রামীণ সুরসাধক? কার সুরের ছোঁয়ায় জেগে ওঠে আজও
সঙ্গীতপিপাসু প্রাণ? কার সুরে ধূলি-ধূসর পথের ধারে
নিমেষেই ফোটে ফুল, হৃদয় ব্যাকুল হয় দূর
দিগন্তের না-দেখা দৃশ্যের জন্যে, কে তিনি? কে তিনি? ভাটিয়ালী
সুর হয়ে বেজে ওঠে তাঁর নাম-আব্বাসউদ্দীন তিনি আব্বাসউদ্দীন।