Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ব্রহ্ম পুরাণ || Prithviraj Sen » Page 13

ব্রহ্ম পুরাণ || Prithviraj Sen

চণ্ডালরা সাধারণতঃ অধার্মিক আর নিষ্ঠুর হয়। কিন্তু অবন্তী নগরবাসী এক চণ্ডালের স্বভাব ছিল একেবারে ভিন্ন প্রকৃতির। পশুর চামড়ার ব্যবসা করত সে। কিন্তু কোনও লোভ ছিল না। তাতে সংসার চালাতে যতটুকু খরচ সেটুকু হলেই হল। একটি মহৎ গুণ ছিল তার, সুন্দর উত্তাল গাইতে পারত। তার থেকেও তার আর এক বিশেষ গুণ ছিল, বৈষ্ণবীয় আবার পালন করত সে, প্রতি মাসে দুটি একাদশীতে উপবাস করত। বিষ্ণু মন্দিরে গিয়ে সুন্দর সুন্দর ভক্তিমূলক গান গাইত সারারাত্রি বসে। পরদিন সকালে বাড়ি ফিরে কোন বৈষ্ণবকে সেবা দিয়ে তারপর সে নিজের উপবাস ভঙ্গ করত।

এইভাবেই শুদ্ধাচারে থাকে সেই চণ্ডাল। একদিন সকালে বিষ্ণু দেখার জন্য শিপ্রা নদীর ধারে গেল ফুল তুলতে এমন সময় সেখানকার একটি বহেড়া গাছ থেকে বেরিয়ে এল এক ব্রহ্মরাক্ষস। হাঁ করে ছুটে এল চণ্ডালের দিকে।

চণ্ডাল খুব ভয় পেয়ে গেল। কিন্তু বাইরে যেন ভীত নয় এমন ভাব দেখিয়ে হাত জোড় করে সবিনয়ে বলল–তুমি আজ আমাকে ছেড়ে দাও। কালকে আমাকে খাবে। আমি কথা দিচ্ছি। কালকে সকাল সকাল আমি তোমার কাছে আসব।

চণ্ডালের কথা শুনে রাক্ষস বলল আজ দশ দিন হল এ পথে কেউ মাড়ায় না কাজেই আমি না খেয়েই আছি। মরতে বসেছি খিদের জ্বালায়। আর তুমি বলছ–কালকে খাবে। কিন্তু কেন?

চণ্ডাল বলল আজ আমার বিষ্ণুপূজার দিন। তাই এসেছি ফুল-ফলাদির যোগাড় করতে। তাই অনুরোধ করছি, আজকের দিনটা আমাকে ছেড়ে দাও। আমি কথা দিচ্ছি, কালকে নিশ্চয় আসব তোমার কাছে।

রাক্ষস বলল–কিন্তু আমি তোমাকে বিশ্বাস করব কেমন করে? তুমি ত মিথ্যা কথা বলে আর নাও আসতে পারো, কি প্রমাণ আছে তোমার?

চণ্ডাল বলল–প্রমাণ আর কি দেব, আমার কথাই আমার প্রমাণ। আমি তিন সত্যি করে বলছি আসব, আসব, আসব। পিছিয়ে এল রাক্ষস, চণ্ডালের পথ মুক্ত হল। ফুল-ফলাদি নিয়ে চণ্ডাল গেল বিষ্ণুমন্দিরে। ব্রাহ্মণ ঠাকুর পূজা শেষ করে চলে গেল আর চণ্ডাল মধুর কণ্ঠে গান গাইল ভক্তি সঙ্গীত। সারারাত কেটে গেল, প্রভাত হতেই চণ্ডাল চলে এল বহেড়া গাছের তলায়। পথে কত লোক জিজ্ঞেস করেছে, বনের দিকে যাওয়ার কারণ কী? সকলের কাছে সত্য কথা বলেছে চণ্ডাল, সবাই শুনে তাকে মূর্খ বলে উপহাস করে বাড়িতেই ফিরে যেতে বলেছিল, কিন্তু ধর্মভীরু চণ্ডাল কারোর কথা শোনে নি। হাজির হল ব্রহ্মরাক্ষসের কাছে।

সত্যি সত্যি চণ্ডাল ফিরে এল দেখে ব্রহ্মরাক্ষস একেবারে অবাক হয়ে গেল। মনে ভেবেছিল যে আসবে না, খাবার কথা ভুলে গেল। ভাবল এ মানুষটা মানুষ নয়। জিজ্ঞাসা করল চণ্ডালকে–তুমি বিষ্ণু পূজা করার পর সারারাত কি করলে? আমার কথা চিন্তা করে তুমি বার বার ভয়ে কম্পিত হয়েছ?

চণ্ডাল বলল–না। ভয় পাব কেন? তোমাকে তিন সত্যি করে কথা দিয়েছি। তাই এলাম, কথা দিয়ে যে কথা রাখে না, সে মহাপাতক? কালকে আমি মন্দিরে গিয়ে পূজা দিলাম, তারপর সারারাত ধরে দেবতাকে গান শোনালাম, তারপর এই সকালে তোমার কাছে চলে এলাম। ঘরেও যাইনি। যদি জানতে পারে তোমার কথা তাহলে আমার স্ত্রী ছেলেপুলেরা কি আসতে দিত?

রাক্ষস বলল–তুমি এভাবে কতদিন বিষ্ণুর পূজা করছ?

চণ্ডাল বলল–প্রায় কুড়ি বছর হল প্রতি মাসে দুটি একাদশীতে এইভাবে পূজা দিয়ে আসছি।

চণ্ডালের কথায় ব্রহ্মরাক্ষস তো অবাক। এ আমি কাকে খেতে যাচ্ছিলাম। এতো বড় পূণ্যাত্মা। এত ঘটা বড় বড় ঘটি। সাধু সঙ্গে সব সিদ্ধি লাভ হয়। আমি যদি এই পূণ্যত্মার একটু পুণ্যলাভ করতে পারি তাহলে আমি এই রাক্ষস যোনি থেকে মুক্তি লাভ করব।

এই চিন্তা করে রাক্ষস চণ্ডালকে তার পুণ্য দান করার জন্য অনুরোধ করল। কিন্তু চণ্ডাল বলল–আমার আর পুণ্য থাকছে কেমন করে? তুমি তো এক্ষুণি আমাকে খাবে, তাহলে সবই তো তোমার কাছে চলে যাবে।

রাক্ষস বলল–আমি মহাপাপী। তাই রাক্ষসযোনি লাভ করে এতো যন্ত্রণা ভোগ করছি। তোমার সাক্ষাৎ যখন পেয়েছি তখন তুমিই আমাকে উদ্ধার কর।

চণ্ডাল বলল–তোমার কি পূর্বজন্মের কথা ঠিক মনে আছে? আমার নাম ছিল দেবশর্মা, পিতা ছিলেন এক নিষ্ঠাবান ব্রাহ্মণ। আমিও বাবার কাছে কাছে থেকে অল্পবয়সে সেই যজ্ঞাদির কাজ কিছু শিখে ছিলাম। একদিন আমি রাজবাড়িতে যুক্ত হচ্ছ শুনে বাবার সঙ্গে গিয়ে ঘৃতাহুতি দিলাম। দশ দিন ধরে যজ্ঞ করেছিলাম। তারপর শেষ আহুতির দিন আমায় মৃত্যু হল। তারপরই আমি এই রাক্ষস হয়েই আছি।

এখন তুমিই আমার ভরসা। কোন সৌভাগ্যের বলে তোমার দেখা পেয়েছি। তুমিই আমাকে উদ্ধার কর।

সব শুনে চণ্ডাল বলল–আমি জানি না, আমার কত খানি পুণ্য আছে? তবে যদি কিছু থাকে তার থেকে তোমাকে কিছু দিতে পারি, তবে আমার একটা শর্ত তোমাকে পালন করতে হবে।

রাক্ষস খুব উৎসাহের সঙ্গে বলল–কি তোমার শর্ত? আমাকে বল, আমি নিশ্চয় তা পালন করব। এ যন্ত্রণা আর সহ্য হয় না।

চণ্ডাল বলল–শর্ত একটাই। তুমি আর কোন প্রাণী হিংসা করবে না। সঙ্গে সঙ্গেই রাজী হয়ে গেল ব্রহ্মরাক্ষস। চণ্ডাল তার পুণ্যের কিছু অংশ দান করল তাকে, রাক্ষস চণ্ডালের পায়ে প্রণাম করে চলে গেল। পৃথক নামক তীর্থে আর কোন প্রাণী হিংসা না করে বহুদিন অনাহারে কাটিয়ে মুক্তিলাভ করল।

এদিকে চণ্ডাল বাড়ি ফিরে এল। কিন্তু তার আর সংসার ভালো লাগে না। ছেলের হাতে সংসারের ভার দিয়ে অজানার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়ল। ঘুরতে ঘুরতে এল বিন্ধ্যাচলে। একদিন সে মনে মনে চিন্তা করল–কেন তার চণ্ডাল কুলে জন্ম হল? পূর্বজন্মে সে কে ছিল?

এইভাবে চিন্তা করতে করতে পূর্বজন্মের কথা তার স্মরণে এল। পূর্ব জন্মে সে একজন সন্ন্যাসী ছিল। ভিক্ষাই ছিল জীবিকা। একদিন ভিক্ষাশেষে যখন আশ্রমে ফিরছে তখন কয়েকজন চোর অনেক গরু চুরি করে পালাচ্ছে, সেই গোরুগুলির ক্ষুরের ধুলো উড়ে তার অন্নের উপর পড়ল। মনে খুব রাগ জন্মাল, কিন্তু কাউকে কিছু না বলে সেই ভিক্ষার সকল জিনিস বাইরে ফেলে দিল। সন্ন্যাসী হয়েও যখন সে রাগ দমন করতে পারেনি, তাই তাকে চণ্ডাল হয়ে জন্ম নিতে হয়েছে।

এক বণিকের ছেলে ছিল তার নাম বিধর। দেশ-বিদেশে বাণিজ্য করে প্রচুর অর্থ সংগ্রহ করল সে। বিশাল বাড়ি যেন প্রাসাদ। স্বামী স্ত্রী মাত্র দুজনেই থাকে। কোন কিছুরই অভাব নেই। কিন্তু তাদের একটাই দুঃখ তার পত্নীর গর্ভে কোন ছেলে পুলে হয়নি। তাই বিশ্বধরের বিতৃষ্ণা সংসারে প্রতি যত দিন যায়, সেই বিতৃষ্ণাও তত বৃদ্ধি পায়।

যৌবন কাল গেল। প্রৌঢ় কাল গেল। এল বৃদ্ধ কাল। দিনে দিনে চিন্তা করে বৃদ্ধ। সে যখন মরে যাবে। তার বংশও লোপ পেয়ে যাবে এক দিন, এতদিন পরে করুণা হল, তার স্ত্রী গর্ভবতী হল। বিশ্বধরের মনে খুব আনন্দ। যথাকালে একটি পুত্র লাভ করল সে। পুত্রের মুখ দেখে বৃদ্ধের যে কি আনন্দ হল সকল বিতৃষ্ণা দূর হয়ে গেল। যেন নতুন জীবন লাভ করল। পুত্রের পরিচর্যায় সব সময় সজাগ দৃষ্টি।

দিনে দিনে বড় হতে লাগল সেই শিশু বালক। খেলাধূলা করে বেড়ায়। কি অদ্ভুত সুন্দর দেখতে। কোন রোগ ব্যাধি নেই। তার উপর বৃদ্ধ বয়সের পিতামাতার আদরের ধন। কিন্তু একদিন হঠাৎ মৃত্যু হল। যেন বজ্রাঘাত হল বাবা-মার মাথায়। আছড়ে পড়ল মৃত পুত্রের উপর। হায়। আমরা কি অপরাধ করেছি যার জন্য আমরা এই বৃদ্ধকালে পুত্রশোক পাচ্ছি। যদি দয়া করে দিলেন ঠাকুর। আবার ফিরিয়ে নিলেন কেন?

সেই বালকের মৃত্যুতে যমরাজ পাঠিয়ে দিয়েছে তার মৃতদের। কিন্তু তারা এসে দেখল যে মা-বাবা জড়িয়ে ধরে রেখেছে তাদের পুত্রকে। কাছে যেতে ভয় করছিল দুতেদের। ফিরে গেল যমলোকে। যমকে বলল সব কথা। যমরাজ ছুটে এল আর কিছুর দের নিয়ে বণিকের বাড়িতে। কিন্তু বালককে কেমন করে নিয়ে যাবে? বাবা মায়ের আকুল কান্না দেখে যমরাজের কঠিন প্রাণও গলে গেল। পারলেন না তাদের কোল থেকে সেই শিশুকে ছিনিয়ে নিতে।

বণিকের বাড়ি থেকে বেরিয়ে যমলোকে আর না ফিরে গোদাবরীর তীরে বসলেন। তপস্যা এবং ধ্যানে শান্তি লাভ করলেন যম।

এদিকে যমপুরীতে যম নেই। যমের রাজ্য অবল অবল হয়ে গেল। কে আদেশ করবে? দোর স্ত্রাণ নিয়ে আঘাত হবে? যমদূতের পুরিতে কাটছে। কোন কাজ নেই পৃথিবীতে মানুষও আর মরে না। কিন্তু যম তো হচ্ছেই কাজেই বেড়ে যাচ্ছে। মানুষের সংখ্যা খাদ্যলিখ্যে টান পড়ল। এত লোকের থাকবার জায়গা কোথায়।

এই অবস্থায় ধরিত্রী দেবী ভীত হয়ে পড়লেন। এভাবে যদি বাড়তে থাকে প্রাণীর সংখ্যা তাহলে শেষ পর্যন্ত কোথায় এসে দাঁড়াবে। চললেন দেবরূপ, যজ্ঞের কাছে গিয়ে পড়লেন। তার কাছে বললেন–দেবরাজ আমি আর সইতে পারছি না মানুষের ভার। যমরাজ তার দোষ দেখছেন না। এখন আমি করব কেমন করে? একটা কিছু করুন আপনি। আমার প্রাণ যে ওষ্ঠাগত।

পৃথিবীর কথা শুনে আশ্চর্য হলেন। যম তাহলে আর দায়িত্ব পালন করছে না। তাই তো পৃথিবীতে প্রাণীর মৃত্যু হচ্ছে না। কিন্তু কি করছে সে? তখন সিদ্ধ আর কিংকরদের ডেকে বললেন–তোমরা দেখবে যমরাজ এখন কি করছে? কোথায় আছে?

ইন্দ্রের আদেশ মত তারা যমপুরীতে গিয়ে দেখল, যমরাজ নেই। আর কোথায় যে তিনি তাও কেউ জানে না। ফিরে এসে তারা ইন্দ্রকে খবর দিল।

মহাচিন্তায় পড়লেন ইন্দ্র, তাহলে যমের পিতা সূর্যের কাছে যাওয়া যায়। তিনি নিশ্চয় বলতে পারবেন যম কোথায় আছে? চলল সবাই মিলে সূর্যের কাছে, জিজ্ঞাসা করল যমের সংবাদ।

সূর্যদেব একটু চিন্তা করে বললেন–আমার পুত্র মামন গোদাবরী তীরে তপস্যার রত আছে।

অবাক হয়ে ইন্দ্র জিজ্ঞাসা করলেন-যম আবার কার তপস্যা করছে?

সূর্যদেব বললেন–তা কিন্তু বলতে পারব না।

দেবরাজ কিন্তু খুব চিন্তায় পড়লেন। যমের তপস্যার কারণ কি? যমপুরীর রাজা হয়ে কি তার সাধ মেটেনি? সে কি অমরাবতীর রাজা হতে চায়? বিষ্ণুর তপস্যা করলে, তিনি তো এতটুকুতেই খুশি হয়ে যান। হয়ত যমকে তাই দিয়ে দিতে পারেন।

কিন্তু না, আর তাকে বাড়তে দেওয়া উচিত নয়। যেমন করেই হোক তার তপস্যা ভণ্ডুল করে দিতে হবে। সিদ্ধ আর কিন্নরীদের পাঠিয়ে দিলেন অনেক বলে কয়ে।

সিদ্ধ কিন্নরগণ সত্বর চলে গেল গোদাবরী তীরে। বহু চেষ্টা করল যমের তপোউদ করার। দিন, না। সব বলল।

শেষ ভরসা আস্মারসন। তাদের দিকে তাকালেন দেবরাজ। কিন্তু সবই চুপ, শক নাটু, দেবল, মৈনবাই সুখ খুল্লা দেবরাজ আমাদের সাধ্য নেই। ওখানে যাবার। তবে আমায় এক পরিচিত মেয়ে আছে, সে হয়ত সফল হতে পারে।

ইন্দ্র আশ্বস্ত হয়ে বললেন–এখুনি পাঠাও তাকে, সফল হলে স্বর্গে তাকে বহু সম্মানিত করা হবে।

মেয়েটি গোদাবরী তীরে উপস্থিত হল যমরাজের কাছে। তার আগমনে সেখানকার পরিবেশের আমূল পরিবর্তিত হল। যম চঞ্চল হয়ে উঠলেন। তাকিয়ে দেখলেন সেই মেয়েটিকে, একদৃষ্টে চেয়ে রইলেন। তার কি রূপ। কি সুন্দর দুটি চোখ, কি সুন্দর মুখের হাসি রয়েছে স্থির হয়ে, তিনি আর বসতে পারলেন না। যম উঠে পড়লেন আসন ছেড়ে স্থির কখন বন্দন হল। মেয়েটিও উঠে ও হয়ে গেল।

তারপর স্বয়ং সূর্যদেব এলেন যমরাজের কাছে। স্নেহ ভরে বললেন–তুমি এ কি করছ পুত্র? যার উপর যেমন দায়িত্ব দেওয়া আছে। সবাই তা পালন করে চলেছে ঠিক ভাবে আর তুমি তোমার দায়িত্ব না পালন করে তপস্যার রত হলে? তোমার কাজের অবহেলায় পৃথিবীর কি দশা হয়েছে, একবার চেয়ে দেখ, চরম অশান্তির সৃষ্টি হয়েছে। কেউ মারছে না। প্রাণীর সংখ্যা বেড়ে চলেছে। থাকবার জায়গা পাচ্ছে না। খাদ্য পাচ্ছে না। কাজেই তুমি তোমার নিজের রাজ্যে ফিরে গিয়ে নিজের দায়িত্ব পালন কর।

যমরাজ বললেন–আপনার কথা আমি বুঝতে পারছি পিতা কিন্তু আমার কাজটা মোটে ভাল নয়। আমি যেখানেই যাই সেখানেই কান্না। প্রিয়জন হারিয়ে কেউ সুখী হয় না। তাদের বেদনা আমি সইতে পারছি না।

সূর্যদেব বললেন–কিন্তু পুত্র, সৃষ্টিতে সামঞ্জস্য রাখতে হলে এ কাজটা করতে হবে কাউকে না কাউকে। তোমার জ্ঞান বুদ্ধি বিবেচনা করে তোমাকে এই গুরু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তোমার রাজ্যের নাম সংযমনীপুরী। সেখানে মানুষ পাপ ভেসে করে পারা করে বিশুদ্ধ হয়। এমন পবিত্র স্থান আর কোথায় আছে?

পিতার উপদেশ মাথা নত করে মেনে নিলেন যমরাজ। আবার তার কাজ শুরু করলেন। পৃথিবীতেও শান্তি ফিরে এল।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13
Pages ( 13 of 13 ): « পূর্ববর্তী1 ... 1112 13

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *