রোজ নয়, মাঝে মাঝে অতিদূর লোকশ্রুত এক
ভাস্করের উপকথা ভেসে ওঠে স্বপ্নের ধরনে।
আমি তো ভাস্কর নই, টেরাকোটা অথবা পাথর
কুঁদে কোনওদিন
করি নি নির্মাণ কোনও অনিন্দ্য প্রতিমা। এই আমি
শব্দের সামান্য অন্বেষক, ক্লান্তিহীন; মেঘ ফুঁড়ে-
বেরুনো আলোর ছটা, শ্রাবণের মেঘভার, ঘাসের শিশির,
রাধাচূড়া, সন্ধ্যার পাখির উড়ে-যাওয়া,
চেনা গলিটার ধুলো, পাশের বাড়ির
দুপুরের ঝিমধরা ছাদের কার্নিশ, পায়রার মৃদু প্রেম,
পথিকের খুব একা পথ চলা, রুদ্র মিছিলের
তুমুল আওয়াজ আর দয়িতার হাসির সোনালি
ঝর্ণাধারা, নিবিড় চুম্বন থেকে শব্দ ব্যাকুল কুড়িয়ে
প্রতিমা নির্মাণ করি নিজেকে পুড়িয়ে বারবার।
যখন জ্বরের ঘোরে ঝাপ্সা প্রলাপ বকি, তখনও শব্দের
ভ্রমরেরা বিছানার চারদিকে গুনগুন গান জুড়ে দেয়; মগজের
কোষে কোষে চোখে মেলে কত যে সুরের সুরধুনী।
শব্দের প্রতিমা গ’ড়ে কাটিয়ে দিয়েছি
পঞ্চাশ বছর, তবু সেই ভাস্করের মতো
একান্ত নিজেরই সৃষ্ট প্রতিমার প্রেমে
অন্তহীন ম’জে স্বেচ্ছা-অনাহার আর অনিদ্রায়
করি নি জীবন বিসর্জন।