বোবাকান্না
জন্মের থেকেই মেয়েটি ছিল বোবা। বাপের সেরকম পয়সাও ছিল না। দেখতে শুনতে একেবারে খারাপ ছিল না মেয়েটা। বিয়ের সুযোগও যে আসে নি সেটাও বলা যায় না। কিন্তু বাপের যে কিছু দেবার মুরোদ নেই। বিয়েটা হবে কিভাবে?
বাপ আবার একটি রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে এসেছে সারাজীবন। কিন্তু কোনদিন কোন সুযোগের সদ্ব্যবহার করে নি। একটা আদর্শ নিয়ে চলে এসেছে। মেয়ে বোবা হলেও বাপের কাছে সে ছিল রাজকন্যা।
এদিকে রাজনৈতিক পালাবদল হলো। ক্ষমতায় এলো এমন একটি দল যাদের কোন আদর্শ নেই। যাদের উদ্দেশ্যই হলো লুটেপুটে খাওয়া। বাপ এরকমই মনে করতো। ঐ অঞ্চলে ভুঁইফোড় অনেক নেতা জন্ম নিল। যাদের কোন সামাজিক স্বীকৃতি নেই তারাই আজ নেতা। শুধু কামিয়ে নেবার ধান্দা।
সেইরকমই একজন নব্য নেতা হলো সুজন। ওর থেকে নোংরা চরিত্রের লোক এই তল্লাটে আর একজনও নেই। বাপ সারাদিন কাজ করে রাতে বাড়ি ফেরে। মেয়েটি বাড়িতে একাই থাকে। ওর মা আজ প্রায় দশ বছর হলো গত হয়েছে। হঠাৎ একদিন বাপ কাজের থেকে ফিরে আসবার পর দেখে মেয়ে বিছানায় শুয়ে কাঁদছে। অনেকভাবে জিজ্ঞাসা করেও কোন উত্তর পায় না মেয়ের থেকে । বাপ ভাবলো হয়তো মৃত মায়ের কথা মনে পড়ছে। আর কোন উচ্চবাচ্য না করে বাপ বেটি খেয়েদেয়ে শুয়ে পরলো। এরপর থেকে এরকম প্রায় প্রতিদিনই হতে লাগলো। মাস তিন চারেক পর মেয়েটির শারীরিক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটা বাপের চোখ এড়ালো না। তখন বুঝতে পারলো সেসময় মেয়ে কেন কাঁদতো।
মেয়েকে খোলাখুলি এবং জোড়ালোভাবে প্রশ্ন করাতে মেয়ের সব প্রতিরোধ ভেঙে গেল। হাতের ঈশারা ও মুখ নাড়িয়ে বললো নতুন নেতা ওকে খুনের ভয় দেখিয়ে প্রতিদিন দুপুরবেলা আসতো ওর ঘরে এবং বিকেল পর্যন্ত থাকতো। এখন বাপ কি করবে তার যে ট্যাকের জোর নেই। এখন কি হবে! কাকে স্মরণ করব! জীবনে যার অস্তিত্ব নেই সেই ভগবানকে কি ………….??