বোকামির দন্ড
ক্রিং ক্রিং
মায়ের চিৎকার ওরে মা দেখ না এই গভীর রাতে কে ফোন করল!!
-হ্যাঁ দেখছি মামনি।
-অশুভ সংবাদ হয়তো।কার কি সর্বনাশ হলো কে জানে।
ধরলি ফোনটা?
কে করল?
-আরে মামনি মুখটা বন্ধ করবে একটু।
কোনো খারাপ খবর !!
-আঁতে ঘা দিয়ে বলি ―না আমার কাজের ফোন ।তুমি শুয়ে পড়ো মামনি।এখন সাড়ে বারোটা বাজে আর বকবক না করে ঘুমাও।
-আমার আজ অনেক কাজ।দিবাকর আসছে খুব দরকার বলছে।
এত রাতে আসছে আমাদের বাড়ি!!একটু কফি করে দিস।ফ্রিজে মিষ্টি আছে দিস।
-আরে ও কাজ নিয়ে আসছে মামনি।
-মামারবাড়ির আবদার ওকে জামাই আদর করতে পারব না।
হঠাৎ বেলের আওয়াজ।দিবাকর আসতেই
কাজ শুরু হলো।কাজ এই যে
একটি বাড়িতে খুন হয়েছেন দাদু ও ঠাকমা ।নাতনি অক্ষত।একাদশ শ্রেণীর ছাত্রী।বাবা ছোটতে মারা গেছে ।মা বিয়ে করেছে মুসলিম কে।তাই দাদু ঠাকমা নাতনিকে নিজেরা মানুষ করছে।নাতনি পড়াশোনাতে খুব ভালো।শুধু স্কুল আর বাড়ি করে। শিক্ষক বাড়িতে এসে পড়ায়।
পুলিশ তো অ্যারেষ্ট করেছে মা ও মায়ের দ্বিতীয় স্বামীকে।ওরা চেয়েছিল রোজ সাজাতে নুতন করে সুখের জীবন।
তাসের ঘর ছিল তাদের।
জাতপাতের জন্য মেয়ে তিতাস যে হাতছাড়া।মেয়ে গাঙ্গুলি পদবী আর মায়ের নাম তিথি ইসলাম।পুলিশের ধারণা তিতাসের দাদু ,ঠাম্মা খুন হয়েছে প্রাক্তন বৌমার হাতে।তিথি মনে মনে ভাবে খুন যদি করতেই হতো অনেক আগেই করত।তখন পাঁচ বছরের শিশুর সেই কান্না আজ ও কানে বাজে।এখন মেয়ে কোথায় থাকবে!!
পুলিশ কেন অ্যারেষ্ট করল?আমি যেন #পাকাধানে মই দিয়েছি
একবার বের হয় উল্টে মানহানির মামলা করব।
দিবাকর পারিবারিক ঘটনা মোটামুটি যা বলে মা কেই সন্দেহ হয়।তবুও কি খটকা লাগছে..এর পিছনে অন্য কারর হাত।আলোচনা করে বুঝলাম বাচ্চাটা নির্বিকার।কাল ঠিক হলো মেয়েটিকে আমি কথার জালে ফেলে কিছু বার করার চেষ্টা করব।
মার কথামতো দিবাকরকে কফি দিলাম।কথা বলতে বলতে ভোর চারটে।হঠাৎ আমার মোবাইলটা বেজে ওঠল।মার্ডার মার্ডার।এই শব্দে সি আই ডি অফিসার দিবাকরের হাত থেকে কফির কিছু পড়ে যায়।তারপর দুজনেই হেসে ওঠি।
আমি বলি এই রিং টোনটা কাল দিয়েছি।
দিবাকর বলল কাল দশটায় আসছি।চলি।
পরদিন সময়মত দিবাকর,আরো দুজন কলিগ আর আমি উপস্থিত হলাম দাদু ও ঠাকমার খুনের কিনারা করতে।
কি নিয়ে পড়ছ?বিজ্ঞান নিয়ে নিশ্চয়?
সবাই বিজ্ঞান নিয়ে পড়লে আর্টস ,কমার্স কেউ পড়বে না !
তোমার দাদু ঠাম্মার জন্য কষ্ট হচ্ছে না ?
আমি তো ওনাদের #নয়নের মনি ছিলাম।
ওদিকে মায়ের অভাব অনুভূত হয়।আমার দশা #উভয় -সঙ্কট
তাইজন্য কি কেউ…
তোমাকে পাবার জন্য দাদু ঠাম্মাকে মেরে ফেলল!!
কেন বলছেন এইসব অ্যান্টি?
না না আমি এমনই বললাম।তোমার সাথে আলাপ করব ভাবছিলাম।
আমার অনেক পড়া আছে।পড়তে বসব।পড়া না করলে স্যার আমাকে #উত্তম -মধ্যম দেন।
তা তুমি আপত্তি করো না।এতবড়ো মেয়ের গায়ে হাত দেয়। দাদু তো মার সাথেও কথা বলতে দিত না।দিদা ও বলত মাষ্টারকে দেখো আমার নাতনি মার কাছে না যায়।।বেশি করে পড়া দেবে।যাতে মার কথা মনে না আসে।দরকার হলে মারবে।তাদের সন্দেহ আমি মার কাছে যায়।আমি #দু নৌকায় পা দিয়ে চলি।তাই মাষ্টারকে দিয়ে দাদু ও ঠাকমা চব্বিশ ঘন্টা শাসন করাতেন।একদিন তো মাস্টার বলে…বলেই থেমে যায়।
বলো তুমি কি বলতে গিয়ে থেমে গেলে!
পারমিতা অ্যান্টি কথা দিচ্ছে ।কাউকে বলবে না।মাষ্টার বলেছে আমার আঠারো বছর বয়স হলে বিয়ে করবে।আমি রাজি হলে মার কাছে যেতে দেবে।মাষ্টার মশাই এর কথা আলোচনা হতেই মাষ্টারের আবির্ভাব।আমাদের গাড়িটা একটু দূরে ছিল।তাই আমরা ভিতরে সেটা বুঝতে পারে নি।তিতাস বলে তোমরা লুকিয়ে পড়ো।তাহলে বুঝবে কি নোংরা কাজ করে।অ্যান্টি আমাকে বাঁচাও।ওই দাদু ,ঠাম্মাকে মেরেছে যখন স্কুলে গেছিলাম।মূর্তিমানের আবির্ভাব।এত দেরি হলো কেন দরজা খুলতে?
বাথরুমে ছিলাম।
চলো তাহলে ঘুম পারিয়ে দিই।এখন আমি ঘুমাব না।
না ছিঃ এই রকম বলে না।আমি শোব তো।
আমি চিৎকার করব।
তারপর ধর্ষণের প্রচেষ্টা।ব্যাস আমরা চেপে ধরলাম।ধাক্কা মেরে ঘরে ঢুকিয়ে দিলাম।সদলবলে পুলিশ এসে মাষ্টারকে অ্যারেস্ট করে।
জোড়া খুন ও নাবালিকা ধর্ষণের দায়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড মাষ্টারের।তিতাস মা বাবার সাথে সুখে আছে।ওদের সুখের নীড়ে খুশির বাতাবরন।।হ্যাঁ ওরা খুব ভালো আছে।কি হবে জাতপাতের বিচার করে।সবাই মানুষ..সবার রক্ত লাল।দাদু -ঠাম্মার বাড়ি #হ-য-ব-র-ল অবস্থায় পড়ে আছে।
মাষ্টার যে #মিছরি ছুরি তার মিষ্টি কথায় বুঝতে না পেরে ছেলের আসন দিতে চেয়েছিলেন।তাই বেঘোরে প্রাণ দিয়ে #আক্কেল সেলামি বা বোকামির দন্ড পেয়েছিলেন।