Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » বেসুরো বেহালার পরের কাহিনি || Sujan Dasgupta » Page 6

বেসুরো বেহালার পরের কাহিনি || Sujan Dasgupta

ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের ঘড়ঘড়ের মধ্যেই অমল হাসি হাসি মুখে ফিরে এসেছেন, “আজকে একটা দারুণ ব্যাপার হবে। একটু বাদেই রবার্ট দত্ত আসছেন।”

“রবার্ট দত্ত? যিনি বেহালা বাজান?” নামটা আমি জানতাম।

“হ্যাঁ, মিউজিক প্ৰডিজি রবার্ট দত্ত। বিপ্লবের বাবার কাছ থেকে আঙ্কল একটা ‘ডেল গেসু’ কিনেছেন এক মাস আগে। আমি রবার্ট দত্তকে খুব করে রিকোয়েস্ট করেছিলাম, যদি একবার এসে বাজিয়ে দেখেন বেহালাটা কী রকম? কথা দিয়েছিলেন নিউ ইয়র্কে যখন আসবেন তখন বাজিয়ে দেখবেন। গতকাল নিউ ইয়র্কে এসে ফোন করেছিলেন আজকে আসার চেষ্টা করবেন বলে। কনফার্ম করলেন, এক্ষুনি আসছেন… কিন্তু খুব তাড়া আছে, একেবারেই বসবেন না।”

আমরা কিছু বলার আগেই কাকে জানি দেখতে পেয়ে ‘এই যে, হ্যালো বলতে বলতে ছুটলেন।

একেনবাবুর মুখ দেখে মনে হল অমল মিত্রের কথাটা বোধহয় বুঝতে পারেননি। ডেল গেসু যে বেহালার একটা বিখ্যাত ব্র্যান্ড, সেটা না জানা আশ্চর্যের কিছু নয়। আমি নিজেও কিছুদিন আগে পর্যন্ত জানতাম না। কথায় কথায় প্রমথর গার্লফ্রেন্ড ফ্রান্সিস্কা পুরোনো দিনের ভালো বেহালা প্রসঙ্গে নামটা তুলেছিল বলে জেনেছি।

অমল মিত্র চলে যেতেই একেনবাবু যেই ‘ডেল গেসু’ কী জিজ্ঞেস করলেন, আমি আমার জ্ঞানভাণ্ডার উজার করে দিলাম!

“ভেরি ইন্টারেস্টিং স্যার। এখন বুঝতে পারছি সামনে উঁচু পোডিয়ামটা কেন রাখা হয়েছে। প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো বর-বউ বসবে। কিন্তু উঁচু চেয়ার ছাড়া তো ওখানে আর কিছুই নেই। আচ্ছা স্যার, এই রবার্ট দত্ত কি খুব ফেমাস বেহালা বাজিয়ে নামটা কেন জানি চেনা চেনা লাগছে?”

“ইসাক পার্লম্যান বা ইহুদী মেনুহিনের মতো নিশ্চয় নন। তবে একজন উঠতি প্রতিভা।”

“আপনি চেনেন স্যার?”

“না, তবে নাম শুনেছি। আরও শুনেছি কারণ কিছুদিন আগে ওঁকে নাকি খুন করার চেষ্টা করা হয়েছিল। আপনিও হয়তো সেই সূত্রেই নামটা শুনেছেন।”

“ও হ্যাঁ স্যার, মনে পড়েছে। আপনি একটা ন্যাশেনাল এনকোয়ারার’ এনেছিলেন, সেখানে পড়েছিলাম।”

‘ন্যাশেনাল এনকোয়ারার’ সাধারণ ভাবে বিশ্বাসযোগ্য নয়। নানান উলটোপালটা উত্তেজক খবর ওতে থাকে। কে জানি আমার অফিসে একটা কপি ফেলে রেখে চলে গিয়েছিল, বাড়িতে নিয়ে এসেছিলাম। সেখানেই ছিল একটা কোরিয়ান গ্যাং নাকি রবার্ট দত্তকে খুন করার চেষ্টা করছে। কারণ? রবার্ট দত্তকে সরাতে পারলে কয়েকজন উঠতি কোরিয়ান মিউজিশিয়ানের পসার হবে। তাতে লাভ? তার উত্তরও ওখানে দেওয়া ছিল। জুলিয়ার্ড বা বড় বড় মিউজিক স্কুলে পড়তে পয়সা লাগে। আরও অনেক পয়সা লাগে ভালো ভালো কোয়ালিটির কোনও ইনস্ট্রমেন্ট কিনতে। সত্যিকারের ভালো বেহালা বা চেলোর দাম হাজার হাজার ডলার। একজন ছাত্রের পক্ষে সেসব কেনা সাধ্যের বাইরে। যেসব ছাত্রদের মধ্যে সম্ভাবনা আছে ইনভেস্টররা তাদের পেছনে টাকা ঢালে। কনট্রাক্ট থাকে, তারা রোজগার করতে শুরু করলে একটা পার্সেন্টেজ ওদের দিতে হবে। সুতরাং মিউজশিয়ানের পসারের সঙ্গে ইনভেস্টারদের রিটার্নের একটা স্বার্থ জড়িত। এইসব ইনভেস্টরদের আবার আন্ডারগ্রাউন্ড কানেকশন আছে।

আমার বিশ্বাস এটা পুরোপুরি গঞ্জিকাসেবন করে লেখা… বিন্দুমাত্র সত্য এতে নেই, কিন্তু পড়তে ইন্টারেস্টিং।

মনে মনে নিশ্চয় সেই খবরটাই ঝালাচ্ছিলেন একেনবাবু। আমাকে ছেড়ে এবার প্রমথকে ধরলেন।

“স্যার, আপনি চেনেন রবার্ট দত্তকে?”

“কেন মশাই, বাঙালি বলেই চিনতে হবে?”

“তা নয় স্যার, পাঞ্জাবিরাও তো দত্ত হয়।”

“তাহলে জিজ্ঞেস করছেন কেন?” খোঁটা না দিয়ে প্রমথ পারে না!

খানিক বাদেই একজন মেমসায়েবের সঙ্গে যিনি ওপরে এলেন, তিনিই নিশ্চয় রবার্ট দত্ত। অমল মিত্র শশব্যস্ত হয়ে ওঁকে অভ্যর্থনা করতে ছুটলেন। শ্যামলা রঙ, বেঁটেখাটো চেহারা। মেমসায়েব খুব সেজেগুজে, ফর্মাল ড্রেস পরা। রবার্ট দত্ত পরেছেন সাদা শার্ট, কালো বোটাই আর টাক্সেডো। পায়ে ঝকঝকে কালো অক্সফোর্ডের জুতো। বোঝাই যাচ্ছে কোনও ব্ল্যাক-টাই ডিনারে যাচ্ছেন। পথে এখানে কিছুক্ষণের জন্য এসেছেন। কোনও দিকে না তাকিয়ে কারও সঙ্গে কথা না বলে পোডিয়ামের সামনে দুটো চেয়ারে দু’জন বসলেন। একজন অ্যাসিস্টেন্টকেও দেখলাম একটা বেহালার বাক্স হাতে। তিনিও পাশের চেয়ারে বসলেন। অমলের সঙ্গে কী কথা হচ্ছে আমরা বুঝলাম না, তবে হাতঘড়ি দেখা আর হাত-পা নাড়া দেখে মনে হল ওঁর খুবই তাড়া আছে। অমল ওঁকে কিছু বলে দ্রুতগতিতে বাড়ির ভিতরে গিয়ে আঙ্কলকে সঙ্গে নিয়ে ফিরে এলেন। আঙ্কলের হাতে একটা বেহালা, নিশ্চয় ওটাই ডেল গেসু-র সেই বেহালা। আঙ্কলের সঙ্গে রবার্ট দত্তর পরিচয় পর্ব শেষ হবার পর আঙ্কলের আমন্ত্রণে রবার্ট দত্ত পোডিয়ামে উঠলেন, কিন্তু চেয়ারে বসলেন না। বেহালার বাক্সটা ওঁর অ্যাসিস্টেন্ট খুব সাবধানে টেবিল-এর ওপর রাখলেন।

আঙ্কলের হাত থেকে বেহালাটা নিয়ে একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখে টেবিলে রাখা বেহালার বাক্স থেকে একটা ছড় তুলে বেহালায় টান দিতে যাবেন, হঠাৎ দুম করে আওয়াজ! সঙ্গে সঙ্গে টেরাসের সাইডে বসানো একটা বড় গ্লোবলাইট ফেটে কাঁচগুলো ছিটকে পড়ল! সেই ধাক্কা কাটতে না কাটতেই আরেকটা আওয়াজ! এবার ওর পাশের গ্লোব লাইটটা ফাটল! আলো-অন্ধকারের মধ্যে প্রায় প্যান্ডেমোনিয়াম! পত্রপত্রিকায় আর টিভিতে বন্দুকবাজদের আচমকা হানা দেবার খবর শুনে শুনে আজকাল সবাই সতর্ক এবং ভীত। কেউ কি গুলি চালাচ্ছে? দেখে কাজ নেই… সবার সাথে আমিও পড়ি কি মরি করে ডাইনিং রুমের দিকে দৌড়েছি। প্রমথ আমার পেছনে। ধাক্কাধাক্কি করে কোনওমতে ডাইনিং রুমে পৌঁছে দেখি বুক ধড়াস ধড়াস করছে। এর মধ্যে যাঁরা আগে ছিলেন তাঁদের বেশ কয়েকজন দরজা দিয়ে হলওয়েতে চলে গেছেন। সেখানেই লিফট এবং সিঁড়ি। প্রমথ আমার পাশে, কিন্তু একেনবাবু নেই। টেরাসের দিকে সাহস করে তাকাতে চোখে পড়ল রবার্ট দত্ত কেমন যেন ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে তখনও পাথরের মতো দাঁড়িয়ে। মেমসাহেব সঙ্গিনী বেহালার বাক্স হাতে নিয়ে ওঁর হাত ধরে টানাটানি করছেন। অ্যাসিস্টেন্টটি উধাও, আঙ্কলকেও দেখতে পাচ্ছি না। পুরো টেরাসে ওঁরা দু’জন ছাড়া গোটা কয়েক লোক। যাঁরা আছেন, তাঁদের কয়েকজন আত্মরক্ষার জন্য মাটিতে শুয়ে পড়েছেন। আমাদের একেনবাবুও টেরাসে আছেন। তবে মাটিতে শুয়ে নয়, চেয়ারেই বসে এদিক ওদিক তাকাচ্ছেন–বলিহারি সাহস ওঁর! ইতিমধ্যে জনা কয়েক সিকিউরিটির লোক রিভলবার হাতে ডাইনিং রুমের কাঁচের দরজায় সামনে এসে গেছে। তারা দ্রুত গতিতে টেরাসে ঢুকে রবার্ট দত্ত আর বাকি সবাইকে ভিতরে নিয়ে এসেছে। একেনবাবুও সবার পেছন পেছন এসেছেন। সবকিছুই কয়েক মিনিটের মধ্যে। কেউ বোধহয় পুলিশকেও খবর দিয়েছে। সাইরেন বাজিয়ে বেশ কয়েকটা পুলিশের গাড়ি এখন বিল্ডিং-এর নীচে, রাস্তায়।

ভাবছি এখন কী ঘটবে! অতিথিদের কেউ গুলি চালিয়েছে কি না, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া প্রয়োজন। এরমধ্যে অভ্যাগতদেরই একজন প্রস্তাব দিলেন সবাইকেই সার্চ করা হোক, সকলের নিরাপত্তার জন্যেই এটা প্রয়োজন। কিন্তু এভাবে অতিথিদের সার্চ করতে বলাটাও তো গৃহস্বামীর পক্ষে লজ্জাজনক। কাছেই দেখলাম আঙ্কল খানিকটা বিধ্বস্ত অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছেন। সিকিউরিটির একজন ওঁকে কিছু বলছে, উনি সম্মতিসূচক মাথা নাড়ছেন। পেছন থেকে এক ভদ্রলোককে নীচু গলায় কাউকে বলতে শুনলাম, “গুলিটা রবার্ট দত্তকে মারার জন্যেই করা হয়েছিল। ভাগ্যক্রমে দু’বারই লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে।” যাঁকে কথাটা বললেন, তিনিও কেমন যেন সায় দিলেন, “হ্যাঁ, আগেও তো চেষ্টা করা হয়েছিল।”

কেন এখানে এসে কেউ রবার্ট দত্তকে খুন করতে চাইবে আমার কাছে সেটা স্পষ্ট নয়। তবে যদি সত্যিই কেউ সেই চেষ্টা করে থাকে, তাহলে নিশ্চয় টেরাসে ঢোকার মুখে বাঁদিক থেকে করেছে। সেখানে একটা টেম্পোরারি গ্রিল-এ কেটারারদের কিছু লোক সাদা কোট পরে কাবাব গ্রিল করছিল। একমাত্র সেক্ষেত্রেই টার্গেট মিস করে ওই দুটো গ্লোবলাইট চুরমার হতে পারে। কেটারিং-এর লোকদেরই কি কেউ সেই কোরিয়ান গ্যাং এর? সেক্ষেত্রে মাত্র কয়েকজনকে সার্চ করলেই চলবে। রবার্ট দত্তকেও দেখতে পেলাম। তাঁর সঙ্গিনীকে নিয়ে অমল মিত্রের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছেন। অত্যন্ত ব্যাজার মুখ, একটু যেন ভীতও। অল্পক্ষণের জন্যে বাজাতে এসে এই ঝামেলার মধ্যে পড়বেন বোধহয় ভাবেননি! ইতিমধ্যে কয়েকজন পুলিশও নীচ থেকে ওপরে উঠে এসেছে। তাদের মধ্যে একজন সার্জেন্ট বিল। তিনি দেখলাম একেনবাবুকে খুব ভালো করে চেনেন। একেনবাবুকে দেখে তিনি এগিয়ে যেতেই আড়ালে ডেকে একেনবাবু তাঁকে কিছু বললেন। তারপর দুজনে মিলে টেরাসে সেই ফাটা বাতি দুটো পরীক্ষা করে ফিরে এলেন। সার্জেন্ট বিল-এর নির্দেশে একজন অফিসার গিয়ে একটা ছোট্ট কৌটোয় কিছু পুরে নিয়ে এল। বিল গলা উঁচু করে সবাইকে বললেন, “ইন্স অলরাইট, আপনারা এখন পার্টি করতে পারেন। দেয়ার ওয়াজ নো শু্যটিং।”

“তাহলে কাঁচটা ভাঙল কী করে?” একজন প্রশ্ন তুললেন। “কেউ প্র্যাক্টিক্যাল জোক করেছে, বাট নো বডি গট হার্ট। সো ম্যাটার্স এন্ড।”

ইতিমধ্যে একেনবাবু আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।

“কী ব্যাপার?”

“কেউ স্যার গ্লোব দুটো বেস থেকে তুলে ভিতরে বড়সড় পটকা রেখেছিল। বাতির গরমে পটকা দুটো ফেটেই এই বিপত্তি।”

আমার কেমন মনে হল, এটা নিশ্চয় ওই দুই যমজ ভাইয়ের কীর্তি। সেটা বুঝলাম যখন দেখলাম একজন বয়স্ক মহিলা কিচেনের সামনে দুটোকে ধরে আচ্ছাসে বকছেন আর ছেলেদুটোর কাঁদো কাঁদো মুখ। পুলিশ-টুলিশ দেখে ভয় পেয়ে বোধহয় দোষ স্বীকার করেছে! এসব ক্ষেত্রে পুলিশ অ্যারেস্ট করে, জুভেনাইল ডেলিঙ্কোয়েন্ট বলে ছাড় পায় না। বিলের সঙ্গে আঙ্কল দেখলাম কথা বলছেন। শেষমেশ পুলিশ কাউকে অ্যারেস্ট না করেই চলে গেল। ছোঁড়া দুটোকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে কোথাও রাখা হল। নিশ্চিন্তি!

আমরা আবার টেরাসে ফিরে গেলাম বটে, কিন্তু ছন্দপতন যা ঘটার ঘটে গেছে। একটি কাজের লোক এসে দ্রুত ভাঙা কাঁচগুলো তুলে জায়গাটা ভ্যাকুয়াম করে চলে গেল। রবার্ট চলেই যাচ্ছিলেন। কিন্তু অমলের সনির্বন্ধ অনুরোধ এড়াতে না পেরে বাচ্-এর সোনাটা নম্বর ওয়ান থেকে একটু অংশ বাজাতে রাজি হলেন। বেহালাটা টেবিলেই ছিল। সেটা তুলে চিবুকের নীচে ভালোভাবে বসিয়ে ছড়ের একটা টান দিয়েই বললেন, “দিস ইজ নট এ ডেল গেসু।”

“হোয়াট?” কথাটা শুনে আঙ্কল দেখলাম উত্তেজিত হয়ে পোডিয়ামে উঠে পড়েছেন।

অমল উদ্বিগ্ন স্বরে জিজ্ঞেস করল, “আর ইউ শিওর?”

“আমি ডেল গেসু-র আওয়াজ জানি, শুধু ডেল গেসুই আমি বাজাই। এই বেহালা ডেল গেসু হতে পারে না।” বলে হাতের বেহালাটা নামিয়ে টেবিলে রাখলেন।

“কিন্তু এটার এমব্লেম তো ডেল গেসু-র?” এবার কথাটা বললেন আঙ্কল।

“মাস্ট বি ফেক!” বেশ চাঁছাছোলা ভাবেই রবার্ট দত্ত তাঁর রায় দিলেন।

“আই পেইড মোর দ্যান এ মিলিয়ন ফর দিস!” বেশ রাগত স্বরেই আঙ্কল কথাটা বললেন।

“ওয়েল,” কাঁধটা ঝাঁকিয়ে রবার্ট নিজের বেহালার বাক্সটা হাতে তুলে নিলেন। তারপর আঙ্কলকে বললেন, “এ জেনুইন ডেল গেসু ইজ নট চিপ।”

পোডিয়াম থেকে নেমে ইশারায় সঙ্গিনীকে ডেকে রবার্ট বেরিয়ে যাবার জন্যে ডাইনিং রুমের দিকে পা বাড়ালেন। তারপর বোধহয় আঙ্কলের জন্য একটু করুণা হল। একটু থেমে আঙ্কলকে উদ্দেশ্য করে বললেন, “আই অ্যাম টুলি সরি। যার কাছ থেকে কিনেছেন, তাঁকে ফেরৎ দিয়ে টাকাটা নিয়ে নেবেন। দিস ইজ চিটিং!”

পুরো ব্যাপারটা ঘটে গেল এত দ্রুত লয়ে যে অতিথিদের অনেকেই মনে হল বোঝেননি কী ঘটেছে। আমরা নিতান্ত সামনে ছিলাম বলে সব কিছু শুনেছি। একটু দূরে বল্লরী আর বিপ্লব। বিপ্লবের মুখ কালো, বোঝাই যাচ্ছে ঘটনার আকস্মিকতায় স্টান্ড হয়ে গেছে। বল্লরীর মুখটাও ফ্যাকাশে। হঠাৎ বিপ্লব বল্লরীকে কিছু বলে দ্রুত চলে গেল। বল্লরী ছলছল চোখে তাকিয়ে আছে দেখে অমল মিত্র বোধহয় সান্ত্বনা দিতে গেল। আঙ্কল ইতিমধ্যেই টেরাস থেকে অদৃশ্য হয়েছেন। আন্টিই একমাত্র হাসিমুখে সবাইকে সামলাচ্ছেন। প্রীতম এরমধ্যে একবার এসে আমাদের বলে গেল, “কী বিচ্ছিরি ব্যাপার হল! অমলের কী দরকার ছিল বল তো সর্দারি করে আজকে রবার্ট দত্তকে ডাকার?”

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *