Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » বেগুন, মোচা এবং কাফকা || Tarapada Roy

বেগুন, মোচা এবং কাফকা || Tarapada Roy

বেগুন, মোচা এবং কাফকা

আগে বইয়ের, মানে বিলিতি বইয়ের দাম ছিল ভদ্রমতো৷ শুধু দামে কম ছিল তা নয়, দামটা ছিল মার্কিন দেশে প্রকাশিত হলে দেড়, দুই, বড়জোর তিন ডলার। খাস ব্রিটেনের বই হলে পাউন্ডে দাম। এক পাউন্ড, দুই পাউন্ড।

তা ছাড়া পাউন্ড, ডলারও এখনকার মতো এত মূল্যবান ছিল না। বেশিদিন আগের কথা নয়, মাত্র পনেরো বছর আগের কথা, সদ্য এম এ পরীক্ষা পাশ করে চাকরিতে ঢুকেছে অনাদি, মাসের প্রথমে প্রায় নিয়মিত দুয়েকটা বই কিনত সে। লাইটহাউসের উলটো দিকের দোকানগুলোয় একটু ঘুরে ফিরে দাম দর করলে গোটা চল্লিশ টাকায় একটা দু-আড়াই পাউন্ডের বা পাঁচ ডলার দামের বিলিতি পেপারব্যাক বা চটি হার্ড কভার কেনা যেত।

.

এখন আর দু-আড়াই পাউন্ড বা পাঁচ ডলার দামে এরকম বই পাওয়া যায় না। দশ পাউন্ড বা পনেরো ডলারের কাছাকাছি দাম।

এই দামের ব্যাপারটা বেশ মজার। বড় বড় জুতো কোম্পানির দাম যেরকম হয়, একশো ঊনআশি টাকা নব্বই পয়সা বা দুশো ঊনপঞ্চাশ টাকা পঁচানব্বই পয়সা, একেবারে ওই জাতীয় দাম। নয় পাউন্ড নব্বই পেন্স বা চৌদ্দ ডলার নব্বই সেন্ট।

ডলারে, পাউন্ডে টাকার অঙ্কটা কম দেখালেও এখানকার দামে চার-পাঁচশো টাকার ধাক্কা। নিজের পয়সায় এরকম দামের একটা বই নো খুবই দুঃসাধ্য। বিশেষ করে অনাদির মতো মাস মাইনের সীমিত আয়ের সংসারী মানুষের পক্ষে। সে যা হোক বই পড়া তো বন্ধ করা যায় না। বই পড়ার নেশা সবচেয়ে মারাত্মক। পড়াশুনো করার নেশাকে যারা প্রশংসা করেন, হয় তারা বেকার বড়লোক অথবা কখনও এই নেশায় না মজে এই নেশার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তাঁরা মোটেই জানেন না যে বই সংগ্রহ করে, বই বেছে, বইপাড়ায় কী পরিমাণ অর্থনাশ, সময়নাশ হয়।

অবশ্য অর্থনাশের একটা সমাধান বার করেছে অনাদি৷ আংশিক সমাধান।

এসপ্ল্যানেডের একটা ইংরেজি বইয়ের দোকানে টাকা জমা দিয়ে নতুন বই ভাড়া করে এনে পড়া যায়। তবে খুব সাবধানে পড়তে হয়, সেলোফেন কাগজে মলাট দিয়ে বইয়ের নতুনত্ব বজায় রেখে যত্নে পড়তে হয়। তারপর বই ফেরত দিলে বইয়ের অবস্থা দেখে দোকানদার জমা টাকা থেকে কিছু টাকা ভাড়া হিসেবে কেটে রেখে বাকি টাকা ফেরত দেয়।

এভাবেই গত সপ্তাহে অনাদি টাটকা, আনকোরা কাফকার গল্প সংগ্রহ ভাড়া করে এনেছে। বইটির নতুন দাম চারশো টাকা, ভাড়া পড়বে চল্লিশ টাকা। তা লাগুক।

কাফকার এই সংকলনের অধিকাংশই অবশ্য অনাদির আগে বহুবার পড়া। সে কাফকার একজন অন্ধ ভক্ত। কাফকার কিছু কিছু বই তার নিজেরও আছে।

কিন্তু বর্তমান সংকলনটি অতুলনীয়। এর মধ্যে ইতিপূর্বে অগ্রন্থিত, এমনকী অসমাপ্ত এবং অপ্রকাশিত কয়েকটি গল্পাংশ রয়েছে।

কাফকার রচনায় যে কোনও ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশে সেই অনিবার্য ভবিতব্যের ছায়া এবং রহস্যময়তা রয়েছে যা অনাদিকে এক সময়ে আবিষ্ট করে রাখত। এখনও আবিষ্ট করে।

আজ শনিবার। সকালবেলা বাজার সেরে এসে রান্নাঘরের মেঝেতে বাজারের থলে নামিয়ে রেখে কাফকার বইটা হাতে নিয়ে বারান্দায় এসে বসেছে অনাদি।

মধ্য শীতের হালকা মধুর রোদ বারান্দায় ছড়িয়ে আছে। সেই রোদে গা এলিয়ে একটা পাতলা চাদর মুড়ি দিয়ে গল্পসংগ্রহের পাতা ওলটাচ্ছে অনাদি। হাতের কাছেই আজ সকালের খবরের কাগজ পড়ে রয়েছে। এখনও সে সেটা হাতে ছোঁয়নি। এমনকী পত্রিকার শনিবাসরে গদাধর রায়ের যে অখাদ্য ধারাবাহিক লেখাটায় সে রুটিন করে চোখ বুলিয়ে নেয়, তাতেও দৃষ্টিপাত করেনি।

সে এখন লোভীর মতো কাফকার বইটার পাতা ওলটাচ্ছে, এখানে ওখানে চোখ বুলোচ্ছে তবে মোটেই পড়ছে না, সেই সুকুমার রায়ের ছড়ার মতো, ঠোঙা ভরতি বাদামভাজা, ভাঙছে কিন্তু খাচ্ছে না। আসলে অনাদি এখন বইটা পড়বে না। সামনের সপ্তাহে সে বউ, মেয়েকে নিয়ে বেড়াতে যাবে পণ্ডিচেরিতে। সেখানে হোটেলের বারান্দায় সমুদ্রের দিকে মুখ করে বসে তারিয়ে তারিয়ে বইটা পড়বে। নতুন গল্পাংশগুলি যা রয়েছে তা তো পড়বেই, পুরনো গল্পগুলোও আবার পড়বে। কাফকার গল্প কখনও পুরনো হয় না অনাদির কাছে, কাফকার রহস্যময় জটিল জগৎ তার কাছে সব সময়েই এক গোলোকধাঁধা, যার অনুপম নির্মাণশৈলী, শব্দবন্ধন তাকে আকর্ষণ করে, চেনা ঘটনা, চেনা মানুষ আবার নতুন করে চেনায়।

লোভাতুর দৃষ্টিতে অত্যন্ত যত্নের সঙ্গে বইটির পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা ওলটাতে ওলটাতে কখনও কখনও অসতর্কভাবেই অনাদির মন আটকিয়ে যাচ্ছিল পূর্বে অপঠিত কোনও রচনাংশে।

অনাদির কাফকাঁপাঠের আবেশ সহসা ভেঙে গেল একটি আর্ত চিৎকারে। চিৎকারটি এসেছে রান্নাঘর থেকে। অন্য কেউ হলে এই রকম আর্তনাদ শুনলে প্রথমেই ধরে নিত বোধহয় খুন-টুন হয়েছে।

কিন্তু অনাদি পুরনো ভুক্তভোগী, সে ভালই জানে এই আর্তনাদ মধুমিতার, মানে তার স্ত্রীর। সময়ে-অসময়ে এরকম চিৎকার করে ওঠা মধুমিতার অভ্যেস। সামান্য কারণেই সে এমন করে। আগে কদাচিৎ করত। আজকাল ক্রমশ বেড়ে যাচ্ছে।

মধুমিতা অঙ্কের ভাল ছাত্রী। একটি ভাল স্কুলের অঙ্কের শিক্ষিকা। আধুনিকা, বুদ্ধিমতী। সকালে ইংরেজি খবরের কাগজ পড়ে, ছুটির দিনের সন্ধ্যায় স্বামী কন্যার সঙ্গে চিনে হোটেলে খেতে ভালবাসে, জীবনানন্দ-সতীনাথ ভাদুড়ির ভক্ত, টিউবলাইট খারাপ হয়ে গেলে নিজে চেয়ারের ওপরে উঠে নতুন টিউব লাগায়।

কিন্তু উত্তরাধিকার সূত্রেই হোক, অথবা স্কুলের সহকর্মিণীদের সাহচর্যেই হোক মধুমিতা ক্রমশ একটি সংস্কারের ডিপো হয়ে পড়েছে।

বিয়ের পর পর ঘটনাটা তেমন বোঝা যায়নি। বাঁ হাতের মধ্যমায় অবশ্য একটা রুপো বাঁধানো পলার আংটি ছিল। অল্পদিন পরে, ফুলশয্যার দু-চারদিনের মধ্যে অনাদি আবিষ্কার করল যে মধুমিতার গলার হারের যে লকেট তার মধ্যে রয়েছে প্রসাদি বেলপাতা, তার ওপরে নীল কাঁচের মধ্যে রয়েছে একটি রঙিন ফটো জটিরামবাবার। শোয়ার আগে প্রতিদিনই মধুমিতা গলার হার খুলে রাখত। সে ওই জটিরামবাবার প্রতি শ্রদ্ধাবশত।

ধীরে ধীরে অনাদি মধুমিতার কাছে জানতে পারে জটিরামবাবার বয়েস একশো এগারো। তার শরীরে জামা কাপড় কিছু নেই। শুধু ওই জটা আর দাড়ি গোঁফ, এই সব দিয়েই তিনি শরীর ঢেকে রাখেন, শীতাতপ এবং লজ্জা নিবারণ করেন। শুধু মধুমিতাই নয়, তার ইস্কুলের অনেক দিদিমণি, এমনকী সেক্রেটারি, বড়বাবু সবাই জটিরামবাবার কাছে দীক্ষা নিয়েছে। এমনকী অভিভাবক-অভিভাবিকারাও অনেকে। যেকোনও বিপদে পড়লে দম বন্ধ করে একশো এগারোবার জটিবাবা, জটিবাবা মনে মনে ফটাফট জপ করলে সে বিপদ থেকে উদ্ধার হওয়া যাবে।

জটিরামবাবার যত বয়েস ততবার নামজপ করতে হয়। সামনের বছর একশো বারো বার। তারপর একশো তেরোবার। এইভাবে ক্রমশ জটিরামবাবার বয়সের সঙ্গে সঙ্গে জপসংখ্যা বেড়ে যাবে। দম বন্ধ করে যারা এতবার জটিবাবা জটিবাবা করতে পারবে না তাদের জন্যে সহজ সমাধান আছে, জপসংখ্যার সম পরিমাণ টাকা জটিরামবাবার আশ্রমে দিয়ে এলেই সেখানে বিপদমোচন যজ্ঞ অবিলম্বে করে ভক্তকে উদ্ধার করা হয়।

তবে জটিরামবাবার চেয়ে মধুমিতার অনেক বেশি সর্বনাশ করেছেন মধুমিতার পিসি সর্বজয়া।

গত বছর অনাদিকে অফিসের কাজে মাস ছয়েক দিল্লিতে থাকতে হয়েছিল। তখন খালি বাড়িতে এসে মধুমিতার কাছে বিধবা সর্বজয়া থাকেন। তিনি মধুমিতার মনের কুসংস্কারের ঝোঁপঝাড়ে বেশ কয়েকটি বিষধর সাপ ছেড়ে দিয়েছেন।

হাঁচি-কাশি, মঘা-অশ্লেষা-ব্র্যহস্পর্শ থেকে শেয়াল বাঁ হাতি, ডান চোখ নাচা যা কিছু বিধি নিষেধ, ভয়ভীতি সম্ভব সর্বজয়া তার এক এনসাইক্লোপিডিয়া। তিনি শুধু এ সমস্ত জানেন তা নয়, রীতিমতো মানেন এবং ভাইঝিকেও রপ্ত করে দিয়ে গেছেন। সর্বজয়ার ছেড়ে যাওয়া বিষধর সাপগুলি আজকাল সময় পেলেই মধুমিতাকে দংশন করে এবং মধুমিতা আনাদ করে ওঠে।

ক্রমশ মধুমিতার এই আর্তনাদের ব্যাপারটা বেশ নিয়মিত হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এই তো গত রবিবার দুপুরে বাথরুম থেকে স্নান করে বেরিয়ে বারান্দায় রোদ্দুরে ভেজা হাওয়াই চটি জোড়া উলটিয়ে শুকোতে দিয়েছিল অনাদি। ব্যাপারটা যে কতখানি অমঙ্গলজনক সে বিষয়ে অনাদির কোনও ধারণা ছিল না। প্রত্যেক রবিবারই ও কাজটা সে করে থাকে, ঠিক এ সময়টায় মধুমিতার বারান্দায় যাওয়ার দরকার পড়ে না। তাই তার চোখে পড়েনি এর আগে। কিন্তু সেদিন একটা খারাপ দিন ছিল। দুদিন পরে পৌষমাস পড়ে যাচ্ছে, তার আগে ফুলঝাড়ু কিনতে হবে তাই ওই রবিবার বারবার সব কাজ ফেলে মধুমিতা বারান্দায় যাচ্ছিল রাস্তা দিয়ে কোনও ফুলঝাড়ওয়ালা যায় কি না দেখার জন্য। সেই সময়ে একবার বারান্দায় গিয়ে দেখে ওলটানো চটি, সঙ্গে সঙ্গে মধুমিতার আর্তনাদ, সর্পদংশনের আর্তনাদ।

আগে পাড়ার লোকেরা এরকম আর্তনাদ শুনলে রুদ্ধশ্বাসে ছুটে আসত। অনেকে সন্দেহের দৃষ্টিতে অনাদির দিকে তাকাত। কখনও কলিক পেন, কখনও লামবাগের টান এইসব বলে অনাদি মধুমিতার আর্তনাদের ব্যাখ্যা দিতে চেয়েছে। কেউ বিশ্বাস করেছে, কেউ করেনি। কিন্তু সবাই যে যার বোঝার বুঝে গেছে, এখন আর কেউ ছুটে আসে না।

তবু বিবাহিতা স্ত্রী বলে কথা। অনাদিকে একবার যেতেই হয়। আজও কাফকার জগৎ থেকে নিজেকে আপাতত বিচ্ছিন্ন করে অনাদি দ্রুতপায়ে রান্নাঘরের দিকে এগিয়ে গেল। কিছুক্ষণ আগে রান্নাঘরের মেঝেতে বাজারের ব্যাগ নামিয়ে এসেছিল, নিশ্চয়ই তার মধ্যে কোনও অনাচার ধরা পড়েছে।

সত্যিই তাই।

সন্ত্রস্ত পদে রান্নাঘরের দরজায় পৌঁছে অনাদি দেখল মধুমিতা কপালে করাঘাত করছে মেঝেতে বসে। ব্যাগের তরকারি আলু, বেগুন, বরবটি, শিম, কড়াইশুটি গড়াগড়ি যাচ্ছে। সর্বোপরি অনেক কষ্টে, অনেক বেছে কিনে আনা একটা বড় মর্তমান কলার মোচা। একটু পরে অনেক চেষ্টা করে অনাদি মধুমিতার কাছ থেকে যা উদ্ধার করতে পারল তার মানে শনিবারে, মঙ্গলবারে কেউ মারা গেলে তার শবদেহের সঙ্গে মোচা দিতে হয়। সুতরাং শনিবারে মোচা নিয়ে আসার পরিণাম মর্মান্তিক। মাসখানেক আগে ঠিক একই ঘটনা ঘটেছিল।

হালকা নীল রঙের এক নম্বর ফুটবলের মতো সাইজের গোল গোল বেগুন অনাদির এক বন্ধু তাদের দেশের বাড়ি থেকে নিয়ে এসেছিল অফিসে, পুরো এক থলে। তার থেকে দুটো তাকে দিয়ে বলেছিল, ভেজে কিংবা পুড়িয়ে খাবি।

সেদিন অফিস থেকে বাড়ি ফিরে অনাদি মধুমিতাকে বলেছিল, একটা বেগুন ভাজবে, অন্যটা পোড়াবে।

সেই কথা শুনে মধুমিতা কপাল চাপড়িয়ে ডুকরে কেঁদে উঠল, সেদিন তার জন্মবার, সোমবার। জন্মবারে বেগুন পোড়ানো যায় না, পোড়ানোর পরিণতি ভয়াবহ হয়।

ঠিক কোন বারে কার জন্ম সেসব অনাদি মনে রাখতে পারে না। ফলে এ বাড়িতে এখন অনেক দিন। বেগুনপোড়া খাওয়া হয়নি৷

আজ মোচার ব্যাপারটা আরও গোলমেলে। তবু সেদিন বেগুন দুটোর যা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল আজ মোচার ব্যবস্থা তাই নিলে আপাতত আশুমৃত্যুর অমঙ্গল এড়ানো যায়।

অনাদিদের বাড়ির পিছনে একটি বিশাল নর্দমা-সঙ্গম আছে। দুপাড়ার দুটি বড় নর্দমা এসে এখানে মিলিত হয়েছে। নর্দমার গন্ধে পিছনের দিকে জানলা খোলা যায় না, ছাদে ওঠা যায় না।

কিন্তু এই সব বিপদের দিনে বাড়ির ছাদটা খুব উপকারে লাগে। আগেরবার বেগুন দুর্টির নর্দমাপ্রাপ্তি হয়েছিল। আজ রান্নাঘরের মেজে থেকে মোচাটা তুলে নিয়ে অনাদি সিঁড়ির দরজার শিকল খুলে ছাদে উঠে গেল।

এতক্ষণ অনাদির বাঁ হাতে কাফকার বইটা ধরা ছিল। মধুমিতার ক্রন্দন জড়িত নির্দেশে অপবিত্র মোচাটা নিতে হল বাঁ হাতে, এবার কাফকার বইটা রইল ডানহাতে।

ছাদে উঠে কার্নিশের পাশে দাঁড়িয়ে ঘটনার আকস্মিকতায় হতচকিত অনাদি বাঁ হাতের মোচাটা ছুঁড়তে গিয়ে হঠাৎ ডানহাতের কাফকার বইটি ছুঁড়ে দিল নর্দমার গভীরে।

কয়েক মুহূর্তের মধ্যে ভুলটা টের পেল অনাদি। বাঁ হাতে আস্ত মর্তমান মোচাটা ধরা রয়েছে। ডান হাত শূন্য। নীচে নর্দমার কাদার গভীরে কয়েকটা বুদবুদ তুলে কাফকা ডুবে গেল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress