Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » বুরুদ্বীপে ১৪ হাজার কমিউনিস্ট বন্দি || Subodh Sarkar

বুরুদ্বীপে ১৪ হাজার কমিউনিস্ট বন্দি || Subodh Sarkar

ঘণ্টায় ৮০ কিলোমিটারের স্পিডে
গাড়ির সামনে এসে হরিণ দাঁড়ালে
যেভাবে বিদ্যুৎ বেগে গাড়ি থেমে যায়…
দুপুরে খবর পেয়ে, মনটা খারাপ হয়ে গেল।
চায়ের সুন্দর কাপে কে যেন মিশিয়ে দিল তিতো
এখনো অনেকগুলো সই বাকি আছে
জরুরি মিটিঙ আছে আরো
প্রেস মিট আছে
আমি সব পারব তো, হাত কাঁপবে না?

কে পৌঁছে দিয়ে গেল? কেন দিয়ে গেল?
কী আর করতে পারি আমি?
আমারও বাঁদিকে আছে ছোট্ট ডাইনামো
বামপন্থী হোক, আগে সে হৃদয়।
আমার চোখের পাতা কাঁপল দুবার
কেউ যেন বুঝতে না পারে
কলম শক্ত করে ধরি, সই করতে হবে
এ কী? এটা কি আমার সই?
বাংলায় লেখা এ তো চারটে অক্ষর?
একে সই বলে?
বুরুদ্বীপ ঠিক কোনদিকে?
ইন্দোনেশিয়ার ঠিক কোনখানে?
ম্যাপ পেলে ভাল হত।চাইব নাকি? না থাক।

আমিও পালিয়ে বেরিয়েছি।
খাবার জোটেনি
জঙ্গলে জঙ্গলে আমরা দিন কাটাতাম
তবু সেটা ছিল
স্বপ্নের দিন
চা-বাগানের দিন, কয়লাখনির
কবিতার দিন
গোপন বাড়ির ছাদে আসল আকাশ

প্রচুর কাঁকড়াবিছে? সুতাশঙ্খ সাপ?
তিলের মতন পোকা? কানে ঢুকে ব্রেন খেয়ে নেয়?
আমার চোখের শিরা দপদপ করে। শিরদাঁড়া দিয়ে জল নেমে যায়
বমি হবে না তো?
এরা কারা? এত লোক; হাতে হাতে ঘুরছে ফাইল
এরা কারা মানে?
আমি কি জানি না এরা কারা?
এদের আমরা দেব গ্রাম
এরা দেবে মাল্টি-ন্যাশনাল।
উড়াল-সরণি দেবে, করে দেবে বিমান বন্দর
আমরা বারুইপুর দেব
এরা দেবে সিঙ্গাপুর, সোনার হরিণ
আমরা শিয়ালডাঙা দেব
এরা দেবে আমাদের চাষিকে দোতলা।
আমরা কবরডাঙা দিলে
নক্ষত্রের সহোদর এনে দেবে ওরা।

একেই তো বলে ‘হুস’—
তিনশো বছর ধরে চাষি কেন কৃষক থাকবে?
আপনার বাবা ছিল গরিব মাস্টার
আপনি অধ্যাপক আজ
চাষির ছেলেটি কেন ভিসা কার্ড নিয়ে
রায়চকে শপিং সেন্টারে
জিন্স কিনবে না?
চিনে যদি দেখা যায় এই দৃশ্য, এখানে হবে না?
এই বাসে আমাদের উঠতেই হবে
না হলে মরতে হবে চিংড়িডাঙায়।
ধ্রুবতারা হো হো করে হাসবে আকাশে।

কিন্তু আমার মন বলছে:
এ আমি কোথায় এসে পড়লাম?
এ কোন কাগজে সই করছি?
আমার নিজের সই আমাকে বুঝতে পারে আর?
কোথায় লুকোনো ব্যথা, কোনখানে অসহ্য সন্তাপ
মধ্যযামে পেরেকের খোঁচা?
উটে বসে মার্কোয়েজ পড়ি।
সই না করতে পারি যদি, শেষ হয়ে যাব আমি
পারাপার বন্ধ হয়ে যাবে
মাঝিমাল্লা চাষাভুষো খাদান মজুর মরে যাবে
উদ্ভিদ হবে না
তবে আর কাকে নিয়ে ধ্রুবতারা হবে?

গরিব চাষির ছেলে পার্ক স্ট্রিটে দাঁড়িয়ে বলছে:
এই কল্লোলিনী আজ আমিও, আমারও
কত স্বর্ণমুদ্রা চাও?চেক কেটে দেব?
আমি ভোগ করব এখন
একদিন তোমরা করেছ
চাষির ছেলেরও চাই তিল থেকে তিলে তিলে তীব্র তিলোত্তমা।

এইবার বুরুদ্বীপে যাব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *