বিষ্ণুর দশ অবতার
ছেলে বললো, মা জানো ডারউইন বলে একজন বিজ্ঞানী আছেন। উনি আমার প্রেরণা। উনি ই প্রথম ইভলুশন এর কথা বলেন। উনি বলেন, survival of the fitest. যে লড়াইতে জিতবে সেই পৃথিবীতে অস্তিত্ত্ব রক্ষা করতে পারবে। না হলে ম্যামথ, বা ডাইনোসর এর মত পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে, বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
তাই আমি ডি এন এ নিয়ে রিসার্চ করবো। আমি আমেরিকায় যাবো। আমাকে লোকে বলবে আমি একজন জেনেটিক বিজ্ঞানী। ডারউইন এর ইভলুশন নিয়ে আরো রিসার্চ করবো।
মা বললো,আমি জানি ডারউইনের কথা। কিন্তু তুই কি জানিস বিষ্ণুর দশ অবতারের কথা??
ছেলে, বললো সে নাম শোনেনি।
মা বললেন, বেশ তাহলে মন দিয়ে শোন।
বিষ্ণুর প্রথম অবতার হলো মৎস অবতার। অর্থাৎ মাছ। জীবন শুরু হয়েছিল জলে।
দ্বিতীয় কুর্ম অবতার। অর্থাৎ জীবন জল থেকে উঠে এলো ডাঙায়। উভচর বা amphibians। কচ্ছপ। ইভলুশন হলো সমুদ্র থেকে ডাঙায়।
তৃতীয় বরাহ অবতার। অর্থাৎ বন্য জন্তু, জানোয়ার। বরাহ হলো বিশাল দেহি শুকর। তাদের বুদ্ধির কোনো বিকাশ নেই। ধরা যেতেই পারে ম্যামথ বা ডাইনোসর।
চতুর্থ অবতার হলো নৃসংহ অবতার। যিনি আসলে প্রথম মানুষ। যার আকৃতি মানুষের মতো হলেও ব্যাবহার একটু জন্তুর মতো। মানুষের প্রথম প্রকাশ। তখনো মানুষের বুদ্ধির বিকাশ ঘটেনি। ওরা ছিল হিংস্র। অসামাজিক।
পঞ্চম হলো বামন অবতার। তখন এক শ্রেণীর মানুষের বুদ্ধির বিকাশ ঘটেছে। তারা অন্য শ্রেণীর মানুষ যারা হিংস্র তাদের থেকে খর্বকায়। অর্থাৎ বামন। অসভ্য মানুষ হলো homo erectus। আর ছোট্ট দেহি বুদ্ধিমান মানুষ হলো homo sepience। ক্রমশ homo sepience যুদ্ধে জিতল। এবং পৃথিবী দখল করলো।
ষষ্ঠ অবতার হলো পরশুরাম। এই মানুষের হাতে ছিল কুঠার। অর্থাৎ যে জঙ্গল কেটে পরিষ্কার করতে শুরু করে। গুহাতেও বসবাসের ব্যাবস্থা করে। রাগী। এবং এখনো অসামাজিক।
সপ্তম অবতার হলো রাম। প্রথম বুদ্ধি এবং বিবেচনা করতে পারে এরকম এক মানুষ। ইনি হলেন সামাজিক। রাজ তন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলো। আইন, কানুন এর জন্ম হলো। জন্ম হলো সমাজের ও। তৈরি হল মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্ক।
অষ্টম অবতার হলেন বলরাম। যিনি আসলে চাষ, আবাদ করলেন। কৃষি কার্য শুরু হলো মানুষের সার্থে।
নবম হলেন শ্রী কৃষ্ণ। রাজনীতি, কূটনীতি র প্রবর্তন হলো। সৃস্টি হলো ধর্মের। ধর্ম সামাজিক মানুষকে দেখালো কি ভাবে বেঁচে থাকতে হয়।
শেষ অবতার হলেন কল্কি। তিনি এখনো আসেন নি। তিনি হবেন জেনেটিক্যালি অনেক অনেক উন্নত এক মানুষ। তার আসাটাই আর একটা ইভলুশনের দরকার। কর্কট রোগের অতিরিক্ত কোষ বিভাজন ই নাকি তার প্রারম্ভ। অর্থাৎ সেই জেনেটিক ইভলুশনের কাজ শুরু হয়ে গেছে।
ছেলে বলে উঠলো। আমি তো ভাবতেই পারছিনা যে ডারউইনের অনেক আগেই হিন্দু পুরাণে এসব লেখা আছে।
মা বললেন, হা আছে।আসলে ভারতীয় রা ভাবতে জানে, আবিষ্কার ও করতে জানে। কিন্তু তাকে বিজ্ঞানের ভাষায় লিখতে জানে না। তারা এই সব আবিষ্কার কে পুরাণের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। তাই পুরাণ সঠিক ভাবে পড়তে পারলে দেখা যাবে ভারতীয়রা যা বহুকাল আগে ভেবে ফেলেছে, তা বিদেশিরা আজ ভাবতে শুরু করেছে।
এখন প্রশ্ন হলো তুই কি বেছে নিবি ?? পুরাণ নাকি আমেরিকার জেনেটিক বিজ্ঞান। সেটা তোর উপর নির্ভর করছে।
ছেলে মাকে প্রণাম করে বললো তাই তো মায়েরা
সন্তানের প্রথম শিক্ষা গুরু।