আজিকার এই বিশ্বপ্রেমের দিনে,
তোমার সঙ্গে করবো বিনিময়।
বুকভরা মোর ভালোবাসা শুধু প্রিয়া,
আর হাতভরা এই গোলাপনিচয়।
সবাই মোরা আনন্দেতে মাতি,
পার্কে কিম্বা নির্জন এক স্থানে।
হয়ত মোরা জানি নাকো সবাই,
এই দিনটি পালন করার মানে।
জুনো নামে দেবী ছিলেন রোমে,
নরনারীর প্রেমের প্রতীক রূপে।
রোম সম্রাট তাহারই সম্মানে,
দিতেন ছুটি এই দিনটিতেই।
সেদিন থেকেই হলো প্রচলন,
ভালোবাসার দিনটি পালন করার।
এই বিশ্বাস নিয়ে লোকে মনে,
করতো শপথ নতুন জীবন গড়ার।
কিন্তু এতে দ্বিমত অনেকেরই,
অন্য মতে বিশ্বাসী কেউ কেউ।
সে মতটি ছিলো এইরকম,
শুনলে মনে জাগবে দুখের ঢেউ।
প্রাচীন রোমে ছিলেন একদা,
খৃষ্টান পাদ্রী ভেলেন্টিয়ান নামে।
চিকিৎসকও ছিলেন একাধারে,
ছিলেন সদয় রোগীসেবার সনে।
খৃষ্টধর্ম সেথায় ছিলো মানা,
রোম সম্রাট ক্লডিয়াস তাই তাঁরে।
নিক্ষেপিলেন অন্ধ কারাগৃহে,
সাজা পেলেন পাদ্রী নির্বিচারে।
হেনকালে কারাপ্রধান সেথায়,
আর্জি নিয়ে হলেন উপনীত।
অন্ধ মেয়ের দৃষ্টি ফেরার লাগি,
করেন আর্জি চিকিৎসানিমিত্ত।
চিকিৎসাতে দৃষ্টি এলো ফিরে,
পাদ্রীসাধুর নামটি খ্যাত হলো।
এ কারণে বেঁধে বধ্যভূমে,
সম্রাট তার প্রাণদণ্ড দিলো।
যাবার আগে প্রেমের চিঠি লিখে,
দিয়ে গেলেন কারাপ্রধানের হাতে।
তাহার মাঝে বার্তা ছিলো এই,
দেখবে যখন তখন আমি নেই।
মনের মাঝে মুকুলখানি যবে,
ফুটেছিল তোমার প্রেমের লাগি।
পড়লো ঝরে কালবোশেখির ঝড়ে,
বুঝো না ভুল লইনু বিদায় মাগি।
বার্তাখানি পড়লো যখন মেয়ে,
কম্পিত তার রক্তগোলাপ ঠোঁট।
কেঁদে কেঁদে আবার অন্ধ হলো,
ফিরে পাওয়া তাহার দুটি চোখ।
দিনটি ছিলো ১৪ ই ফেব্রুয়ারী,
খৃষ্টীয় সন দুই শত সত্তর।
ঘটলো প্রেমের অকাল সমাধি,
পূর্ণতা তার না পাওয়া মাত্তর।
ব্যর্থ প্রেমের করুন কাহিনি,
বিষাদগ্রস্ত করলো সবার মন।
রোম সম্রাট জেলাসিয়ুস তাই,
করলো মনে অদ্ভুত এক পণ।
তাই তো তিনি করেন ঘোষণা,
চারশত ছিয়ানব্বই খৃষ্টসনে।
আজি হইতে বিশ্ব প্রেমদিবস,
১৪ ই ফেব্রুয়ারীর এই দিনে।
এসো প্রিয়া তুমি আমি দুজন,
তাদের নামে করি বিনিময় ।
হাতভরা এই তাজা রক্তগোলাপ,
করতে তাদের আত্মা শান্তিময়।