Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » বিপ্লব বেঁচে থাকে || Sunirmla Ghosh

বিপ্লব বেঁচে থাকে || Sunirmla Ghosh

তখন প্রকৃতির মিলনের সময়,
ফুলে ফুলে পরাগমিলন ঘটিয়ে ফিরে যাচ্ছে প্রজাপতি মৌমাছি দল
তাদের বাসায় ।
স্তব্ধ আকাশ প্রভাকরকে বিদায় দিয়ে হাট বসাল তারাদের।
ন্যাকা কৌমুদী আলো ধার নিয়ে বসে আছে তারাদের মাঝে,
সেই কোন বিকেল থেকে
বিপুল বেগে এক খরস্রোতা পাথর ভাঙানোর চেষ্টায়
গান গেয়ে চলেছে কোন নিশি থেকে
কলরবকে খুন করে।
মুঠো মুঠো নিঝুমতা নৈঃশব্দ্য ছড়িয়ে দিয়েছে বনানীর আঁচলে আঁচলে ।
পার্বতী কে সঙ্গে বুলেট এলো,
মুহূর্তে পার্বতীর আলোয় চারধারে হয়ে উঠলো ঝলমলো।
সারা দেশ বেশ কিছুদিন ধরে উত্তাল ।
শহরের নামী দামী কলেজের ছাত্র ছাত্রী রা দল বেঁধে
নিশ্চিত আশ্রয় ছেড়ে
গাছের কোটরে কোটরে
বনে বনস্থলে।
উদ্যত রাইফেল হাতে দেশ রক্ষাকারীদের শিরায় শিরায় আগুন ।
কাঁদছেন দেশহিতকারী,
মাঝে মাঝে আগুনে ঝলসে নিচ্ছেন চোখ ।
সেই তাপে গনগনে আচ মুখে নিয়ে
হুঙ্কার __ ” খতম করো নকশাল কো।
মাঝে মাঝে নব ঘুরিয়ে বাড়িয়ে দিচ্ছেন এ সি।
দূরে দাঁড়িয়ে স্থবির মনীষীদের মূর্তি কাঁদছেন,
কখনো কখনো ধর থেকে মুন্ডু নামিয়ে শক্তি জোগাচ্ছে ন আন্দোলনে।
দগ্ধ স্কুলে ঘন্টা বাজছে,
পড়ানো হচ্ছে জীবনতত্ত্ব।
হুঙ্কারে কাঁপছে দেশ।
মুক্তিকামীদের আস্ফালনে
” রাইফেল ই শক্তির উৎস ” শ্লোগানে মিছিলে কামানের গর্জনে
নিরীহ মানুষের রক্তে ভাসছে দেশের নিকাশি নালা নর্দমা।
পার্বতীর চোখে চোখ বুলেটের
রাগ বুলেটের শরীরে তখন ছুটন্ত ঘোড়া।
তুই নাকি ফিরে যেতে চাস আমাদের ছেড়ে নিজ গৃহে “
পার্বতী হাসে ম্লান মুখে,
শরীরে তখন মাতৃত্বের আনন্দ
অবসাদ ।
ধীরে ধীরে ফুটে ওঠে চাঁদ ,
দলের সবথেকে বড় নেতা শুভর দাঁড়িগোফে ঢাকা মুখ।
চোখের ইঙ্গিত
বলিষ্ঠ কাম তখন ছুটে আসে দিগন্ত থেকে দিগন্তে।
প্রেসিডেন্সির ছেলে তখন অদৃশ্য তুলিতে ছবি আঁকে,
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্বতীর নিষিদ্ধ প্রান্তরে
সময় পুড়ে যায় না টানা সিগারেটের সাথে।
তারপর কতরাত ঘাসের গালিচায়
নগ্ন হাত দুজন দুজনের গলায় ।
শুভ টের পায়,
শুভর বুক কাঁপে অজানা আশঙ্কায় ।
দলে ফতোয়া জারি __ শুভর নেতৃত্বে
মৃত্যুদন্ড পার্বতীর ।
বুলেটের রিভালভারের হাত ওঠার আগেই__
অদৃশ্য শক্তির গুলি ঝাঝঁরা করে বিপ্লবী মায়ের শরীর ।
পার্বতী লুটিয়ে পড়ে,
রক্ত নদীর জলে ছিটকে পড়ে ।
অস্ফুটে পার্বতী বলে,
“আসতে দিলিনা পৃথিবীতে
আগুনের স্ফুলিঙ্গ কে
শুভর সন্তানেরে।”
ঝুম ঝুম নিঝুমতা নামে চারধারে।
বুলেট একবার দেখতে পায়
শুভর পিস্তল থেকে তখনও ধোঁয়া বেরচ্ছে ।
বিপ্লব শেষ হয়ে গেছে __
বিপ্লব মরে না,
যুগ যুগ বেঁচে থাকে
নিপীড়িতের শরীরে শরীরে ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *