Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » বিপন্ন বিভ্রম || Sankar Brahma

বিপন্ন বিভ্রম || Sankar Brahma

বিপন্ন বিভ্রম

আমি সেতারে রবিশংকরের একটা সুর তুলছিলাম। মন্থর লয়ের মোলায়েম একটি গৎ।
তখন আমার মেয়ে, বিছানায় শুতে যাবার আগে, সোফায় স্থির হয়ে শুয়েছিল। আমি বাজনা থামাবার পর সে বলল – বাবা।
আমি বললাম, হ্যাঁ বল।
সে একটু তোতলা প্রকৃতির। আমি দাদার (ঠাকুর্দার) কথা ভাবছি। বলেই সে উঠে বসল। চোখে মুখে তার দুশ্চিন্তার ছাপ।
সে আবার বলল, আমরা যখন সব এখানে , তখন দাদা কি করছে একা একা ওপারে?
আমি তার কথা শুনে জিজ্ঞাসা করলাম, কখন, এখন?
মেয়ে কি উত্তর দিল, স্পষ্ট শোনা গেল না।
তখন আমার চোখে ভেসে উঠল, সমস্ত কিছু।বাবার সেই ঘর। খাটে শুয়ে বাবা যেন ঘুমিয়ে আছে।
মেয়ে বলল, দাদা কি ঘুমিয়ে আছে?
আমার স্ত্রী তাকে বলল, হ্যাঁ।
কিন্তু আমি কিছু উত্তর দিলাম না। অনেকক্ষণ চুপ করে বসে রইলাম। কিন্তু দেখি মেয়ে উত্তরের অপেক্ষায়, আমার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে।
অবশেষে আমি বললাম, না ঘুমিয়ে নেই, তোমার দাদা মারা গেছেন।
মেয়ে যেন আঁতকে উঠল। আর কিছু বলতে পারল না। চোখদু’টি তার ছলছল করে উঠল জলে।

যখন তিনি অসুস্থ ছিলেন, ভর্তি ছিলেন বাঙুর হাসপাতালে। তারপর একটু সুস্থ হয়ে ওঠার পর, তাঁকে বাড়ি নিয়ে চলে এলাম। তোমার মনে আছে?
মেয়ে চেচিয়ে উঠল, হ্যাঁ হ্যাঁ সেই সময় দাদা আমাকে একটা বড় ক্যাডরেরী কিনে দিয়ে ছিল।

আমি সেতার রেখে উঠতে যাচ্ছিলাম, মেয়ে অনুনয়ের সুরে বলল , ওখানেই বসো বাবা, তুমি উঠো না। এবার একটা ঝালা বাজাও। আমিও গভীরভাবে আমার পরলোকগত বাবার কথা ভাবলাম। তারপর মেয়ের কথা মতো সেতারে
‘ঝালা’ বাজাতে শুরু করলাম। মেয়ে আবার সোফায় শুয়ে পড়ল। ছাদের দিকে চোখ তুলে তাকিয়ে, সে যেন কি ভাবতে লাগল। তার চোখ দুটি জলে টলটলে করছে ভারে। মহাকব্যে একেই বলে বোধহয় ‘মুক্তোর মতো অশ্রু-দানা’।
আমার স্ত্রী ওকে বিছানায় নিয়ে যেতে এলো। কিন্তু সে কিছুতেই বিছনায় যেতে রাজী হল না।
সে বলল, না আমি এখন ঘুমোতে যাব না। আমি দাদার কথা ভাবছি, আমাকে বিরক্ত কোরো না।
তারপরে বলল, আচ্ছা মা, সব লোকেরাই কি মরে যায়?
আমার স্ত্রী মলিন সুরে অস্ফূটে বলে উঠল , হ্যাঁ মা, সবাই একসময় মরে যায়।
মেয়ে উঠে বসে চিৎকার করে উঠল, না না না।
আমার বাবা মা কখনও মরবে না। তার চোখদুটি
ব্যথায় নীল হয়ে উঠল যেন।

বাবা যখন মারা গেল, তখন আমার কাছে সব ওলট-পালট হয়ে গেল। মনে হল জীবনের সব যেন অবান্তর। সবই অস্পষ্ট, ঝাপসা। সব যেন বিপর্যস্ত হয়ে গেল আমার জীবনে। আমি তখন নানারকম বিভ্রমে এবং বিষন্নতায় ভুগছি।
পাগল হয়ে যেতে পারি যে কোন মুহূর্তে, এমন মনের ভাব আমার। আমি তা’তে মনে মনে খুব
ভীত হয়ে পড়লাম।
মানসিক অবসাদে জড়িয়ে পড়ে, আমার মনে হল আমি যেন ষড়-ঋতুর চারপাশে পাক খেয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছি, বৃহৎ একটা পোকার মতো।
আমি নানারকম দুর্দাশায় জড়িয়ে পড়ছি। নানারকম দুঃস্বপ্ন দেখছি।
আমার চারপাশের সকলের মুখে, আমি ভয়ংকর আতঙ্কের কি সব দেখতে পাচ্ছি। আয়নায় নিজের চেহারা দেখে আঁতকে উঠছি।চোখের নীচে কালি,চোখদু’টি কোটরে বসে গেছে। চোয়াল ভেঙে দু’পাশের হনু বেরিয়ে পড়েছে।
আমি যেখানে যাই, যেখানেই দাঁড়াই, চরিদিকে যেন দেখতে পাই মৃত্যুর নীরব হাতছানি।
মনেহয় চারিদিকে যেন ফাঁদ পাতা পতনের গহ্বর, অনাচার আর অবক্ষয়ের বিবর। আমি ঘুমোতে গেলেও, স্বপ্নে এসে তাড়া করে,
নানা রকম দুঃস্বপ্ন। আমাকে ঘুমতে দেয় না।
একদিন ঘুমের মধ্যে আমার হাত পা গরম হয়ে তেতে উঠল। আমার মনে হল যেন হাতের শিরা-উপশিরার মধ্য দিয়ে বিদ্যুৎ-প্রবাহ ছুটে চলেছে। আমি চিৎকার করে উঠলাম আতঙ্কে।
তারপর দেখে, সর্বত্রই ওই বিদ্যুৎ প্রবাহ। সমস্ত বাড়িতে বিদ্যুতে ভরে গেছে। হঠাৎ বাড়িটা যেন বিকট একটা শব্দ করে গলে গলে মোমবাতির মতো ঝরে পড়তে লাগল। জানলা, দরজা, সিলিং- ফ্যান, ঘরের সব আসবাব। ভযংকর একটা ভীতি ধীর ধীরে আমাকে গ্রাস করতে লাগল। উৎকট গা-গুলানো একটা পোড়া গন্ধ এসে নাকে লাগল।
আমি ভয়ে চিৎকার উঠলাম, বাবা বাবা…
আমি দেখতে পেলাম, মা দৌড়ে এসে স্নান ঘরে লুকালো। বাবাও কি তা’হলে ওখানে আছে? না হলে বাবা সাড়া দিচ্ছে না কেন?
এবার পোড়া গন্ধটা নাকে এসে জোরে ঝাপটা দিল।
যখন স্বপ্ন ভেঙে আমি ঘুম থেকে জেগে উঠলাম, তখন যেন আমার হৃদপিন্ডটা এতো জোরে জোরে লাফাচ্ছিল যে, মনে হচ্ছিল ওটা লাফাতে লাফাতে এক সময় ফেটে যেতে পারে কিংবা আমার শরীর ছেড়ে বেরিয়ে আসতে পারে।
আমার পাশেই অকাতরে ঘুমাচ্ছে আমার মেয়ে, তার মৃদু শ্বাস-প্রশ্বাসের শব্দ, তার প্রাণের গতি প্রবাহ, যেন নিবিড়ভাবে অনুরণন তুললো আমার বুকের ভিতরে।
সেদিন থেকেই যেন আমি, আমাদের সর্বনাশের পায়ের আওয়াজ শুনতে পেলাম। আমি জানতে পারলাম, আমার মায়ের ক্যান্সার হয়েছে। আমার মা একটা প্রাথমিক স্কুলে পড়াতেন। যখনই মা স্কুলে পড়াতে যেতেন, আমি তখন জানলায় গিয়ে দাঁড়াতাম। তাঁর যাওয়া দেখতাম। জীবনে মার অনেক স্মৃতি ভুলে গেছি আমি। কিন্ত তাঁর ওই যাওয়ার দৃশ্যটা এখনও চোখে লেগে আছে। ভুলতে পারিনি।
আমি যেন স্পষ্ট এখনও দেখতে পাই, যেতে যেতে মা ঘুরে একবার জানলার দিকে তাকলেন।
তারপর গেট পর্যন্ত গিয়ে, আর একবার তাকালেন। তারপর শেষে গেট খুলে বাইরে গিয়ে,গেট লাগিয়ে, জানলার দিকে শেষবার তাকিয়ে, নিঃশব্দে মৃদু হেসে হাত নাড়লেন কয়েকবার। তারপর বেরিয়ে গেলেন।
আমি জানলায় দাঁড়িয়ে সব দৃশ্যটুকু দেখে মনে মনে খুব উপভোগ করতাম।
ওই একই ভাবে আমি দেখি আমার মেয়েকে, যখন সে খেলতে যায়, বা বাগানে গিয়ে ওর মায়ের পুজোর জন্য ফুল তোলে , গাছের নীচে হীরেরকুচির মতো পড়ে থাকা শিউলি-ফুলগুলি আলতো হাতে খুব যত্ন করে তোলে। বেশীর ভাগ সময়ই ও একা একা থাকে, শান্ত ভাবে একা একাই খেলা-ধূলা করে৷ ফুল তোলার সময় বা খেলার সময়, তার রেশমী-চুলে রোদ পড়ে বা ছায়া পড়ে, বাতাসে ওড়ে তার চুলগুলি হাল্কা ভাবে। তখন মুগ্ধ হয়ে তার দিকে দেখি আমি।

আমি ভেবেছিলাম, আশঙ্কা করেছিলাম, সর্বনাশের গতিটা বোধহয় খুব দ্রুত হবে। এই এসে গেল বুঝি, খুব ভয় ছিল। সেইসময় আমি যদি কখনও বাইরে যেতাম কোন প্রয়োজনে, আমার মনে হতো, এই এখনই বোধহয় দুর্ঘটনাটা ঘটতে পারে। বাসটা রাস্তা থেকে সোজা এসে ঘাড়ে উঠতে পারে। কিংবা কেউ এসে আমার পেটে ছুরি ঢুকিয়ে দিতে পারে আচমকাই।
হয়তো এখনই ঘটবে সেটা। আর তখন মনে হতো, এইসব দ্রুতগামী যান-বাহন, দ্রুত ধাবমান লোকজন,বাড়ি-ঘর, রাস্তা-ঘাট শেষবারের মতো দেখে নিচ্ছি, আর দেখতে পাব না। তবে আজ যদি না ঘটে, তবে কাল ঘটবে নিশ্চয়ই। না হলে, এক সপ্তাহের মধ্যে ঘটবে। না হলে এ’মাসের মধ্যে অবশ্যই ঘটবে সেটা।
হ্যাঁ, ঠিক এই ভাবেই ভাবতাম তখন। আজ যদি না ঘটে, তবে কখনও না কখনও ঘটবে, অবধারিত ভাবে ঘটবে। এটাই ছিল তখনকার অপরিহার্য আতঙ্ক আমার।
অবক্ষয় থেকে নির্গত যেন একটা তল-তলে ধূসর বর্ণের আঠার মধ্যে পড়ে আমি একটা পিঁপড়ের মতো আটকে গেছি, কিছুতেই অনেক চেষ্টা করেও,আঠা ছেড়ে বেরোতে পারছি না। তবুও চেষ্টা করে যাচ্ছি। উদ্ধার পাওয়ার কোন উপায় দেখছি না। এমন একটা ঘোরের অবস্থার মধ্যে কাটতো আমার তখন।
আমি জানলায় দাঁড়িয়ে দেখতাম, এক-দঙ্গল খুঁদে খুঁদে পিঁপড়ে, একটা আধ-খাওয়া কেঁচোকে
ঢেকে ফেলেছে নিজেদের শরীর দিয়ে।
ঠিক তখনই আমার চোখে পড়তো, অদূরে একটা রাস্তার খেঁকি কুকুর, মুখে তার একটা মুরগীর বাচ্চা,আধ-খাওয়া অবস্থায়।
আমি যেন কাছেই কোথায়ও গুলির আওয়াজ শুনতে পেতাম। নাকে এসে লাগত বারুদের গন্ধ।
কেউ যেন কানের কাছে এসে বলে উঠত, ‘ তুমি নিজে কাউকে খাবে, কিংবা কেউ এসে তোমাকে খাবে।’ এটাই জীবনের ধর্ম।
আমি ভাবতাম, কেউ কি আমার মতো মৃত্যুর পায়ের আওয়াজ শুনতে পায় না? পায় না বোধহয়, নাহলে কেন কেউ না কেউ কাউকে টেনে নীচে নামিয়ে আনছে, কিংবা নিজের মুঠোর মধ্যে রাখতে। এসব দেখে আমার হাসি পেতো।

আমি নিজে, নিজেকে দেখতাম, অচেনার মতো।
কখনও নিজের ঘরে, খাবার টেবিলে, কখনও বা মৃদু সেতারের ঝংকারে, আমি দেখতাম, আমার ধর থেকে মুন্ডুটা আলাদা হয়ে গিয়ে, মেঝেতে গড়াগড়ি খাচ্ছে। আমি দেখতাম আমার দু’হাত যেন ঠেলে ঠেলে সমস্ত বাধা-বিপত্তিগুলি দূরে সরিয়ে দিতে চাইছে। যেমন ভাবে পানা পুকুরে চান করতে নেমে লোকে,পানা সরিয়ে মুহূর্তে ডুব দিয়ে ওঠে, সে’ভাবে।
আমার মনে হতো, আমার ধর যেন দ্রুত পঁচে উঠতে শুরু করেছে, নাকে তার দুর্গন্ধ এসে লাগছে।
মাঝে মাঝে আমার মনে হতো, আমি কেন গাছ হয়ে জন্মালাম না? এইসব ভাবতে ভাবতে আমি এত বিভোর হয়ে থাকতাম, যে বউ কোন দরকারে আমাকে কাছে এসে ডাকলেও, আমি শুনতে পেতাম না। মেয়ে আমাকে জোরে জোরে ডাকলেও, তা আমার কান পর্যন্ত এসে পৌঁছাতো না।
তারপর একদিন দেখলাম, আমি আমার স্ত্রীর ডাকনামটা কিছুতেই মনে করতে পারছি না।
কিছুতেই মনে ভেসে আসছে না আমার প্রিয় মেয়েটার মুখ। বাবার নামও মনে করতে পারছি না যেন। এ’সব কি হচ্ছে, ঠিক-ঠাক বুঝে উঠতে পারতাম না আমি। তা’হলে কি আমি ধীরে ধীরে
পাগল হয়ে যাচ্ছি?
বাবার মৃত্যুর পর, মা তখনও বেঁচে। মা আমার মুখের দিকে তাকালো। মনে হলো, মুখটা যেন চেনা চেনা, বহুদিন আগে কোথায়ও দেখেছি। কোথায় দেখেছি, ঠিক মনে করতে পারলাম না।
এর কিছুদিন পর, আমার স্ত্রী একজন ভাল মানসিক ডাক্তার ডেকে আনলো। ডাক্তারকে দেখে যেন আমার ভীষণ চেনা চেনা মনে হলো।
কোথায় দেখেছি,কোথায় দেখেছি, আমি ভাবতে লাগলাম।
ডাক্তার অনেকক্ষণ ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে,
খুটিয়ে খুঁটিয়ে নানারকম প্রশ্ন করে, যতটা সম্ভব বুঝবার চেষ্টা করলেন।
চলে যাবার আগে ডাক্তার, আমার স্ত্রীকে
সহানুভূতির স্বরে বললেন, আর দেরী না করে, ভালই করেছেন। কালই ওনাকে নিয়ে গিয়ে, গোবরা মানসিক হাসপাতালে , ভর্তি করে দিয়ে আসুন, আমি ওদের বলে রাখবো।
কথাটা শুনে আমার স্ত্রী শিশুর মতো ঝরঝর করে কেঁদে ফেললো ডাক্তারের সামনেই।
ডাক্তার আরও সহানুভূতির সুরে বললেন, ভাববার কিছু নেই, উনি সুস্থ হয়ে যাবেন। বলে ডাক্তার চলে গেলেন
মা তখন ফ্যালফ্যাল করে আমার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলো।
মেয়েটা কোথায়ও খেলছিল, ছুটে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো, আমি তাকে চিনতে পারলাম না।
সে বলল,বাবা, বাবা তুমি কোথায়ও যাবে না। এখানেই থাকবে আমাদের কাছে।
আমার মনে হলো, বহুদূর থেকে ধ্বনিত হতে হতে
ঢেউ তুলে কথাগুলি আমার কানে এসে ধাক্কা মারছে। ‘বা – – – ব – – – বা’ – স্বরটা খুব চেনা চেনা, কিন্তু কার? কে ডাকছে এমন আকুল স্বরে, আমি ঠিক বুঝতে পারছি না। কিছুতেই মনে করত পারছি না, এটা কার স্বর ? কেন এত চেনা চেনা লাগছে?
আমার স্ত্রী চোখের জল মুছে, মেয়ের হাত ধরে বলল , পাশের ঘরে চলো। ওকে এখন আর কোন রকম বিরক্ত কোরো না।
আমার মা আমার পাশে এসে বসলেন। আমার মাথার চুলের মধ্যে হাত বোলাতে লাগলেন। কিন্তু কিছুতেই আমি আমার মায়ের মুখটা মনে করতে পারলাম না। বাবার নামটা যেন কি? আমি আপ্রাণ ভাবতে চেষ্টা করলাম।
কিছুতেই মনে আসছে না।
এ আমার কি হলো? আমি ভাবতে লাগলাম।
এ’রকম হচ্ছে কেন? ভাবতে ভাবতে আমি
ভাবনার অতলে তলিয়ে গেলাম।

এখন মনেহয় এ সব যেন গতজন্মের কথা।
আমি গোবরা মেন্টাল হসপিটাল থেকে সুস্থ হয়ে গতবছর মে মাসে বাড়ি ফিরেছি। আমার মা ইতিমধ্যেই গত হয়েছেন। তাঁর ছবি দেওয়ালে টাঙানো আছে। আমি রোজ সকাল সন্ধ্যায় দেখি। আমার মেয়ের বয়স বেড়েছে চার বছর। স্ত্রী যেন আরও যুবতী হয়েছে। আর এখন আমি সেতার বাজাই।
বাবার কথা তেমন আর ভাবি না আজকাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress