মৎসগন্ধা,অনিন্দ্যসুন্দরী ধীবর রাজকন্যা,
মহাভারতের বিশাল আঙ্গিকে সত্যবতীর ভূমিকা অনস্বীকার্য,
রহস্যপূর্ণ, বিতর্কিতা, চিন্তা-ভাবনায় প্রাসঙ্গিক এবং বাস্তববাদী ব্যক্তিত্ব স্বরূপ চরিত্র,
অনন্যা, অপরাজিতা সত্যবতীর রূপে, গুণে যে কোন পুরুষচিত্তে আলোড়ন উঠতো,
সৌন্দর্য ত্বকের সংকীর্ণতায় আবদ্ধ ছিলো না….
চতুরা, বুদ্ধিমতী, যৌনতায় পারদর্শী এক নারী,
জীবন নাটকের প্রতিটি দৃশ্যে অপ্রত্যাশিত ঘটনা কখনো খুব আধুনিকা,কখনো নিন্দার্য করে তাকে উপস্থাপন করেছে।
কামাতুর পুরুষের কাছে সুকৌশলে তাঁর দাবীগুলো এক এক করে উত্থাপন করেছিলেন
দাবী পূরণে মিলিত হয়েছিলেন ঋষি পরাশরের সাথে
কামনার উদ্রেকে পথভ্রষ্টা, কলঙ্কিতা হতে চাননি,
জানতেন কুমারী মায়ের একা সন্তান প্রতিপালন সহজসাধ্য নয়,
পরাশর আর সত্যবতীর অলৌকিক মিলনে ভারত সংস্কৃতির জয়যাত্রা সূচিত হলো…..
মহাভারত স্রষ্টা কৃষ্ণ দ্বৈপায়নের জন্ম।
সর্বসাধারণের গ্ৰহণযোগ্যতার প্রশ্নে সত্যবতীর চরিত্র সৃষ্টিতে অলৌকিকত্ব যুক্ত হল…
মহাভারতের পরবর্তী অংশে সুগন্ধা সত্যবতী আরও প্রাজ্ঞ, পরিণত, বুদ্ধিমতী হয়ে উঠলেন,
ভারত কুরুবংশ জাতক রাজা শান্তুনু পাণিপ্রার্থনা করেন সত্যবতীর,
তার গর্ভজাত সন্তান হস্তিনাপুরের ভবিষ্যৎ উত্তরাধিকারী কঠোর এই শর্ত চরিত্রে চাতুর্যের পরিচয় মেলে
মৌনতাকে অবলম্বন করে পরোক্ষে সমর্থন করে কার্যসিদ্ধি করেছেন বহুবার,
স্বার্থকে বাস্তবায়িত করছেন পুরুষকে কঠিন পরীক্ষা থেকে চ্যূত করে
ক্ষেত্রজ সন্তান উৎপাদনে বংশরক্ষায় তার সিদ্ধান্ত হতবাক করে!
প্রগতিশীল এই সিদ্ধান্তে সর্বাংশে এক আধুনিকা নারী
আর্য–অনার্যের মিলনের বীজ প্রোথিত হলো
এক চালে ব্যসদেবের সাথে কুরুবংশ জুড়ে দিলেন,
ভীষ্মের প্রতিজ্ঞায় তিনি রাজমহিষী-রাজমাতা রূপে হস্তিনাপুরের ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রক ছিলেন
অন্তঃপুর বাসিন্দা হওয়া সত্বেও সুদক্ষ রাজকার্য পরিচালাক ছিলেন।
সত্যবতীকে অনায়াসে সে যুগের প্রগতিশীল, দক্ষ রাজনিতীবিদ বলা যেতেই পারে।
মহাভারতের বিশাল দর্পণে এক অন্যতম নারী চরিত্র সত্যবতী।