Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

হর কিষণ সিং এর ড্রিঙ্কস এর মাত্রাটা যে একটু বেড়েছে তা লক্ষ্য করেছে অরুনা। তার সঙ্গে ধূমপানের মাত্রা ও বেড়েছে। নিশ্চয়ই কিছু হয়েছে!নইলে এমন টা তো হবার নয়!এসব ভাবতে ভাবতেই ঘুম আসছে না অরুনার। ছেলের সঙ্গে কিছু হয়নি তো?বেশ ক’দিন হলো ছেলে তার বাপের ওপর চটে আছে। বাবার সঙ্গে ছেলের প্রায় কথা নেই বললেই চলে। যেটুকু বলতে হচ্ছে সে টুকুতে প্রায় বিদ্রোহের ছোঁয়া রয়েছে। ভাবতে ভাবতে উঠে গেল বিছানা থেকে। বাতি জ্বলে সময় টা দেখে নিল। রাত দুটো বাজে এতক্ষণ বসে বসে হর কিষণ কি করছে! ড্রইং রুম এ বসে ই ড্রিংক করে অন্য দিন। আজ সেখানে নেই। তখনই চোখে পড়ল সামনের দরজা খোলা। বুকটা ছাঁৎ করে উঠলো অরুনার। বাক বিতন্ডা কিছুই তো হয়নি!কোথায় গেল!ঠিক তখনই নাকে এলো সিগারেটের গন্ধ। সে দিকেই পা বাড়াল অরুনা। যা ভেবেছে তাই। আগে কার আমলের বাঙলো বাড়ি। বাড়ির চারদিকে বার্মাটিক এর রেলিংয়ের ঘেরাটোপ। সেই বারান্দায় বসে আছে হর কিষণ। এটা ওদের শয়ন কক্ষের পাশের বারান্দা। মেয়ের ঘর থেকে এ জায়গাটা অনেক দূরে। উত্তর দেয় না হর কিষণ। মনে তার ঝড় চলছে। ভাবে, অনেক দেরি হয়ে গেছে। তবু ও ছেলেকে বাঁচাতে হবে। এ কখনো হতে পারে না। অরুনাকে বলতেই হবে। ——অরুনা, একটা কথা বলা জরুরি তোমাকে। জানি এরপর তুমি আমার মুখ দেখতে চাইবে না। তবু ও ছেলে কে বাঁচাতে হবে। ———কি হয়েছে হরজিত এর? ——–তোমার ছেলে একজন কে ভালোবাসে ও বিয়ে করতে চায়। ——‘তা ভালোই তো। ———না। তা হতে পারে না। শিলিগুড়িতে ঐ মেয়েকে আমি ব্যবহার করেছিলাম। ওরা ওটা বিয়ে জানলেও আমি দশ হাজার টাকার বিনিময়ে ওকে ব্যবহার করেছিলাম। শেষে রফা হয় আট হাজার টাকায়। অরুনার মনে হল। এই ইংলিশ এর হেড অব দা ডিপার্টমেন্ট প্রফেসর বাদামী সিং। সেই এসেছিল হর কিষণ কে দেখতে। বাবার শোধ ছেলের ওপরে তুলতে চায়। এটা ভালবাসা নয়। ———চমৎকার! ———‘অমন বলো না। তোমার কথা ভেবেই ওকে তেজপুর নিয়ে আসিনি। কেন আনেনি তা অরুনা জানে। সে মেয়েকে আনলে আজ আর এতো উঁচুতে ওঠা যেতো না। মেয়েকে তোয়াজ না করলে জেনারেল ম্যানেজার তাঁর জামাইকে হেল্প করবে কেন? ——প্লিজ অরুনা শিলিগুড়ি থেকে ফিরে ওদের খবর আর নেই নি। ——তা তুমি কি চাও ছেলের সঙ্গে কমপিট করতে? ——-যতো খুশি আমাকে শোনা ও।কিন্তু ছেলেকে ফেরাও। ———–আমি মরে গেলে ও ছেলেকে বলতে পারব না যে আমার স্বামী একজন মেয়েকে ছয় মাসের জন্য ব্যবহার করেছে। কতো অপমান আর করবে! এই শিক্ষা টা তোমার দরকার ছিল। ছেলের সমবয়সী একটা মেয়েকে—-ছিঃছিঃ। কথা বলতে পারে না অরুনা। কান্নায় গলা বুজে যায়। ——-বাদামী কে একবার রিকোয়েস্ট করো। আমি তো জোর করে করিনি কাজটা। ওর বাবা সব জানত। ওর তাড়ি গেলার টাকার দরকার ছিল আর— —–আর সেই সুযোগটা তুমি নিয়েছ। তোমরা পুরুষরা সব পার। ঘেন্নায় মরে যাই এমন জীবন যাপন করতে হয় বলে। ——প্লিজ অরুনা। ট্রাই টু আন্ডারস্ট্যান্ড। ঐ মেয়ে হরজিতের ঘরে শুলে আমার— ——চুপ কর। আর সহ্য করতে পারছি না। কানে হাত চাপা দিয়ে অরুনা ভেতরে চলে যায়। * ঘুম আসে না বাদামীর। শিলিগুড়ির কথা মনে পড়ে যায়। শিলিগুড়ি থেকে এখানে পালিয়ে বেঁচেছিল বাদামী। এবার কোথায় যাবে? একখানা মুখ চোখের সামনে ভেসে উঠে। সে মুখ ডক্টরেট দেবব্রত সোম এর। সেই মানুষটা কে মন দিয়ে ফেলেছিল বাদামী। কিন্তু যাবার আগে সে তো একবার ও বলে গেল না। জোর করতে তো পারত। না তাঁর কোন দোষ নেই। সব দোষ বাদামীর। তাঁকে আঘাত দিয়েছিল বাদামী। তাঁকে ফিরিয়ে দিয়েছিল বাদামী। উঠে বসল চিঠি লিখতে। একটা ঘোরের মধ্যে লিখে ফেলল অনেক কথা। বাদামী –র আগাগোড়া জীবনের সবটাই মেলে ধরল সেই চিঠিতে। চিঠিটা খামে ভরে, কি মনে হতে খুলে পড়ল চিঠিখানা। ছিঃছিঃ!নিজেকে এ ভাবে ভিখারির মতো মেলে ধরেছে। কী মনে করবে মানুষটা! ছিঁড়ে ফেলল চিঠিটা। ঘুমে জাগরণে রাত শেষ হয়েছে। সকালে ইউনিভার্সিটি যাবার তাড়া। গাড়ির শব্দ হতে জানালার পর্দা সরাল বাদামী। এত সকালে কে এল? লাল মারুতি গেট এ দাঁড়ানো। হরজিত, সঙ্গে রহিতকে নিয়ে এসেছে। ———-কী ব্যাপার?তোমরা এ সময়ে?আমি তো এখন ইউনিভার্সিটিতে যাচ্ছি। ———আমরা মার্কেটিং এ যাচ্ছি। তোমার দরকারি টুকটাক, মানে বিয়ের জন্য যা লাগবে তা তোমাকেই কিনতে হবে। ——-আমি যেতে পারব না। ———-আরে ইয়ার মৎ যা ইউনিভার্সিটি। বিগ ব্রাদার আজ মৌজ মেঁ হ্যাঁয়। —–ইয়েস, ইউ মাস্ট কাম উইথ আস। —– বলে ওঠে হরজিত।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress