একগলা জমা জল ঠেলে উঠে জীবন খোঁজা,
নেতাদের বলা মিথ্যে আশ্বাসের ছবি ,
তবুও বেঁচে আছি কলকাতা ,
নিয়ন নয় , রাজপথের এক ঘুপচি কোণে, অন্ধকারে , ব্ল্যাকে কেনা কেরোসিনের কুপিতে,
বেঁচে আছি কলকাতা ।
শহরের বুক জুড়ে দাপাদাপি – উপলক্ষ্য
কোন নামকরা লোকের জন্মদিন।
কেক কেটে হৈ-হুল্লোর ,
তিনি জানেন কি আমাদের কথা ?
জানি না ।
আমাদের জন্মদিন হয় না,
তবুও আমরা জন্ম নি কলকাতা।
আমরা জানি না হায়দরাবাদ বা ভেলোর?
জানিনা অ্যাপোলো বা উডবার্ন ওয়ার্ড ?
শুধু জানি আট বছরের ভাইটা মরেছিল,
তার কি জ্বর হয়েছে তা জানাতে রক্ত পরীক্ষার
দশ ঘন্টা বাদে । ততক্ষণে ….।
মরতে মরতে হলেও বেঁচে আছি কলকাতা।
তোমরা কেনা জল খাও, আমরা কলের জল।
কখনো কেঁচো, কখনো অন্যকিছু।
কলকাতা তবুও বেঁচে আছি ।
হাজার বলা সত্ত্বেও পাই’না অনুদান,
কলেজ তো অনেক দূর ,
বাবুদের ছেলেটাকে স্কুলে দিয়ে আর নিয়ে আসি রোজ ।
ইচ্ছে হয় আমিও যাই স্কুলে ওর মত।
তাহলে বাসনটা কে মাজবে ?
মা অন্য বাড়ি গেছে ।
রোজগার চাই তো ।
তাই তো বারো বছরের আমি —
বাবুর কথায় ‘ সবজান্তা ‘।
এই সবজান্তা জানে পুজো আসে পুজো যায়,
নতুন পোষাক গায়ে ওঠে,
আমরা তাকিয়ে তাকিয়ে তোমাকে দেখি কলকাতা,
ওই দেখাটাই আমাদের নতুন জামা ,
এই নিয়েই তো আমাদের বেঁচে থাকা, কলকাতা।
তোমাদের পাশে আমরাও বেঁচে থাকব প্রিয় শহর,
বুকে নিয়ে একরাশ হতাশা আর ক্ষোভ,
চোখ জুড়ে আঁকা থাকুক মিথ্যে প্রতিশ্রুতির ছবি,
তবুও আমরা তোমাকে ছাড়ব না কলকাতা ।