Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » বর্ষামঙ্গল || Suchandra Basu

বর্ষামঙ্গল || Suchandra Basu

বর্ষামঙ্গল

ছিলাম যখন খাস কলকাতায়। উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট স্ট্রিট, সুকিয়া স্ট্রিট, ঠনঠনিয়া এলাকা মেঘ ডাকলেই জল জমে কৃত্রিম সমুদ্র। কিশোরী এবং যৌবনবেলা আমার কেটেছে ওই এলাকাতেই। ইস্কুল বিডনস্ট্রিট থেকে ফেরার সময় আষাঢ় শ্রাবণ মাসে রোজই বৃষ্টির মুখোমুখি। জমা জলে যানবাহন ভারসাম্যহীন। হাতে টানা রিকশাই ছিল একমাত্র পরিত্রাতা। রিকশা চালক চলেছে গলা পর্যন্ত জলে আমি সিটে বসে। মাথায় ছাউনি তুলে। সামনে পরদা ঝোলানো তবুও বৃষ্টির জলে যাতে না ভিজে যাই ছাতাটাও পরদা আর ছাউনির ফাঁক দিয়ে মেলে ধরি।ওতে তেমন কোন লাভ হয় না।রিকশা চালক ভিজে ভিজেই চলত হেলতে দুলতে, ভাসতে ভাসতে। আশপাশের সব বাড়িতে একতলার খাটের নীচে জল। রাস্তা থেকে ঢেউ ছলাৎ ছলাৎ আওয়াজ তুলছে। খাটের ওপর গৃহস্থালী , যদি সারমেয় থাকে তো সেও বাঁচতে উঠে পড়ত বিছানায় । তখন বর্ষা মানে জল জমা শর্ট সার্কিটে বিদ্যুতের ট্রান্সফর্মার পুড়ে যাওয়া। সব কাজ পন্ড। বাজার যাওয়ার পথ নেই। খাবার নেই, জল নেই, বেরোবারও পথ নেই। বাড়িটা রাস্তা থেকে উঁচু হওয়ায় আমাদের বাড়িতে জল ঢুকতে পারত না। পাড়ার বাকি বাড়ি জলবন্দি।তারা কাটাতো গোটা রাত অভুক্ত, নিদ্রাহীন। এই
ছিল সেই সময়। ছেলেবেলার আনন্দ কাগজের
নৌকা। পুরোনো খাতার পাতা নৌকাবেশে ভাসত
সেই জমা জলে।
এখন মফস্বলের বাসিন্দা। কলকাতার কাছাকাছি
তবে তেমন নয়।এখানেও দেখেছি কালো মেঘ
জুড়ে আকাশ। সমূদ্রের কাছাকাছি নয় তবু্ও বর্ষার ঘনিয়ে আসা মেঘের ডাক যেন দাঁত কড়মড়
করে ক্রুদ্ধ। ভয়ঙ্কর সে চকমকি বিজুরি।
সামনাসামনি সাদা উজ্জ্বল আলোয় চোখ আঁধার
হয়ে বিকট শব্দে কান স্তব্দ।তারপরই ঝমঝমিয়ে
বারিধারা। গাছগাছালি যেন আনন্দে পাতায়
পাতায় দিচ্ছে করতালি।যেদিকে বইছে বাতাস
বৃষ্টিও ছুটছে সেই দিকে। এখানেও মাঠ ময়দানের
অভাব। রয়েছে একটি পুকুর তাও উবছে জলস্রোত। পুকুর বুঁজিয়ে প্রোমোটরের তোলা
পিলারে বৃষ্টির নাচ আর কিছু টিনের চালার বাড়িতে বৃষ্টির গান বেশ মনোরম। সিঁড়ির কাঁচের জানালার একটু ফাঁক দিয়ে দেখছিলাম পশ্চিমের আকাশ। পাখিগুলো আজ ডাকেনি।কোথায় আশ্রয় নিয়েছে তারা মন ভাবতে চায়।বাগানের
পুঁই আর কুমড়ো লতা জলে ভিজে খুব খুশি।
ইটের পোড় ভাঙবাড়ির দেওয়াল বেয়ে বৃষ্টিধারা না অশ্রুধারা বোঝা দায়।তারও অন্তরে অতীত উঁকি মারে।সেই বৃষ্টি মাথায় ধীবর ছুটেছে নৌকা
নিয়ে গঙ্গায়। শহরের পূর্বে গঙ্গার ঘাটে ছাতার
নীচে দাঁড়িয়ে মৎসপ্রেমী জোয়ারে আসা রূপালী
মাছের আশায়। এদিকে পুকুরের জল উপছে সে
স্রোতের অভিমুখে কই ছুটে চলেছে। অনেকে
বাড়ি থেকে বেড়িয়ে পড়েছে সেই কই ধরতে।
এখানে বর্ষায় মাছ ধরার আনন্দ বেশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress