Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » বরনারী || Sanjit Mandal

বরনারী || Sanjit Mandal

শোনো বরনারী, সবারেই ধরি ,ডেকে বলি বারে বার
কন্যা ভ্রূণ হত্যা কখনো , হয় নাকো যেন আর।
মেয়েরা সে নাকি লুপ্ত প্রজাতি ,ক্রমে কমে দিনে দিনে,
সেনশাস নাকি হিসেব দিয়েছে , শুনিয়াছি কানে কানে।
তবে আজ বলো, কিভাবে ফিরিব , কার গর্ভেতে রবো,
তুমি না থাকিলে ,বলো অবহেলে, কার অমৃত পাবো।
এও শুনিয়াছি ,তোমরাই নাকি ,দ্রৌপদী হবে সেদিনে,
একাই পাঁচটা স্বামী সামলাবে, কুন্তীর কথা শুনে।
স্বেচ্ছায় নাকি কারো অপেক্ষায় লোলুপ ভ্রাতারা জানে
পারে না বলিতে ,বারণ করিতে ,ভয়াবহ কথা শুনে।

সবাই বাধ্য , নয় অবাধ্য, মাতৃ ভক্ত সবে,
এ হেন বারতা ,কুন্তীর কথা, কে আর শুনেছে কবে!
তুমি সুন্দরী, তাই বোধকরি ,ভাইয়ে ভাইয়ে লুকোচুরি,
হবে না দ্বন্দ্ব ,পাবে গো ছন্দ, সংসার সুখ করি।
তুমি মেনেছিলে, বুঝি ভেবেছিলে, হবে নাকো টানাটানি,
সামাল দিয়েছো, ভাসিয়ে দিয়েছো, প্রেম সুধা দিয়ে রাণী।

তবু দেখ বাদ ,সেধেছে সমাজ, জুয়ার বাজীতে তুমি,
ধর্মের পুত, ভারী অদ্ভূত, বিক্রি করেছে শুনি।
যে দিন তোমায় বাজী ধরেছিল , সেদিন কে ছিল স্বামী,
কোন অধিকারে জুয়া বাজী ধরে, ধর্মের পুত শুনি !
সেদিন তোমার , বাদ প্রতিবাদ, শুনেছিল কতজনে,
শ্বশুর, ভাশুর, রথী মহারথী, আর সভাসদ জনে।
মুখরিত তুমি ,ন্যায় অন্যায়, প্রশ্ন তুলেছো কত,
ভীষ্ম,দ্রোণ, কর্ণ ও কৃপ অন্ধই ছিল ,ধৃতরাষ্ট্রের মতো।

দ্রৌপদী তুমি, রজঃস্বলা ছিলে, একথান পরিহিতা,
দুঃশাসনের বজ্রমুষ্টি , ছিঁড়েছিল চুল কটা।
এতোটা সাহস পেল সে কোথায়, ছিল নাকো বুঝি কেউ,
যে পারে ঠেকাতে ,এতো অপমান, নিরস্ত করে কেউ !

ধর্ম তখন মুখ বুজে ছিল, বীর গান্ডীব হারা,
গদা ধারী ভীম নতমস্তকে নকুল সহদেব বাক্য হারা।
তুমি একাকীনী, সেদিন বুঝেছো, দুর্জ্ঞেয় নীরবতা,
ডেকেছো সেদিন জোড়হাত করি, যে ছিল তোমার মিতা।
তারে ডাকিয়াছ, নাম ভুলিয়াছ, পঞ্চস্বামী দেবতা,
বিপদ তারণ সে মনোহরণ হৃদয়েতে থাকে সদা।
লজ্জাহরণ, বিপদতারণ, যদি না শুনিত বাণী,
সে মহা যাতনা, বিশ্বচেতনা, বাকরোধ হত শুনি।
যেখানে নারীর মান অপমান , লাঞ্ছনা গম্ভীর,
বীর স্বামী সবে, নতমুখে বসে, হয়েছিল নতশির।
ধর্মের ধ্বজা উড়িয়ে যখন, জুয়া খেলে বাজী হারে,
বাহবা বলে কি ন্যায় নীতি সব, চুপ করে ছিল ঘরে !

হে নারী ,আজিকে ধরো তরোবারি, বাঁচাও নিজেই নিজেকে,
অপমান ভার, দূরে সরে যাক, নিজে নাও পথ করে।
তুমি ছিলে তাই, প্রথম সারিতে, প্রতিবাদ স্বরূপিনী,
কৃষ্ণের সখি, কৃষ্ণা সে নারী শক্তির স্বরূপিনী।

হে নারী মহান, যদি সম্মান, করিতে না পারি জেনো,
ধ্বংসের পথে যাবে যে সমাজ, সেই কথা মনে মেনো।
হবে লজ্জিতা ,মাতা এ বসুধা, ম্লান হয়ে যাবে কত,
সুন্দর হয়ে উঠুক সমাজ, এই হোক আজ ব্রত।
যেথা লাঞ্ছিতা, মাতা ,বধু, বোন ,আর বরনারী যত
ধ্বংস হবেই , সে নগরী সমাজ, ভূমিকম্পের মতো।
বাঁচাও জননী, বসুধা আপনি, বাঁচাও সৃষ্টি যতনে,
এসো হাত ধরি, প্রতিবাদ করি, বাঁচাব জীবন জীবনে।
এ পৃথিবী হেরি, মায়াময় ভারী, হেথায় জনম মরণে,
কন্যার ভ্রূণ বাঁচাতেই হবে সেই কথা রেখো স্মরণে।।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *