Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » বন্ধুত্ব || Samarpita Raha

বন্ধুত্ব || Samarpita Raha

মধুরিমা আর রিপন দুই ভাই বোন। রিপনের চেয়ে চার বছরেরে বড় দিদি মধুরিমা।পড়াশুনা ভাইয়ের তুলনায় দিদি বেশি ভাল।
মধুরিমা কলেজে পড়ে ,স্মার্ট ঝকঝকে মেয়ে। কলেজে বহু ছেলে মধুরিমা কে পছন্দ। কিন্তু মধুরিমা কলেজে পড়াশুনা করতে গেছে। কলেজে প্রফেসররাও খুব স্নেহ করতেন। উঁচু ক্লাসের দাদারাও নানান অছিলায় সাহায্যের হাত বাড়ানোর চেষ্ঠা করত।
মধুরিমার বাবা ও মা ইঞ্জিনিয়ার, ভাই উচ্চমাধ্যমিক দেবে। মধুকে বাবা বলেন শোনো আমাদের ইচ্ছা ছিল তুমি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়বে ,তা না পড়ে প্রাণীবিদ্যা নিয়ে অনার্স পড়ছ,রেজাল্ট ভাল হওয়া চাই।
কলেজের সবাই বুঝে গেছে মধুরিমা পড়াশোনা ছাড়া কিছু বোঝে না। পঙ্কজ, অসিত ও মধুরিমা কলেজের সবচেয়ে ভাল ছেলে মেয়ে। তিনজনের খুব ভাল বন্ধু।
একদিন কলেজে গিয়ে শোনে পঙ্কজ আর অসিতের মধ্যে তুমুল ঝগড়া। কারণটা কেউ জানে না। মধুরিমা জানবার চেষ্ঠা করে,কিন্তু কিছুই জানতে পারে না।
পরপর কটা পিরিয়ড ক্লাস বন্ধ..যে যার মত খোশমেজাজে গল্পে ব্যস্ত। মধুরিমা ,পঙ্কজ ও অসিতের রাগ ভাঙানোর জন্য গান গায়…বাহিরে ঝড় বয়….। পঙ্কজ মধুরিমা কে বলে থামবি,আর বেসুরো গাস না।তাহলে কবিতা বলি,তখন অসিত বলে হ্যাঁ কর।
কথা ছিল একতরীতে কেবল তুমি আমি যাব অকারণে ভেসে কেবল ভেসে,এিভুবনের জানবে না কেউ আমরা তীর্থগামি। কোথায় যেতেছি কোন দেশে সে কোন দেশে। শোনাব গান একলা তোমার কানে। ঢেউয়ের মত ভাষা বাঁধনহারা।
অসিত হাততালি দিয়ে ওঠে। মধুরিমা বলে আরে পুরোটা শোন। জানিস অসিত, পঙ্কজের আমার গান ,কবিতা সব পচা লাগে।
মধুরিমা ভাবল পরিস্থিতি সামাল দেবে ,তা না আরো দুই বন্ধুর মধ্যে তফাত বাড়তেই লাগল।
আবার ক্লাস,নোটস,বাড়ি,বন্ধুদের আড্ডা চলতেই লাগল।
তেরই আগষ্ট মাঝরাত ,মধুরিমার বাড়িতে পুলিশ আসে মধুরিমা কে অ্যারেস্ট করে, বন্ধু অসিত খুন হবার অভিযোগে।মধু তো শুনে থ। তারপর ওকে পাড়ার সবার সামনে দিয়ে পুলিশ ধরে নিয়ে যাবে। ওর পড়াশুনা,ভাইয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং এ ভর্তি, বাবা ও মা অফিসে কি করে মুখ দেখাবে এইসব ভাবতেই থাকে।খুনের কেসে অভিযুক্ত মধুরিমার বাড়িতে তদন্ত হবার আগেই পাড়াপড়শিরা ঢিল ছুঁড়ে জানলা কাচ ভেঙে দেওয়া চলতে লাগল।
জানা গেল কল্যাণী স্টেশনে র ধারে অসিতের দেহ পাওয়া গেছে।পুলিশের অনুমান এিকোন প্রেমে্র বলী। মধুরিমা আর পঙ্কজ নাকি চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে দিয়েছে।
পঙ্কজ জানিয়েছে অসিত প্রেম নিবেদন করেছিল মধুরিমাকে আর উত্যক্ত করছিল ট্রেনে,রাগে মধু ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয়।পঙ্কজ সিটে বসেছিলো,সব নিজের চোখে দেখেছে।
মধুরিমা পুলিশকে বলে আমি তো ব্যারাকপুর থাকি,শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে চেপে বাড়ি চলে যায়।পঙ্কজ হালিশহর আর অসিত চাকদহ তে থাকে। আমি কিছুই জানি না।আমাদের কোন প্রেম নেয়। আমি কলেজে পড়াশুনা করতে গেছি।
কোনো প্রমান পাওয়া যায় না।
পেপারে বড় বড় অক্ষরে ছাপা এিকোন প্রেমের বলী।দোষীরা মুখ খুলছে না।
বেশ কিছুদিন যায়, তদন্ত চলছে।
অসিতের আলমারি খুলে ওর মা দেখতে পাই একটা চিঠি,তাতে লেখা অনার্সটা কেটে গেছে তাই আজ আত্মহননের পথ বেঁচে নেব।কোন উপায়ে মরব ভাবছি।
তারপর ওর মা ছুটে যায় থানায়। কেন ওরা সাজা পাবে,তার ছেলে এটাও লিখেছে ,মধুরিমা আর পঙ্কজ খুব ভাল বন্ধু।
তারপর পঙ্কজ ও মধুমিতা ছাড়া পায়। কিন্তু পুলিশ পঙ্কজ কে বলে তুমি মধুরিমা র নামে মিথ্যা বয়ান কেন দিয়েছিলে। পঙ্কজ বলে মধুরিমা আমার চেয়ে বেশি ভাল ফল করেছে তাই।একটা মেয়ে হয়ে আমার চেয়ে ভাল করেছে বলে মিথ্যা বয়ান দিয়েছি।মধুরিমা বলে ছি ছি,পঙ্কজ এই তুই আমার বন্ধু। এক বন্ধু চলে গিয়ে আমার ও আমার পরিবারের মান সম্মান নষ্ট করল।
হাহাহা অট্টহাসি তে বলল তুই ও ভাল বন্ধু।তবে কি জানিস পুরুষ জাতটার প্রতি ঘৃণা ধরেগেল।আজ কোন রির্পোটার নেই দেখ।কাল পেপারে কি উঠবে জানেন আমাদের বাবারা বড়লোক বলে প্রশাসন ও অসিতের পরিবারকে টাকা দিয়ে কেসটা বন্ধ করেছি।
পরদিন পেপারে হেডলাইন নিরপরাধ বলে মধুরিমা ও পঙ্কজকে মুক্তি।
মেয়েরা সংসার গড়ে,কিছু মেয়ে ভাঙে,তবে এই নিরপরাধ মেয়েটির দোষ কি ছিল…ও দেখতে ভাল,..ও বড়লোকের মেয়ে…পড়াশুনায় ভাল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *