Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ফুটবল || Tarapada Roy

ফুটবল || Tarapada Roy

ফুটবল

০১. ধাপে ধাপে ফুটবল

পাঁচ নম্বর ফুটবল?

সে আবার কী?

ফুটবলের আবার নম্বর কীসের? ফুটবলের খেলোয়াড়ের জার্সিতে অবশ্য নম্বর দেখা যায়, কিন্তু ফুটবলের নম্বর জিনিসটি কী?

কোনও পাঠকের মনে যদি এই প্রশ্ন উদয় হয়, তিনি যদি অন্তত মধ্যবয়সি হন তবে বলব তিনি ফুটবলের অ-আ-ক-খ জানেন না। ফুটবলের বর্ণপরিচয় তার হয়নি।

এখনও আছে কিনা জানি না, আমাদের ছোটবেলায় ফুটবল ছিল এক থেকে পাঁচ নম্বরের।

গেঞ্জির যেমন নম্বর আটাশ, বত্রিশ, ছত্রিশ তেমনই ফুটবলের নম্বর আকার অনুযায়ী। সবচেয়ে ছোটটা ছোট বয়সের বালকদের, সদ্য যারা শৈশব উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের জন্য। আকার একটা ভাল সাইজের বাতাবি লেবুর মতো।

আকারে ছোট হলেও বড় ফুটবলের মতোই এর মধ্যে রবারের ব্লাডার ছিল, সেটা পাম্প করে। ফোলাতে হত। ফিতে ছিল, যাকে বলা হত লেস, ব্লাডার ফোলানোর পর সেই নল বলের মধ্যে ঢুকিয়ে ফিতে বাঁধা হত। এই একনম্বর বল দিয়েই প্রকৃত ফুটবল খেলা শুরু।

প্রথম ধাপ ছিল রবারের কিংবা টেনিস বল দিয়ে। রবারের লাল-নীল বল, দাম তিন পয়সা কি চার পয়সা। কিন্তু যুদ্ধ মানে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ সরগরম হতে রবারের বল বাজারে দুষ্প্রাপ্য হল।

দাদা ঠাকুমার শরণাপন্ন হল।

তিন পয়সা বা এক আনা নয়, দু আনা দশ পয়সাতেও বাজারে বল মিলছে না। বেশি দামে যদিও বা কোনও কোনও দোকানে পাওয়া যাচ্ছে সেও অতি পুরনো, লিক হওয়া বল, একটু খেলতেই ফুটো দিয়ে হাওয়া বেরিয়ে গিয়ে, চুপসিয়ে যায়। সে বল দিয়ে আর খেলা যায় না।

এরপরে আমরা কাঁচা বাতাবি লেবু দিয়ে কিছুদিন খেলার চেষ্টা করলাম। আমাদের অঞ্চলে বলত জাম্বুরা। প্রকৃত গোলাকার জাম্বুরা বিরল, সে সংগ্রহ করাও কঠিন। আর সেই জাম্বুরাও ভাদ্রমাসের মধ্যে সব ফুরিয়ে গেল।

ঠাকুমাকে দাদা সমস্যার কথা বলতে, ঠাকুমা সব শুনে বললেন, ঠিক আছে আমি দেখছি। মণিকে একটা খবর দিস।

ঠাকুমার দক্ষিণ হস্ত ছিলেন মণিকাকা। আমাদের পাড়াতেই থাকতেন। পাড়া সুবাদে কাকা, আমাদের আত্মীয় ছিলেন না। খুব ভাল বাঁশি বাজাতেন। তখন গানের মাস্টারি করতেন আর ফাঁইফরমায়েস খাটতেন।

পরদিন বিকেলে আমাদের এত্তেলা পেয়ে মণিকাকা ঠাকুমার কাছে এলেন। তার পনেরো মিনিট পরে মণিকাকার সঙ্গে বেশ কয়েকজন সহ-খেলোয়াড় সমেত আমি আর দাদা গেলাম ঢাকাইপট্টিতে।

ঢাকাইপট্টি আমাদের শহরের বড় রাস্তায় বাজারের পিছন দিকে একসারি দোকান। সবই জুতোর। দোকান। জুতো ছাড়াও এসব দোকানে পাওয়া যেত ছাতা, ওয়াটারপ্রুফ, খেলার সরঞ্জাম ইত্যাদি।

এই ইত্যাদির মধ্যে ক্যারামবোর্ড, ব্যাডমিন্টনের নেট ও র‍্যাকেট, ক্রিকেট ব্যাট, ফুটবল, ফুটবলের ব্লাডার ও পাম্প এইসব রয়েছে।

ঢাকাইপট্টির প্রথম দোকানই মণি মিঞার দোকান। মণিকাকা আর দোকানদারের নামের মিল থাকাতে দুজনে পরস্পরের মিতা।

সেই মিতার দোকান থেকে দেড় টাকা দিয়ে আমাদের জীবনের প্রথম ফুটবল কেনা হল। সবচেয়ে ছোট সাইজের একনম্বর ফুটবল।

০২. নম্বরের ক্রম বিবর্তন

এক নম্বরের ফুটবল ছিল বেশ ছোট আকারের। প্রায় একটা বড় বাতাবি লেবুর সাইজেরই হবে। আগে আমরা যে বড় রবারের বল নিয়ে খেলতাম তার চেয়ে বড় বটে কিন্তু খুব হালকা।

আমরা খেলতাম বাড়ির সামনের উঠোনে, দালান আর কাছারিবাড়ির মধ্যে। সুযোগ পেলেই দাদা এক কিকে বলটাকে ছাদের ওপরে পাঠিয়ে দিত। সিঁড়ি দিয়ে ছুটে ছাদে উঠে আবার বলটাকে নামিয়ে আনতে হত।

অনেক সময় ছাদে আমসত্ত্ব, কাসুন্দি, ডালের বড়ি রোদে দেওয়া হত। হঠাৎ বল পড়ে সেসব তছনছ হয়ে যেত। রীতিমতো হইচই পড়ে যেত বাড়ির মধ্যে, ঠাকুমা দুবার বল কেড়ে নিয়ে তার লেপ-তোশক রাখার বড় কাঠের আলমারিতে তালা দিয়ে রাখলেন। বহু কষ্টে, কাদাকাটি করে দাদা সে বল উদ্ধার করে নিয়ে এল, তবে মুচলেকা দিতে হল, বল আর ছাদে উঠবে না।

কিন্তু প্রতিশ্রুতি রক্ষিত হল না। খেলার উত্তেজনার মধ্যে ঠাঁই করে এক হাফ কিক দিয়ে দাদা আবার বল শূন্যে পাঠাল, শূন্য থেকে ছাদে পড়ল সেই বল।

সেদিন খুবই কেলেংকারি হল। বড় চিনেমাটির বয়ামে জলপাইয়ের তেল-আচার ছাদে রোদে দেওয়া হয়েছিল। বিকেলের পরে রোদ পড়তে এসব জিনিস ছাদ থেকে নামিয়ে নিয়ে যাওয়া হত।

কিন্তু আমাদের খেলা শুরু হয়ে যেত রোদ পড়তে না পড়তে, স্কুল থেকে ফিরেই।

সেদিন বয়াম নামিয়ে আনার সময় ঠাকুমার খাস পরিচারিকা আন্নাদির মাথার পিছনে গিয়ে লাগল দাদার কিক করা বল। ওরে বাবারে, মেরে ফেললে রে বলে আর্ত চিৎকার করে ছাদের ওপরে লুটিয়ে পড়ল আন্নাদি। তার কাঁখ থেকে পড়ে আচারের বয়াম চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেল। সারা ছাদ জুড়ে চিনেমাটির ভাঙা টুকরো, জলপাই আর তেলের ছড়াছড়ি।

আন্নাদির ছিল ভূতের ভয়। ছাদের চিলেকোঠা ঘরে এক বা একাধিক ভূত আছে, এ কথা আন্নাদির কাছে জ্ঞান হওয়া ইস্তক আমরা শুনে আসছি।

ভূতের ভয়ে ভরদুপুরে, ভর-সন্ধ্যায়, রাতের বেলায় আন্নাদি ছাদে উঠত না। কিন্তু পড়ন্ত বিকেলে ভূত পিছন থেকে মাথার ওপরে লাফিয়ে পড়বে এটা আন্নাদি ভাবতেও পারেনি।

আন্নাদি চিৎকার শুনে পাড়ার অর্ধেক লোক আমাদের বাড়িতে ছুটে এল। সব কথা শোনার পর তারা ঠাকুমাকে দুষতে লাগল, এসব কর্তামার দোষ। তিনি আহ্লাদ করে ওইটুকু নাতিদের ফুটবল কিনে দিতে গেলেন কেন?

আবার ফুটবল বাজেয়াপ্ত হল।

আমরাও বিকেলবেলা খেলাধুলা না করে নদীর ধারে গিয়ে খেয়াঘাটে লোকজন যাতায়াত দেখে সময় কাটাতে লাগলাম।

০৩. আসল ফুটবল

ক্রমে দুর্গাপুজো এসে গেল। পুজো শেষ হতে না হতে স্কুলের বাৎসরিক পরীক্ষা।

তারপর শীতকাল, ব্যাডমিন্টন, ক্রিকেট। আমরা অবশ্য ক্রিকেট বলতাম না। খেলতাম এবং বলতাম, ব্যাটবল।

ফুটবলের কথা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম। তবে শুনেছিলাম, আমাদের সেই ভূতে পাওয়া ফুটবলটি গঙ্গাজল ছিটিয়ে শোধন করে ঠাকুমা আন্নাদিকে দিয়ে আমাদের পাড়ার পিছনের খালের মধ্যে ফেলে দিয়েছিলেন। ততদিনে সে বল স্রোতে ভাসতে ভাসতে খাল-বিল, নদীনালা হয়ে বোধহয় মহাসাগরে গিয়ে পৌঁছেছে।

তা পৌঁছাক, এদিকে পাড়ায় পাড়ায় ছেলেরা যেখানেই ফাঁকা জায়গা আছে বাঁশের খুঁটি পুঁতে নিয়ে ইট ফেলে গোলপোস্ট বানিয়ে ফুটবল শুরু করে দিয়েছে। তারা অবশ্য আমাদের থেকে বড়, তারা বড় ফুটবলে খেলে।

অনেক দেখেশুনে, চিন্তা করে আমরা গিয়ে মণিকাকাকে ধরলাম। মণিকাকা ভাল লোক, আমাদের খুব সাহায্য করলেন।

তবে মণিকাকা বললেন, তোদের আমি খেলার জায়গা দেখিয়ে দিচ্ছি। একটু দূরে হবে কিন্তু জায়গাটা নিরিবিলি, কেউ বিরক্ত করবে না। কিন্তু কখনও বাসায় খেলতে পারবে না। তাহলেই আমি বল কেড়ে নেব।

মণিকাকার বেছে দেওয়া জায়গাটা সত্যিই ভাল। আমাদের বাড়ি থেকে একটু দূরে থানার পিছনে জায়গাটা। বেশ বড় খোলামেলা জায়গা। একটাই অসুবিধে মাঠের প্রায় মাঝখানে একটা বুড়ো বেলগাছ আছে, সে আর কী করা যাবে।

মাঠটার দুপাশে দুটো বড় লম্বা চালাঘর। পুলিশ ব্যারাক–একটা হিন্দু পুলিশ ব্যারাক, অন্যটা মুসলিম পুলিশ ব্যারাক। হিন্দু ব্যারাকের পাশে আরেকটা বেলগাছ, তার নীচে শিবমন্দির। মুসলিম ব্যারাকের পাশে একটা টিনের মসজিদ।

এদিকে মণিকাকা ঠাকুমাকে কী সব বুঝিয়ে, ভুজুং-ভাজুং দিয়ে আমাদের নাম করে পুরো পাঁচটা টাকা তার কাছ থেকে আদায় করলেন।

এখন আমরা বড় হয়েছি। এখন আর আমাদের জন্য ছোট ফুটবল নয়, বড় ফুটবল কেনা হল। তিন নম্বর ফুটবল। পৌনে পাঁচ টাকা দাম।

পাঁচ টাকা, পৌনে পাঁচ টাকা এসবের মূল্য তখন অনেক। পাঁচ টাকায় আমাদের বাজারে পাঁচটা বড় ইলিশ মাছ পাওয়া যেত যার কলকাতার বাজারে এবছর অন্তত দুশো টাকা করে মোট হাজার টাকা দাম হত।

তা সেই বহু মূল্যবান চর্মগোলক দিয়ে আবার আমাদের খেলা শুরু হল।

সেই ফুটবলের প্রচুর তোয়াজ করত দাদা। তখন যুদ্ধের বাজারে গ্রিজ পাওয়া যেত না। দাদা ময়রাপাড়া থেকে মাখন কিনে এনে ফুটবলের গায়ে মাখাত।

বিকেলবেলায় মাঠে যাওয়ার আগে দল বেঁধে যেতাম সাইকেল রিপেয়ারিং স্টোরে। সেখানে এক পয়সা দিয়ে ব্লাডার পাম্প করানো হত। সবচেয়ে কঠিন কাজ ছিল ব্লাডারের নল সুতো দিয়ে বেঁধে সেই নল বলের মধ্যে ঢোকানো। এই সময়ে দোকানদারের অসাক্ষাতে দাদা একটু ভেসলিন দোকানের কৌটো থেকে নিয়ে নলের মুখে লাগিয়ে দিত, নলটা ঢোকানো সহজ হত। তারপরে টাইট করে ফিতে বাঁধা। নলের জায়গাটা উঁচু হয়ে থাকলে কিক করার সময়ে সেখানে লাগলে পায়ে ব্যথা লাগবে।

এইরকম নানা বিধিনিয়ম মান্য করে আমরা পুলিশ ব্যারাকের মাঠে খেলতে যেতাম।

কিন্তু তিনদিনের মাথায় আবার ফ্যাসাদ। আমাদের ভাগ্যই খারাপ। এবং এই দুর্ভাগ্যের মূলে আবার দাদা।

দাদা এমন একটা পেনাল্টি কিক নিলে যে সেটা গোলকিপারের মাথার তিনহাত ওপর দিয়ে গিয়ে পড়ল হিন্দু পুলিশ ব্যারাকের বারান্দায়। বারান্দায় তখন কাঠের উনুনে বড় কড়াইতে সেপাইদের ডাল রান্না হচ্ছিল।

বল গিয়ে পড়ল সেই কড়াইতে। আন্নাদির ব্যাপারের থেকেও মারাত্মক অবস্থা হল সেদিন। জনাদশেক ষণ্ডা-গুণ্ডা চেহারার সেপাই আমাদের এই মারে তো সেই মারে।

গোলমাল শুনে থানার ভারপ্রাপ্ত কলিম দারোগা থানা থেকে বেরিয়ে আমাদের খেলার মাঠে এলেন। এসে ঘটনার বিবরণ শুনে জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা কি হিন্দু?

আমরা বললাম, হ্যাঁ।

কলিম দারোগা বললেন, বাঁচা গেল। হিন্দুর বল হিন্দুর ডালে পড়েছে, আমি এর মধ্যে নেই।

এতদিন পরে সাম্প্রদায়িকতার ঘোলাজলে বেষ্টিত হয়ে সেদিনের কলিম দারোগার স্বস্তির অর্থটা বুঝি।

সে যা হোক, একটু পরে ডাল থেকে তুলে আনা বলটা দেখে কলিম সাহেব বললেন, সে কী, তোমরা এই ছোট বলে খেল নাকি? তাই বল উড়ে গিয়ে রান্নার কড়াইতে পড়ে।

দারোগা সাহেবের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন টাউন জমাদার। তাকে দারোগা সাহেব বললেন, জমাদার সাহেব, ঢাকাইপট্টিতে গিয়ে একটা বড় ফুটবল নিয়ে আসেন। আমার নাম বলবেন।

জমাদার সাহেব বল আনতে গেলেন, কলিম দারোগা আমাদের সঙ্গে গল্পগুজব শুরু করলেন। কিছুক্ষণ কথাবার্তার পর প্রশ্ন করলেন, তোমাদের ক্লাবের নাম কী?

আমরা বললাম, আমাদের ক্লাব নেই। ক্লাবের নাম নেই। ক্লাব না হলে ফুটবল খেলা হয়? কলিম দারোগা বললেন, তোমাদের ক্লাবের নাম দাও মিলন মেমোরিয়াল ক্লাব।

ইতিমধ্যে জমাদার সাহেব একটা প্রমাণসাইজের ফুটবল নিয়ে চলে এসেছেন। তখনকার পুলিশের প্রতাপ খুব কম ছিল না। জমাদার সাহেব বলটা কলিম দারোগার হাতে দিয়ে বললেন, তোরাব চোটার দোকান থেকে নিয়ে এলাম। পাঁচনম্বর, একেবারে আসল ফুটবল, টি লেন।

টি লেন মানে কী, কে জানে? আমরা খুশিমনে বলটা নিয়ে চলে এলাম। আসার সময় দারোগা সাহেব আবার মনে করিয়ে দিলেন, মিলন মেমোরিয়াল ক্লাব মনে রেখো।

০৪. মিলন মেমোরিয়াল ক্লাব

কলিম দারোগার অনুরোধ রক্ষা করে আমরা ক্লাবের নাম রেখেছিলাম। দাদা একটা সাইনবোর্ড তৈরি করে এনে কাছারিঘরের পাশে টাঙিয়ে দিয়েছিল।

মিলন মেমোরিয়াল ক্লাব।

এরকম ক্লাব তো আনাচেকানাচে, পাড়ায় পাড়ায় থাকে, কেউ বেশি কৌতূহল প্রকাশ করেনি।

অনেক পরে জেনেছিলাম দারোগা সাহেব আগে অন্য এক থানায় মিলন নামে এক দাগি আসামিকে পিটিয়ে মেরে ফেলেছিলেন। তারপর থেকে মানসিক দুঃখে এবং অনুতাপে দগ্ধ হয়ে যেখানেই গিয়েছেন সেখানেই একটি করে মিলন মেমোরিয়াল ক্লাব স্থাপন করেছিলেন।

মানুষ থাকে না, কিন্তু প্রতিষ্ঠান থেকে যায়।

কিছুদিন আগেও দেশের বাড়িতে গিয়ে দেখেছি, মিলন মেমোরিয়াল রয়ে গেছে। নতুন যুগের বালকেরা আমাদের মতোই দাপিয়ে পাঁচনম্বর ফুটবল নিয়ে খেলছে।

কবেকার দাগি চোর মিলন, কবেকার কলিম দারোগা, কেউ তাদের মনে রাখেনি। কিন্তু মিলন মেমোরিয়াল এখনও, পুলিশ ব্যারাকের মাঠে খেলে যাচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress