ঘুনধরা খিলান ,ভাঙ্গা নাটমঞ্চ ,শূন্য ঠাকুরদালান
আজ ধ্বংস দেউড়ির ইতিবৃত্তে নড়বড়ে সংসার।
তিন মহলার দোদন্ড প্রতাপ আর আর্তচিৎ্কারে –
ভরানো আছে নোনাধরা দেওয়ালে,সাক্ষী ইতিহাসের পাতা।
ঝুলের ঘেরাটোপে টাঙ্গানো অনুতপ্ত মুখ –
অনুশোচনার দগ্ধতায় অন্তরে করুন মর্মগাঁথা।
সেদিনের গঙ্গার বুকে কত শবযাত্রার মিছিল – আজও দম্ভ আর শোষনের কাহিনী শোনায় ছেঁড়া তমসুকে।
গুমঘরে রাত্রীনিশীথে কত অসহায় দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণ –
পনেরো থেকে পঁয়তাল্লিশ নিস্তারহীন কান্নায় ভরা।
রক্তাক্ত রাজপথ, বোবা প্রতিবাদের মিছিল ,ধরনা,
কৃষ্ণশূন্য মহাভারত আনে যা এখনও ভবিতব্য।
হাসিশূন্য,অশ্রুসজল বাধ্যতায় মেনকারা আবরণশূন্য দেহে – ভরেছে অনীহার বীর্য ।
গুমখুন ঢেকেছে লজ্জার সত্য,অর্থের পদভারে ঘুমিয়েছে অনুশাসন।
আজ চাঁদ কলঙ্ক মেখে,মেখে অভিশাপ হয়ে ফিরে আসে আত্মজায়।
কালো অতীত লেপটে আছে রক্তমাখা সিংদুয়ারে ,
ক্ষমাহীন কর্মফল বুকে আজ দাঁড়িয়ে অবশিষ্ট হতভাগ্য উত্তরাধিকার।
ভালোবাসাগুলো দুহাতে কুড়ায় ঝড়ে যাওয়া
চাঁদোয়ার ভগ্নাংশ,
ভাঙা পালংকের নিচে সান্ত্বনা খোঁজে মুছে যাওয়া সিঁদুরের হাহাকার ,
গুমঘরে সতীর মুখের অসতীর অট্টহাসিতে ভীত-সন্ত্রস্ত যুবতী।
বাঈমহলে লোভের ঘুঙুর খুশীর ফোয়ারা ছোটায় অশরীরী-
আজও প্রতিহিংসার প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অশৌচ হানা দেয় রাজপ্রাসাদে ।
এ যুগের অভিশপ্ত বংশধর নিরুপায় -রক্তঋণ শোধ করে।
রৌদ্রচিতায় দহীত পরাজিত সময় ,শতাব্দীর অবসানেও জীবনের রং ফিকে ,ফিকে ,
নিশিরাতে অতৃপ্ত আত্মারা আজও বিক্ষুব্ধ মিছিলে প্রতিবাদ তোলে।
জেগে ওঠে যত গোপন জিঘাংসা ছাইচাপা আগুনে –
প্রতিশোধ স্পৃহায় কফিনে ঢাকা আত্মার আত্মজে।
আজও ক্রোধানলে ছিনিয়ে নিতে চায় নিপীড়িত মহাকলরবে অধিকারের আন্দোলন ।
শতাব্দী অতীতের গলিত দেহাবশেষ বয়ে বয়ে দিনান্তে ক্লান্ত ,যন্ত্রণাকাতর –
অবসান হোক জীবনের রঙ্গমঞ্চে অভিশপ্ত পদাবলী
ধুয়ে যাক পঙ্কিলতার কষ্টিপাথর,
অবসান হোক জীর্ণ ধরায় ফেলা আসা পূর্বপুরুষের পাপস্খালন ।