প্রান্তিক সময়
অনিকেত,তোমার মনে পড়ে? ফেলে আসা কৃষ্ণচূড়া দিনের কথা !সেই প্রেমময় অনুরাগী সাঁঝবেলার কথা!
ওফ্ সে কি চনমনে উন্মুখর ব্যাকুলতা!
বিকেল পাঁচটার লোক্যালটা ইছামতি স্টেশনে থামলেই তোমার উদগ্রীব চোখ কাকে যেন খুঁজতো।
আমি ইচ্ছে করেই লুকোচুরি খেলতাম,নজর এড়িয়ে–
বলো,মনে পড়ে ?
তারপর,দু’জন কথাকলির ফানুস উড়িয়ে কৃষ্ণচূড়া গাছের নীচে,ঘাসের গালিচায় ঝুপ করে বসে- কি দুষ্টুমীই না করতে বাপু, লজ্জায় ডালিমরাঙ্গা গাল আমার!
একটু নিরালা হলেও মাঝে মধ্যে লোকেরা যেতে গিয়েও পেছনে তাকিয়ে মুচকি হাসতো।
তা,তোমার তাতে বয়েই গেলো!
বরং আরো দুষ্টুমী পেয়ে বসতো।
তারপর? মাগো! মনে পড়লেই গায়ে কাঁটা দেয় এখনো জানো!
বাড়িতে সবার অসবর্ণ বিয়েতে ঘোর আপত্তি,সেকি হৈ-চৈ তুলকালাম কাণ্ড!
তোমার মতো ক্যাবলাকান্ত হঠাৎ বীরপুরুষ ! একেবারে সিনেমার কায়দায় পৃথ্বীরাজ সেজে তোমার সংযুক্তাকে ইলোপ করে নিয়ে গেলে।
ভাবলেই এখনো বুকে শিরশিরানি টের পাইগো,বিশ্বাস করো, ছুঁয়ে বলছি- জীবনের দ্রাঘিমা রেখার প্রান্তরে আজ আমরা।তোমার হাতে লাঠি,আমার ও চোখে ভারী চশমা।
তবু ,পুরনো সময়ের স্মৃতি চুম্বকের মতো টানে আমায়। মেয়েবেলার প্রজাপতি দিনে ফিরে যেতে সাধ জাগে গো!
অনিকেত! যাবে ?
শুধু একটিবার আমাকে নিয়ে সেই সাঁঝবেলার কৃষ্ণচূড়া দিনে ! কৃষ্ণচূড়া গাছের নীচে— যাবে অনিকেত এই প্রান্তিক সময়ে?