Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » প্যারাডিম || Jibanananda Das

প্যারাডিম || Jibanananda Das

সময়ের সুতো নিয়ে কেটে গেছে ঢের দিন
এক আধবার শুধু নিশিত ক্ষমতা
এনেছিল,- তারপরে নিভে- মিশে গেছে;
হৃদয় কাটাল কান।
বালুঘড়ি ব’লে গেলঃ সময় রয়েছে ঢের
সেই সুর দূর এক আশ্চর্য কক্ষের
চোখের ভিতরে গিয়ে স্বর্ণ দীনারের
অমোঘ বৃত্তের মত রূপ নিয়ে নড়ে।
বালুঘড়ি ব’লে গেলঃ সময় রয়েছে ঢের
সময় রয়েছে ঢের ইহাদের- উহাদের;
সমুদ্রের বালি আর আকাশের তারার ভিতরে
চ’লেছে গাধার পিঠ- সিংহ, মেষ, বিদূষ্ক,
মূর্খ আর রূপসীর বিবাহ ঘটক,
ক্রীতদাস কাফরী তেল ব’য়ে আনে।
সময় রয়েছে ঢের- সময় রয়েছে ঢের
সরবপ্রাহের সব অগণন গণিকারা জানে।

চারিদিকে মৃগয়ার কলরব- সময়ের বীজ।
অনেক শিকারী আজ নেমেছে আলোকে।
আমিও সূর্যের তেজ দেখে গেছি বহুক্ষণ
ভারুই পাখির মত চোখে;
ঘুরুনো আলোয় ঘুরে সংস্করে;- উড়িবার হেতু
যদিও নেইক’ কিছু ক্ষিতিজ রেখার পথে আর।
বহু আগে রণ ক’রে গিয়েছিল বুদ্ধ আর মার;
অগ্নির অক্ষরে তবু গঠিত হয়েছে আজো সেতু।
ব্রহ্মার ডিমের সাথে একসাথে জন্মেছিল যারা ভালোবেসে
সেই স্বর্গ নরককে আবার ক্ষালন ক’রে- প্রমাণিত দেশে
তারাই তো রেখে দেবে,- মাঝখানে যদিও র’য়েছে আজ রক্তিম সাগর,
বিশ্বাসীরা চোখ বুজে ব’য়ে নেয় মুণ্ড আর কংকালের কেতু।
সম্রাটের সৈনিকেরা পথে পথে চ’রে
খুঁজে ফেরে কোন এক শুভলাঞ্ছন;

সফেন কাজের ঢেউয়ে মৃত্যু আছে- জানে;
তার আগে র’য়ে গেছে জীবন-মৃত্যুর অমিলন;
যেনো কোনো নরকের কর্নিশের থেকে ধীরে উঠে
কোনো এক নিম্নতর আঁধারের বিজৃম্ভিম কাক
আবার সাজাতে পারে দু’মুহূর্ত ময়ূরের মতন পোষাক,
সৈকতে বালির কণা নক্ষত্রের রোলে যদি এক সাথে জুটে
আবছায়া, অগ্নিভয়, অন্ধকার- সময়ের হাত ঠেলে ফেলে
অনাবিল অন্ত”সার নিতে দেয় খুঁটে।

সৈনিকের সম্রাটেরা স্থিরতর- তবু;
চারিদিকে মাতালের সাবলীল কাজ শেষ হ’লে
প্রতিধ্বনিত আর থাকে নাক’ যখন আকাশে
জলের উপরে হেঁটে মায়বীর মত যায় চ’লে।
(গভীর সৌকর্য দেখে মানবীয় আত্মা জাগে জন্তুদের ভিড়ে;)
অবিস্মরণীয় সব ইতিহাস পর্যায়ের দিকে
চেয়ে দেখে সর্বদাই পৃথিবীর প্রবীণ জ্ঞানীকে
ডেকে আনে তারা নিত্য নতুন তিমিরে;
নিপুণ ছেলের হাতে লাটিমের মত ঘোরে’ দ্বৈপায়ন বলে
ঘুরায়ে নিবিড় সেই প্যারাডিমটিরে।

‘যখন চিনির দাম বেড়ে গেছে ভয়ঙ্কর
রাতা খায় সেচ্ছায় নুনের পরিজ।
সমস্ত ভণ্ডুল হয়ে গেল পৃথিবীর,
মসৃন টেবিলে ব’সে খেলে যায় ব্রিজ।
জীবঙ্কে স্বাভাবিক নিঃশ্বাসের মত মেনে নিয়ে
মঞ্চে বক্তৃতা দেয় কর গুণে- কুকুর ক্ষেপিরে’।
ব’লে গেল অত্যন্ত অদ্ভুত এক টুপিব্যবসায়ী নেমে এসে;
যেখানে সম্ভ্রম করা সমুচিত সেখানে ভাঁড়ের মত হেসে।

‘সমস্ত সভার মাঝে তারপর
দম আর থাকে নাক’ কোনো কুকুরের;
একটি মাছিও আর বসে নাক’ বক্তার নাকে
একটি মশাও তাকে পায় নাক’ টের;
এবং পায়ের নিচে পৃথিবীরো মাটি আর নেই
তবু সবি পাওয়া যাবে চালানির মাল ছাড়ালেই।’
ব’লে গেল অত্যন্ত অদ্ভুত এক টুপিব্যবসায়ী নেমে এসে;
যেখানে সম্ভ্রম করা সমুচিত সেখানে ভাঁড়ের মত হেসে।

‘আমরা সকলে জানি বানরাজা নক্ষত্রের থেকে
সে জাহাজ এসে গেছে মুগশিরা তারকার দিকে;
হয়তো শরমা তাকে তুলে ধ’রে সারমেয়দের
নিকটে পাঠায়ে দেবে নির্জন তারিখে।
সম্প্রতি রুটিন তবে শেষ ক’রে- ঘুমাবার পরে
আবার সে দেখা দেবে আমাদের স্বাভাবিক সুবিধার তরে।’
ব’লে গেল অত্যন্ত অদ্ভুত এক টুপিব্যবসায়ী নেমে এসে;
যেখানে সম্ভ্রম করা সমুচিত সেখানে ভাঁড়ের মত হেসে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *