সূচীভেদ্য যাতনায় পৃথিবীর দু’ চোখে আজ নীরব বেদনার ধারা!
নিবিড় মমতার নিগড়ে স্নেহের আঁচলে আগলে রাখতো যে মা তার বক্ষে সন্তানদের,
যাদের জন্য অকৃপণ রসদ দিয়েছে ভরে ,
ফলে ফুলে,শস্যে ,অমৃতময় অফুরন্ত সম্ভারে!
সেই মূঢ় অর্বাচীনজনের নির্মম আঘাতে ক্ষত বিক্ষত তাঁর সর্বাঙ্গ,
আজ মূমূর্ষ পক্ষাঘাতগ্রস্ত দেহ অবসাদে স্থবির প্রায়।
পৃথিবী মাতার বক্ষপিঞ্জর আজ ঝাঁঝরা ,এ যে বড়ো কঠিন ব্যাধি!
অলক্ষ্যে রক্তক্ষরণ ঘটেই চলেছে অবিরল!
সীমাহীন আতঙ্কে বিস্ফারিত পৃথিবী যেন চেতনাহীন।
অকৃপণ মমতায় গড়ে তোলা অপত্য স্নেহে লালিত তাঁর সন্তানেরাই লোভের আগুনে সমস্ত বিবেক বুদ্ধি ও বিবেচনাকে বিক্রি করে দিচ্ছে কিনা অর্থের মানদন্ডে !
সমস্ত সবুজকে নিশ্চিহ্ন করার বিকৃত লোভে মেতেছে যেন।
পৃথিবী যেন দিশেহারা।
ক্ষণে ক্ষণে পলকহারা ধূসর চোখে তীব্র ঘৃণা,অভিমান ফুঁসে উঠছে,আবার পরক্ষণে
হিমশীতল অঙ্গ অসার।
কত দ্রুত পট পরিবর্তন ঘটছে মানসিকতার।
যে পৃথিবীতে ছিল উজ্জল সম্ভাবনার অফুরন্ত পশরা,
নদী,সাগর,ঝর্ণার সুপেয় বারিধারা জীবনের ধারক ও বাহক হয়ে, তা আজ নাব্যতা হারাচ্ছে,
সুমেরু কুমেরুর বরফ গলছে অতি দ্রুত লয়ে,
আর এসব কিছুর মূলে আছে মানুষ নামের অমানবিক কিছু লোভী মন।
যারা দ্রুত বনাঞ্চল ধ্বংস করে চলেছে,
ফলে, আবহাওয়ার তারতম্য ঘটছে,গাছপালা ধ্বংসের জন্য কার্বন ডাই অক্সাইড দ্রুত বৃদ্ধি পেতে চলেছে।
গাছপালা হ্রাস পেতে পাখির কূজন আর তেমন শোনা যাচ্ছেনা,
ফুলের বাগে ভ্রমরের গুঞ্জন আজ তেমনটি শোনা যায় কৈ!
ঋতুচক্র রূপান্তরিত হয়ে চলেছে,খরার প্রকোপে পৃথিবীর কোমল বক্ষ চৌচির,
মানুষ আজ যন্ত্রদানবে পরিণত হচ্ছে শুধুমাত্র নগরোন্নয়নের উল্লাসে,
এতোসব কান্ডের জন্যেই পৃথিবীর সব কোমলতা খসে পড়ছে,অসময়ে প্লাবন, অতিবৃষ্টির জলোচ্ছাসে,অনাবৃষ্টির ফলে প্রখর খরার চাপে পৃথিবীর বুকে হাহাকারের দীর্ঘশ্বাস!
আর, নিরন্তর এসব দেখে শতধা বেদনায়,
পৃথিবীর দুচোখে অবিরল কান্নার ধারা মর্মব্যথায়!
কবে জাগবে চৈতন্য! হুঁশে ফিরবে মানুষ কবে!
কবে পৃথিবী আবার আগের মতন হবে?