পরিবারের প্রতীক্ষায়
সকালে চায়ের দোকান খুলতে গিয়ে দেখে,ফুটপাতে পোষ্যকে জড়িয়ে ধরে পাতলা একটা কম্বল জড়িয়ে ঘুমিয়েছিল ছেলেটা।
যখন সে মাথার উপর থেকে ছাদ হারিয়েছিল, তখন তার সবটা বোঝার মতোও বয়স হয়নি। তাই কোথায় তার বাড়ি, তা মনে নেই। শুধু সে জানে, তার নাম অঙ্কিত সে কোন একটা স্কুলে পড়ত। তার বাবা কোনও এক অপরাধ করে কারাগারে বন্দি। তারপর থেকে ফুটপাতেই তার জায়গা হয়েছে। শুধু ছেড়ে যায়নি তার একমাত্র বন্ধু, পোষা কুকুর ড্যানি।
বাবা জেলবন্দি হওয়ার পরই তাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিল তার মা।
অঙ্কিত এবং ড্যানি – দুজনেরই ভূয়সী প্রশংসা করেছেন সেই চায়ের দোকানের মালিক। তিনি জানিয়েছেন ড্যানি কখনই অঙ্কিতের পাশ ছাড়ে না।
চা দোকানী নিজেই তার প্রিয়জনদের সন্ধানের চেষ্টায়। সব জেলার বিভিন্ন থানায় অঙ্কিতের ছবিও পাঠিয়েছে । জেলার মহিলা ও শিশু কল্যাণ বিভাগকেও জানিয়েছে। নিজের বাড়িতে তাদের দুজনের থাকার ব্যবস্থা করেছে । তার পরিবারের খোঁজ না মেলা পর্যন্ত একটি বেসরকারী স্কুলে নিখরচায় তার পড়াশোনা করার ব্যবস্থার কথা ভাবছে চা দোকানী।
জীবনধারণের জন্য কখনও তার চায়ের দোকানেই কাজ করে। তাই কাজের বিনিময়ে কিছু পারশ্রমিকও তাকে দিতে বাধ্য হয়।একসময় স্কুলে পড়াশোনা করা অঙ্কিত অবসরে কখনও বেলুন বিক্রি করে। অঙ্কিত যতক্ষণ তাঁর দোকানে কাজ করে, দোকানের এক কোণে বসে থাকে ড্যানি। আর অঙ্কিতের আত্মমর্যাদাও দারুণ, চুরি করে বা চেয়েচিন্তে কিছু নেওয়ার অভ্যাস নেই তার। এমনকী ড্যানির জন্য দুধটাও সে চায়ের দোকান থেকে অর্থের বিনিময়েই নিয়ে থাকে।
সারমেয় কি তবে চা দোকানীর মানবিকতার চোখ খুলে দিল?চা দোকানী অঙ্কিতের পরিবারের প্রতীক্ষায়।