যখন তুমি তোমার কণ্ঠে সুরকে
ছন্দিত চাঞ্চল্যের নর্তকীতে রূপান্তরিক করো,
যখন তোমার কণ্ঠে ঝর্ণাধারা বয়, যখন
তোমার কণ্ঠে কখনও শারদ নীলাকাশ, অজস্র
কাশফুলের শুভ্রতা, বসন্তের পুষ্পল মহিমা
প্রকাশিত, যখন তুমি সুরে সুরে
ফোটাও জ্যোৎস্নার কুসুম, সারা দিনের
খাটুনির শেষে ঘরে-ফেরা আমি ক্লান্তি ভুলে
ভাসি অতুল সুর-সাগরে। তোমার গানের
ঢেউ আমাকে বানিয়ে তোলে এক উৎসব।
তোমার গান আমাকে নিয়ে যায়
খোলা প্রান্তরে, ফসলের
ঢেউ-খেলানো মাঠে, ছায়াচ্ছন্ন
দীঘির ঘাটে, বাড়ির পাছদুয়ার দিয়ে আসা
গ্রামীণ তরুণীর হাসিঝলসিত
বাঁশঝাড়ের নিচে। সাঁঝ-নামা
বিষণ্ন কুয়োতলায় ঝুঁকে-পড়া
চাঁদকে তুমি গানে গানে বানাও তৃষ্ণার্ত পথিক।
তুমি যখন সুরের স্বপ্ন বুনে দাও চারদিকে,
তোমার জল ছল ছল সুরে পা ফেলে
রাধা তার শ্যামের সঙ্গে
মিলনের জন্যে যায় নীল যমুনায়।
তুমি যখন গান গাও সুন্দর অতিথি
এসো এসো ব’লে, তখন কে যেন
আসতে থাকে অনেক দূর থেকে অথবা
যখন যাক না নিশি গানে গানে গুঞ্জরিত হয়
তোমার কণ্ঠস্বরে, তখন
নিশীথ অধিকতর নিশীথ হ’য়ে ওঠে।
তোমার গান নববধূর প্রাণে নাইওরের
ইচ্ছাকে প্রবল পুষ্পিত ক’রে তোলে।