ও মেয়ে তুই বল, এ সংসারে কি পরিচয়,
মাতা ? কন্যা?নাকি জায়া বলা হয় ?
কন্যা বড় আদরের। জায়া?নাকি শুধুই সয়।
ভাত কাপড়ের দাসী যে তুই! সোহাগ শুধুই বিছানায় ।
অন্ধকারের রং যে কালো যায় না তারে চেনা
যতক্ষণ না আঁধারে ঢাকে জীবন তরী খানা ।
জীবন শুরু হল যবে আলোর মালার দোলায়।
নববঁধুর, কোথায় আবাস?তার ঠিকানা কোথায়?
স্বামীর হাসি মুখ, ক্ষণিকেই ভয়াবহ, চেনা দায় ,
ক্ষণিকের রোশ, তুমি চিনলে হয়, নইলে নয় ।
খাস বাদী তুমি। ভালবাসা? খোরপোষ। বদলে?
শরীরী খেলা । ওঠ বস । কথায় কথায় বাক্য চাষ চলে।
সরল, সুবচনী তুমি, শরীরী খেলা আর
সন্তান ধারণে তোমার ঠাঁই স্বামীর আলয়ে।
তোমার মুখে ফুটবে বাঁধানো ফটোর হাসি ,
প্রতিবাদ, করার তোমার নেই অধিকার ।
স্বামীর অবাধ স্বাধীনতা । গাল দেওয়া শ্বশুর কুলকে ।
কিন্তু বঁধূ! বহু দিন শ্বশুর কুলে থাকার পর
আপন করে মিষ্টি কথায় বোঝালেও তাঁকে
শুনতে হবে ওরা তোমার কে ?কুরুক্ষেত্র করলে ?
যখন শ্বশুর কুলের কেউ জড়িয়ে ,বঁধূকে বলে
-হ্যাঁ গো বৌ,তোমার কি একটুও রাগ নেই গো! ভাগ্যিস তুমি বললে আমায়, রাগ হয়ে গেল জল ।
শুনে স্বামীর এমন মুখ যেন সেই শিখিয়ছে কাল ।
ছেলেও বলে বাবার ভাষা, যেন মায়ের নয় সে
মায়ের কোলে চড়ে, মা কেই ধরে মারে যে সে।
অশ্রুসিক্ত নয়ন নয়ন জলে ভাসে গন্ডমালা ।
মায়ের মুখে নেই কো ভাষা, আঁধারে পথ চলা ।
বাপের বাড়ি তো নয়কো তোমার ।
স্বামীর বাড়ি ও নয়। কথায় কথায়
বুঝিয়ে যে দেয় এ ঠাঁই তোমার নয় ।
বৃদ্ধাবাস যে তোমার জায়গা ।
পরান খানি অবহেলে যেদিন চৈত্র মাস
অনাদরে, অবহেলে উঠল যে তাঁর শ্বাস।
রইল না কেউ পাশে যে তাঁর
রইল শুধুই অশ্রু জলের ভার।