সি সি এইচ নেটে প্রথম দিনের কথা
বারো বছর পর আজ আমার হঠাৎ সি সি এইচ নেটে প্রথম দিনের কথা মনে পড়ল।
নেটের ধারে আমি, ননীদা এবং ভবানী দাঁড়িয়ে প্র্যাকটিস লক্ষ করছি। এখন আমি ক্লাবের সিনিয়ার প্লেয়ার। এ বছরের ক্যাপ্টেন। প্রতিবারের মতো এবারও নতুন কয়েকটি ছেলে এসেছে। আমরা তিনজন সিলেকশন কমিটিরও মেম্বার, অবশ্যই নামকা ওয়াস্তে। কেননা ননীদা যা সিলেক্ট করেন আমরা তাতেই সই করে দিই বিনা প্রশ্নে। দ্বিতীয় ডিভিশন ক্লাব, প্লেয়াররা কেউ চাঁদা দেয় না। বছরের বাজেট প্রায় দুহাজার টাকা। কীভাবে যে টাকা আসে একমাত্র ননীদাই তা জানেন।
ম্যাচ খেলার দিন তিনটি ব্যাটের মুখ দেখা যায়। খেলার শেষে ননীদা ব্যাটগুলি কাঠের বাক্সটায় ভরে তালা এঁটে নিজের কাছে চাবি রাখেন। ব্যাট তিনটি দিয়ে অন্তত আশিটা ম্যাচ খেলা হয়েছে। এ বছর নতুন একজোড়া না কিনলেই নয়। ননীদাকে সেকথা বলতেই উনি ঘাড় নেড়ে বলেছিলেন, হবে, হবে। একখানা যা মক্কেল এবার পাকড়েছি। ব্যাট কেন, গ্লাভস, প্যাড, নেট সব হবে।
ক্লাবের প্যাড চার জোড়া। ব্যাটিং গ্লাভস তিন জোড়া। ব্যবহার করতে করতে ঢলঢলে হয়ে গেছে সেগুলো, আঙুল থেকে খুলে পড়ে। ঘামে এবং ময়লায় এখন এমন দুর্গন্ধ ছড়ায় যে উইকেটকিপাররা পর্যন্ত পিছিয়ে বসে। গৌতম জানিয়েছে, নতুন উইকেটকিপিং গ্লাভস না পেলে সে এবছর ম্যাচে চল্লিশটা বাই দেবেই। প্র্যাকটিসের জন্য একটা ব্যাট ঠিক করা আছে। কেউ বলে সেটা কাঁটাল কাঠের কেউ বলে শালের। কেউ সঠিক বলতে পারে না, যেহেতু প্রায় পুরো ব্লেডটাই কালো সুতোর ব্যান্ডেজ ঢাকা। যেটুকু দেখা যায়, সেটার রং দুশো বছরের পুরনো কাগজের মতো। ওজন ছ-সাত পাউন্ড, হ্যান্ডেলটা মচমচ করে। গোটা চারেক বল নেট প্র্যাকটিসের জন্য বরাদ্দ থাকে।
সি সি এইচ সাধারণত একটি বলে দু-তিনটি ম্যাচ খেলে। আমি একবার আপত্তি তুলে বলেছিলাম, ননীদা, বলের ব্যাপারে অন্তত খরচ কমাবার চেষ্টা করবেন না। নতুন বল না হলে সুইং করানো যায় না। তা ছাড়া পুরনো বল নিয়ে খেলতে নামছি। এতে কি ক্লাবের প্রেসটিজ থাকে?
ননীদা পনেরো সেকেন্ড আমার মুখের দিকে তাকিয়ে তারপর বলেছিলেন, আইনে কি বলা আছে, নতুন বল নিয়ে খেলতে হবেই, নয়তো খেলতে দেওয়া হবে না?
তা লেখা নেই। মাথা চুলকে বললাম।
বল সুইং করলেই ম্যাচ জেতা যাবে?
না, তা কেন, কিন্তু সম্ভাবনা তো—
জেতার জন্যই খেলা। পুরনো কি নতুন যে বলেই উদ্দেশ্য সিদ্ধি হবে সেই বলেই খেলবে।
এরপর আর কথা চলে না। ম্যাচে খেলা বলগুলি ননীদা কাঠের বাক্সটায় রেখে দেন। প্র্যাকটিসের বল নরম হয়ে তুবড়ে ফুলে উঠলে বা সেলাই ছিঁড়ে গেলে বাক্স থেকে বার করে বদলি করে দেন।
সাতটি ছেলে নেটে রয়েছে। ননীদা ঘড়ি ধরে এক-একজনকে ব্যাট করাচ্ছেন। অধিকাংশই সেকেন্ড ডিভিশনের তুলনায়ও কাঁচা। বিরক্তিতে ননীদার মুখ কুঁচকে রয়েছে। এক-একজনের দিকে মিনিটখানেক তাকান আর আকাশে চোখ তুলে বিড়বিড় করেন, যত্তসব এসে জোটে আমারই ঘাড়ে। তারপর চেঁচিয়ে ওঠেন, নেক্সটম্যান।
ভবানী এতক্ষণ আমার পাশে দাঁড়িয়ে ফিসফিস করছিল, একটাও পাশ করবে না, দেখে নিস, আজ নিয়ে আঠারোটা ছেলের ট্রায়াল হল। সোবার্স কানহাই না পেলে বুড়োর মন উঠবে না। আরে বাবা এটা কি টেস্ট টিমের ট্রায়াল? থাকব তো আমরা লিগটেবলের তলার দিকে, অত বাছাবাছি করে নেবার দরকার কী! য়্যা, ক্লাবে চিরকাল থাকতে তো আর আসছে না, আমাদের মতো। ডানা গজালেই ফুড়ুক করে উড়ে পালাবে। আমার মতে ভাল প্লেয়ার নেয়াই উচিত নয়। তুই কী বলিস?
ভবানীকে আমি হাড়ে হাড়ে চিনি। কিছু বললেই সেটা ননীদার কানে তুলে দেবে। তাই চুপ করে রইলাম। তাতে ওর কথা বলায় কোনও অসুবিধা হল না। এই ছেলেটাকে দ্যাখ। স্টাইলটা ভালই মনে হচ্ছে। ভবানী খুব মন দিয়ে, নেটে ব্যাট করছে যে ছেলেটি তার দিকে নয়, ননীদাকে লক্ষ করতে লাগল। ননীদা বেশ আগ্রহ ভরেই ছেলেটিকে দেখছেন। দু-একবার মাথা নেড়ে যেন তারিফ করলেন। ভবানী সঙ্গে সঙ্গে লাভূলি বলে চেঁচিয়ে উঠল। ননীদা স্র কোঁচকালেন, ভবানী ওহ্, নো নো বলে উঠল সখেদে। ভবানীর খুব শখ, অন্তত একবার সি সি এইচ-এর ক্যাপ্টেন। হওয়ার। কিন্তু ননীদা বাদ সেধেছেন। দু-দুবার তিনি ভবানীর দাবি নাকচ করেছেন এই বলে, টিমটাকে কি ডোবাতে চাও! ক্যাপ্টেনসি মানেই ট্যাকটিকস অর্থাৎ বুদ্ধির খেল দেখাতে হবে। ওর বুদ্ধির ভাঁড়ে তো মা ভবানী।
ভবানী কিন্তু হাল ছাড়েনি। সমানে ননীদাকে খুশি করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। ভবানী তার অফিসে নিজেকে ক্লাবের ক্যাপ্টেন রূপে পরিচিতি দিয়েছে। তা ছাড়া যে মেয়েটিকে সে বিবাহের প্রস্তাব দিয়েছে, সে ভবানীর অফিসেই চাকরি করে। বিবাহে মেয়েটি এখনও গড়িমসি করছে। তার মতে ভবানীর নাকি যথেষ্ট ব্যক্তিত্ব নেই। তাই মাঠের মাঝে কর্তৃত্ব ও দাপট, মেয়েটিকে দেখাবার ইচ্ছা তার খুবই। আমাকে অনুরোধ করেছে চুপিচুপি, দু-একটা ম্যাচে তুই বোস না, তা হলে আমি ক্যাপ্টেনসির চান্স পাই সিনিয়ারমোস্ট প্লেয়ার হিসেবে। প্লিজ মতি, আমার অনুরোধটা রাখ। নয়তো আমার বিয়ে করা হয়ে উঠবে না। মিনুকে যে ভাবেই হোক ইমপ্রেস করাতেই। হবে।
আমি ওকে কোনও কথা দিইনি। তাইতে ও মনে মনে চটে আছে আমার উপর, আমিও সাবধানে আছি ওর সম্পর্কে। কখন বিপদে ফেলে দেবে, কে জানে। ভবানীর। একমাত্র গুণ—অনেকক্ষণ উইকেটে থাকতে পারে রান না করে। এজন্য টিমে ওকে অবশ্যই রাখতে হয়। ভবানীকে চটাবার ইচ্ছে আমার একদমই নেই, যেহেতু এবছর আমি ক্যাপ্টেন। জানি, ওর শরণাপন্ন হতেই হবে কোনও না কোনও সময়। ঠিক করেই রেখেছি, একটা সহজ ম্যাচের আগে আঙুলে চোট লাগার অজুহাত দিয়ে বসে যাব।
হল না, হল না, বলতে বলতে ননীদা নেটের মধ্যে ঢুকে ছেলেটির হাত থেকে ব্যাটটা ছিনিয়ে নিলেন। বলের লাইন হচ্ছে এই, আর তোমার বাঁ পা থাকছে ওখানে…লাইনে পা আনো, বাঁ কাঁধটা এইভাবে।ননীদা কাল্পনিক বলের লাইনে পা রেখে ব্যাট চালালেন এবং একস্ট্রা কভারে কাল্পনিক বলটির বাউন্ডারি লাইন পার না। হওয়া পর্যন্ত তাকিয়ে রইলেন। এইভাবে ড্রাইভ আর ফলো-থু হবে, মাথা আর কাঁধ আসবে বলের পিচের উপর।
ব্যাটটা ওর হাতে ফিরিয়ে দিয়ে, ননীদা আমার পাশে এলেন। বুঝলে, স্ট্রেট ব্যাট আর ডিফেন্স হল ব্যাটসম্যানশিপের নাইনটি পারসেন্ট। অথচ আজকালকার ছোকরারা এ দুটো রপ্ত না করেই ব্যাট চালায় সোবার্সের মতো।
নেটের মধ্যে থেকে ছেলেটি মুখ ঘুরিয়ে ননীদার দিকে তাকাল একবার। কাঁধটা ঝাঁকিয়ে স্টান্স নিল।
বল করছে তিনটি ছেলে। তার মধ্যে একটি মাঝে মাঝে গুগলি ছাড়ছে। ননীদা বিড়বিড় করল, লেংথে বল ফেলা শিখল না, বাবু এখনি গুগলি দিচ্ছে। কিসসু হবে না। ওর প্রথম বল লেগ স্টাম্পের বাইরে পড়ে অফ ব্রেক করে বেরিয়ে গেল। ব্যাটসম্যান ছেড়ে দিল। ননীদা বলে উঠলেন, ভেরি গুড। ভবানী সঙ্গে সঙ্গে চেঁচিয়ে উঠল, কারেক্ট!
এর পরের ছেলেটির কাছ থেকে এল সোজা একটি হাফ ভলি। ব্যাটসম্যান ফরোয়ার্ড ডিফেন্সিভ খেলে আস্তে বোলারের কাছে বলটা ঠেলে দিল। ননীদা জ্ব কুঁচকে বললেন, এটা লং অন বাউন্ডারিতে পাঠানোর কথা। ভবানী চিৎকার করে উঠল, ড্রাইভ, ড্রাইভ, হিট হার্ড মাই বয়।
ছেলেটি বিরক্ত চোখে আমাদের দিকে তাকাল। পিচে বোধহয় ইটের কুচি আছে, তৃতীয় বলটি হঠাৎ ফণা তোলার মতো সোজা খাড়া হয়ে ছেলেটির কানের পাশ দিয়ে নেট ডিঙিয়ে গেল। মুহূর্তের জন্য ওর মুখ ভয়ে ফ্যাকাশে হল।
হুক করার বল ছিল।
হুক হুক। সপাটে। ডোন্ট বি অ্যাফ্রেড।
পরের বলটি পিচে পড়ার আগেই ছেলেটি লাফিয়ে দু-গজ বেরিয়ে বলটিকে সোজা সত্তর গজ দূরে কাস্টমস টেন্টের উপর ফেলে দিল। ননীদা উত্তেজিত হয়ে
এগিয়ে গিয়ে বললেন, দ্যাখো, বলের লাইন থেকে পা কত দূরে ছিল।
তার আগে দেখুন বলটা কত দূরে গেল। ছেলেটি কাস্টমস টেন্টের দিকে ব্যাটের ডগা তুলে বলল। এতে ছটা রান পাওয়া যাবে। আর রানের জন্যই ব্যাট করা, তাই না?
ননীদার মুখ থমথমে হয়ে গেল। ভবানী অসহায় ভাবে আমার আর ননীদার মুখের দিকে তাকাতে লাগল। হঠাৎ দুর্যোধন, দুর্যোধন বলে ডাকতে ডাকতে ননীদা টেন্টের দিকে রওনা হয়ে গেলেন।
ভবানী বলল, ঠিক জবাব দিয়েছে, কী বলিস?
এড়িয়ে গিয়ে বললাম, আগের থেকে ননীদার সহ্যশক্তি অনেক বেড়ে গেছে। তারপর চেঁচিয়ে ছেলেটিকে বললাম,তোমার নাম কী ভাই?
তন্ময় বোস। এই বলেই তন্ময় লেগব্রেক করা বলটাকে অফ স্টাম্পের উপর থেকেই লেটকাট করল।
সঙ্গে সঙ্গে আমি ননীদাকে দেখার জন্য তাঁবুর দিকে তাকালাম। ফেন্সিংয়ের গেটের কাছে ননীদা কথা বলছেন দুর্যোধনের সঙ্গে, কিন্তু তাকিয়ে আছেন নেটের দিকে। দেখলাম বিরক্তি ভরে মাথাটা নাড়ছেন। আমি জানি মনে মনে এখন উনি কী বলছেন। বারো বছর আগে আমায় বলেছিলেন, ফ্যান্সি শট, এ সব হচ্ছে ফ্যান্সি শট। সিজন শুরু হবার একমাসের মধ্যে খবরদার লেটকাট করবে না।
ন্যাচারাল ক্রিকেটার। ছেলেটার হবে মনে হচ্ছে। ভবানী বিজ্ঞের মতো বলল। অবশ্য যদি গেঁজে না যায়।
কিন্তু এখনই লেটকাট করল! এ সম্পর্কে ননীদা কী বলেন, তোর মনে আছে কি? ভবানীকে উশকাবার জন্য বললাম।
নিশ্চয়ই মনে আছে। ভবানী ভারিক্কি চালে নেটের কাছে গিয়ে বলল, দ্যাখো তন্ময়, লেটকাট ফাট জানুয়ারি মাসের আগে আমাদের ক্লাবে মারা বারণ।
তন্ময়ের মুখে অকৃত্রিম বিস্ময় ফুটে উঠল। মনে হল, হাসবে না রাগবে ঠিক করে উঠতে পারছে না। ভবানী ভারী গলায় এবার বলল, উই ডোন্ট প্লে ফর ফান।
তা না হলে কী জন্য খেলেন? তন্ময় আরও অবাক হয়ে জিজ্ঞাসা করল!
ভবানী ভ্যাবাচাকা খেয়ে আমার দিকে তাকাল। ও আশা করেনি এই রকম একটা প্রশ্নের সম্মুখীন কোনওদিন হতে হবে। আমি কিঞ্চিৎ খুশি হয়েই মুখে বিব্রত ভাব ফোটালামা। ভবানী জবাবের জন্য আমার দিকে তাকিয়ে আছে দেখে বললাম,ননীদা বলেন, আমরা খেলি জেতার জন্য।
নিশ্চয়, আমিও সেই জন্য দেখতে চাই। তন্ময় নেট থেকে বেরিয়ে প্যাড খুলতে খুলতে বলল। কিন্তু মজাটাকে বাদ দিয়ে নয়। মজা না পেলে খেলা আর খেলা থাকে না, খাটুনি হয়ে যায়। আমি তো মজা পাব বলেই ক্রিকেট খেলতে এসেছি। পা কিংবা কাস বলের লাইনে এল কি না, তা নিয়ে আমার মাথাব্যথা নেই। বলটা ব্যাটের ঠিক মাঝখানে লাগার সুখটা পেতে চাই।
ভবানী বলল, সুখ চায় যারা স্বার্থপর। কিন্তু ক্রিকেট টিমগেম। দলের কথা ভেবে খেলতে হয়।
তন্ময় বলল, স্বার্থপর কিছু প্লেয়ার আছে বলেই লোকে খেলা দেখতে আসে। যারা পিটিয়ে খেলে, তাদের খেলাই কি দেখতে ইচ্ছে করে না?
প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে ভবানী ননীদা বোধহয় ডাকছেন এই বলে হঠাৎ তাঁবুর দিকে চলে গেল। আমি জানি, তন্ময়ের কথাগুলি ননীদার কানে তুলে দেবার জন্যই ও গেল।
তন্ময়ের নিকষ কালো রং। ছিপছিপে লম্বা বেতের মতো শরীর, বাড়তি মেদ ও মাংস কোথাও নেই। মাথার চুল হাল আমলের বিবাগীদের মতো ঝাঁকড়া হয়ে ঝুলে পড়েছে ঘাড় পর্যন্ত, জুলপিটাও ইঞ্চি চারেক। ওর বুটটা পুরনো আর তালি-মারা। জামা, প্যান্ট ময়লা। চোখের চাহনিতে ঔদ্ধত্য ও চ্যালেঞ্জ ঝকঝক করছে। ক্যাপ্টেন হিসেবে কেমন একটু আশ্বস্ত বোধ করলাম। এইসব ছেলেরাই হারা ম্যাচ হঠাৎ জিতিয়ে দিতে পারে।
নিজের নাম বলে ওকে জানালাম, এ বছর আমি সি সি এইচ-এর ক্যাপ্টেন। তারপর বললাম, ননীদা বা ভবানীর মনোভাবের সঙ্গে আমার ক্রিকেট ধারণার একদমই মিল নেই। ওঁরা গোঁড়াপন্থী, খেলাটাকে জীবন-মরণ সমস্যা বলে ধরে নেন। কিন্তু খেলাকে আমি ধরি নিজেকে প্রকাশ করার একটা উপায় হিসেবে।
আমার কথা তন্ময় ঠিকমতো বুঝল কি না জানি না, তবে হাসল। আমাকে কি এরা খেলাবে?
খেলানো তো উচিত। ব্যাটসম্যান দু তিনজনের বেশি নেই।
এরা পয়সাকড়ি কিছু দেবে কি?
আমি অবাক হয়ে বললাম, তুমি কি ফুটবল পেয়েছ? কলকাতায় ক্রিকেট প্লেয়ার কজন টাকা পায়, তাও সেকেন্ড ডিভিশন ক্লাবে!
আমাকে বুট কিনতে হবে, জামা-প্যান্টও করাতে হবে।
আমি চুপ করে রইলাম। টেনেটুনে একজোড়া বুটের দাম হয়তো সি সি এইচ দিতে পারবে, কিন্তু তার আগে তন্ময়কে প্রমাণ করতে হবে—সে অপরিহার্য।
আচ্ছা ওই টাকমাথা, বেঁটে কালো লোকটা এই ক্লাবের কে?
ক্রমশ টের পাবে ননীদা এই ক্লাবের কে এবং কতখানি!
তন্ময় পকেট থেকে একটা দোমড়ানো সিগারেট বার করে আমায় বলল, দেশলাই আছে দাদা?