Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

আজ রিলিভড

আপনাকে আজ রিলিভড দেখাচ্ছে। তার মানে কি রাখী এখন আউট অফ ডেঞ্জার?

মৃন্ময়ী মাথা নেড়ে বললেন, না। ডাক্তাররা প্রাণপণ চেষ্টা করছে, চিকিৎসার কোনো ত্রুটি হচ্ছে না সেটা ঠিক। তবে হার্ট আর কিডনিতে কিছু প্রবলেম ডেভেলপ করেছে বলে শুনছি।

এখানকার ডাক্তাররা ভালো বলেই তো জানি।

হ্যাঁ। তাঁরা ভরসা দিচ্ছেন। তুমি বুঝি আজ রাখীকে দেখতে গিয়েছিলে?

হ্যাঁ। দুপুর বেলা। দুপুর বেলা।

ও সময়টায় তো ভিজিটিং আওয়ার্স নয়।

না। বলে-কয়ে ঢুকে গিয়েছিলাম।

বলে-কয়ে? সেটা আবার কীরকম?

ভিজিটিং আওয়ারর্সে ভিড় হয়, অপেক্ষা করতে হয়। অন্য সময়ে ওসব ঝামেলা থাকে না। দারোয়ানকে মিষ্টি কথায় রাজি করানো যায়।

আর ধরা পড়লে?

আমি খুব একটা বীরত্ব দেখাতে যাই না। ভদ্রভাবে, বিনীত গলায় কথা কইলেই দেখি কাজ বেশি হয়।

অন্যসময় হলে নার্সিং হোমের নিয়ম ভাঙার জন্য তোমাকে হয়তো বকতুম। এখন আমার মাথার ঠিক নেই। রাখীকে দেখে তোমার কী মনে হল বলো তো। বাঁচবে মনে হয়?

হ্যাঁ। নিশ্চয়ই বাঁচবে।

শুধু মুখ দেখেই বলছ?

মুখেও তো কিছু ছাপ থাকে।

তার মানে?

শরীরের ভেতরকার জ্বালা-যন্ত্রণা বা অসুখের একটা ইমপ্রেশন মুখে প্রকাশ পায়।

কী জানি বাপু, আমি তো কিছু বুঝতে পারছি না।

একটা কথা জিজ্ঞেস করব?

কী বলো তো।

আপনি কিছু মনে করবেন না তো?

মনে করার মতো কথা নাকি?

একটু সেনসিটিভ হয়তো।

হোক গে, বলো।

রাখীর বাবাকে কি একটা খবর দেওয়া উচিত নয়?

মৃন্ময়ী একটু অবাক হয়ে অলোকের মুখের দিকে চেয়ে রইলেন। তারপর মাথা নেড়ে বললেন, তার দরকার নেই। সে তো আর আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেনি।

কিন্তু এটা তো একটা উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। উনি হয়তো পরে জানতে পেরে দুঃখিত হবেন। হয়তো অভিমান করে আছেন বলে সম্পর্ক রাখেন না। খবর পেলে হয়তো এসে হাজির হবেন।

মৃন্ময়ী একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, তাঁকে আমি ভালোই চিনি। অনেক বছর ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। আমাদের সম্পর্কে কোনো আগ্রহ থাকলে খোঁজখবর তো করত। তাকে খবর দেওয়ার মানেই হয় না।

আপনি যদি রাগ না করেন বলি, আপনি কি কখনো তাঁর খোঁজ করেছেন?

তা করিনি সত্যি। তেতো সম্পর্কের জের টেনে কী হবে বল।

সে তো ঠিক কথাই।

তা ছাড়া সে চলে যাওয়ার পর কোথায় গেছে, কী করছে, এমনকী বেঁচে আছে কি না। তাও তো জানি না। তোমার বোধহয় কথাগুলো শুনতে ভালো লাগছে না।

কথাগুলো ভালো লাগারও তো কথা নয়। নিষ্ঠুর সত্য। আমাদের সবাইকেই জীবনে এরকম কিছু সত্যকে মেনে নিতে হয়। ভালো না লাগলেও। তিনি ঠিক কীরকম মানুষ ছিলেন, ডমিনেটিং?

না না, বরং উলটোটা। মুখচোরা, লাজুক গোছের।

আমিও সেরকমই শুনেছি।

কার কাছে শুনেছ?

লোকের কাছে। রাখীর কাছেও।

মুখচোরা, লাজুক এবং অনেস্ট, ঠিক কথা। কিন্তু দায়িত্বজ্ঞানহীন, আনকেয়ারিং, ক্যালাস এবং অলস। স্বামী-স্ত্রীর ভেতরকার সম্পর্কটাই গড়ে উঠল না তার সঙ্গে আমার।

রাখী কি তাকে মিস করে?

করারই কথা। আফটার অল বাবা তো। তবে আগে যতটা করত ততটা তো আর এখন নয়। ভুলে গেছে। রাখী কি তার বাবার কথা তোমাকে কিছু বলেছে অলোক?

সামান্যই।

লোকে যা বলে তাকে গুরুত্ব দিও না। বেশির ভাগ লোকই স্ক্যাণ্ডাল ভালোবাসে। অ্যাপারেন্টলি রমেন ভট্টাচার্যকে ভালো লোক মনে হলেও আমি তার অন্য রূপটাও জানি।

সেটা বোধহয় খুবই খারাপ?

হ্যাঁ, ভীষণ খারাপ। প্রসঙ্গটা আজ থাক অলোক।

আমি শুধু বলতে চেয়েছিলাম রমেনবাবুকে এ সময়ে একটা খবর দেওয়া বোধহয় দরকার।

খবর দিতে চাইলেও উপায় নেই। সে কোথায় আছে তা জানি না।

আমি চেষ্টা করে দেখতে পারি।

তুমি। তুমি কি করে জানবে?

অলোক একটা বড়ো শ্বাস ছেড়ে বলল, আমি তাঁকে চিনি।

চেনো। মাই গড, তুমি রমেনকে চেনো? কীভাবে?

আপনি তো জানেন যে, রমেন ভট্টাচার্য একসময়ে দারুণ ছাত্র ছিলেন। নকশাল মুভমেন্টে অ্যাক্টিভিস্ট হওয়ায় লেখাপড়া ছাড়তে হয়।

জানি। জানব না কেন?

ফিজিক্স অনার্সে ফার্স্ট ক্লাস পেয়েছিলেন, ডিভোর্সের পর উনি দিল্লি থেকে এম.এস.সি. করেন।

এতদিন পর?

এরপর চাকরি ছেড়ে বিদেশে যান। ভালো জার্মান জানতেন বলে সুবিধে হয়ে যায়। একটু বেশি বয়সে পি.এইচ.ডি. করেন। তারপর গবেষণা। এখন গ্লোবাল ফ্রেণ্ড-এর ইস্ট এশিয়ার ওয়ান অফ দি ডিরেকটরস।

খুব ভালো চাকরি বোধহয়।

খুব। বেশির ভাগ সময়ে ম্যানিলা আর টোকিয়োয় থাকেন।

বিয়ে করেনি?

না। কাজপাগল মানুষ।

আগে খুব কুঁড়ে ছিল।

মনের মতো কাজ পেলে আলস্য থাকে না।

রমেন ভট্টাচার্যের উন্নতির গল্প শুনে আমার কী হবে বল।

কথায় কথায় বলে ফেললাম বটে, ভাবছি না বললেই হত।

না ঠিকই করেছ। এক সময়ে তার ঘর করেছি, সেটা তো আর মুছে ফেলতে পারি না। তবে রাখীর ব্যাপারে তাকে টেনে আনার কোনো দরকার নেই। তুমি তাকে কতটা চেনো?

ভালোই চিনি। ইন ফ্যাক্ট তিনি আমার এখনকার ওয়ার্ক প্ল্যান অ্যাণ্ড প্রোগ্রাম ঠিক করে দিয়েছেন। এখানে যে একটা ন্যাচারাল প্রসপেক্ট আছে সেটা তিনিই প্রথম কোম্পানিকে জানান।

তোমাদের কোম্পানি কি খুব বড়ো?

হাঁ। খুব বড়ো, তবে যতটা বড়ো ততটা বিজ্ঞাপিত নয়। গ্লোবাল ফ্রেণ্ড শুধু লাভ করার জন্য কাজ করে না। তাদের আসল লক্ষ্য পৃথিবীর কল্যাণ। কনসালটেন্সি এবং ওয়েলফেয়ার কাউনসেলিংকে ভিত্তি করেই তাদের যত কর্মকান্ড। কোর গ্রুপে কয়েকজন সায়েন্টিস্ট-এর সঙ্গে কয়েকজন ফিলজফার, ইকনমিস্ট এবং ইকোলজিস্ট যেমন আছেন, তেমনি আছেন কবি লেখক, পেইন্টার এবং সাংবাদিকও। এঁদের সকলের গুরুত্বই কিন্তু সমান। আচ্ছা থাক, এসব কথা হয়তো আপনার এখন বোরিং লাগবে।

না, শুনে ভালোই লাগছে। তবে আমার মনের অবস্থা তো বুঝতেই পারছ, ভালো কথার ওজন বুঝতে সময় লাগবে। শুনলাম তুমি বিশ্বদেববাবুর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলো।

হ্যাঁ।

কেন?

উনি মিউনিসিপ্যালিটির চেয়ারম্যান। অনেক আগেই ওঁর সঙ্গে আমার দেখা করা উচিত ছিল।

কী কথা হল?

কাজের কথা। উনি আজ রাতে আমাকে ডিনারে নেমন্তন্ন করেছেন।

তাই বুঝি?

হ্যাঁ। আমার বিষয়টাতে উনি বেশ ইন্টারেস্ট নিলেন।

ভালো। বিশ্বদেবকে যদি ব্যাপারটা বোঝাতে পার তবে উনি প্রাণপণে তোমাকে সাহায্য করবেন।

সেটা জানি।

লোকটাকে কেমন লাগল?

ভালোই তো?

একটু চুপ করে থেকে মৃন্ময়ী আনমনা হয়ে বলে, বিশ্বদেব খুব ভালো। আমার স্কুলের জন্য যখনই যা করতে বলেছি, করেছে। এ শহরটার অনেক দৈন্য আর অব্যবস্থা দূর করেছে।

হ্যাঁ, ওঁর বেশ সুনাম আছে।

দুর্নামও শুনতে পাবে। নার্সিং হোমটা নিয়ে কম কান্ড হয়েছে? কেউ কেউ তো বলেছিল ওটা নাকি চুরির টাকা। মিউনিসিপ্যালিটির টাকা গাপ করে নার্সিং হোম হয়েছে। অথচ লোকের অজানা নেই যে, বিশ্বদেবের বেশ প্রফিটেবল একটা বিজনেস আছে। আর নার্সিং হোম তো হয়েছে ব্যাংকের লোন নিয়ে। এদেশে কেউ কোনও ভালো লোককেও সহ্য করতে পারে না। যেন ভালোটাই খারাপ।

অলোক একটু হাসল। তারপর বলল, তাহলে কি রমেনদাকে কিছুই জানাব না?

তোমার সঙ্গে বোধহয় রমেনের খুব যোগাযোগ আছে।

বললাম তো, আমাদের প্রোগ্রামের ডাইরেকটিভস উনিই দেন। রোজই কথা হয়।

আমাদের কথা জানতে চায় বোধহয়?

না। উনি কখনো আপনার বা রাখীর কথা জানতে চাননি।

বাঃ বেশ। তাহলে আমাদেরই বা জানানোর কী দায়?

আপনি না চাইলে জানানোর প্রশ্নই নেই।

তবে কথাটা তুললে কেন অলোক? যা চুকেবুকে গেছে তাকে ফের খুঁচিয়ে তোলার কোনো অর্থই নেই। তাই না?

সিচুয়েশনটা সিরিয়াস বলে মনে হয়েছিল, তাই ভেবেছিলাম, ওঁকে জানানোটা বোধহয় প্রয়োজন।

অলোক আর বসল না। অস্পষ্টভাবে আজ আসি বলে উঠে চলে গেল।

অলোক চলে যাওয়ার পর মৃন্ময়ী অনেকক্ষণ পাথরের মত নিস্পন্দ বসে রইলেন। তারপর হঠাৎ সম্বিৎ পেয়ে বিশ্বদেবের মোবাইলে ফোন করলেন।

ফ্রী আছ? কথা বলতে পারবে?

পারব। কী হল, গলা অত উত্তেজিত কেন?

উত্তেজিত নই, উদ্বিগ্ন।

কেন? আমি তো খবর নিয়েছি, রাখী ইজ কামিং অ্যারাউণ্ড।

রাখীর জন্য নয়।

তাহলে?

তুমি তো অলোককে চেনো।

পরিচয় হয়েছে। ব্রাইট, ডেডিকেটেড ছেলে।

দুটো ব্যাপার বলছি। মন দিয়ে শোনো। ওর সঙ্গে রাখীর চেনা আছে। পিকনিক করতে গিয়ে ওদের পরিচয় হয়। দু-একবার বাড়িতে এসেছে। ছেলেটাকে আমার বেশ ভালো লেগেছিল।

হ্যাঁ, ভালো লাগার মতোই তো ছেলে।

কিন্তু তুমি কি জানো যে, রমেন ভট্টাচার্য ওর বস!

সে কী? রমেন তো সরকারি চাকরি করত।

আমরা তো আর তার খোঁজ রাখিনি। রমেন অবশ্য বরাবর ভালো ছাত্র ছিল। নকশাল হয়ে পড়াশুনো ছাড়ে। ডিভোর্সের পর নাকি চাকরি ছেড়ে পড়াশুনো শুরু করে। বিদেশে গিয়ে পি.এইচ.ডি. করেছে। এখন গ্লোবাল ফ্রেণ্ডে বড়ো চাকরি করে।

খুবই অবাক কান্ড। রমেনের বয়স কত হল বলো তো।

আমার সমান। তিপ্পান্ন-চুয়ান্ন।

বুঝলাম। কিন্তু তোমার উদ্বেগের কী আছে?

আছে। অলোক রমেন ভট্টাচার্যকে চেনে, ভাবসাবও আছে। ভাবছি, আমাদের কথা আবার বলে দেয়নি তো।

রমেন এমনিতে চাপা স্বভাবের মানুষ। তবে বলা যায় না।

আজ অলোক খুব ধরেছিল রাখীর ঘটনাটা রমেনকে জানানোর জন্য।

আমি রাজি হইনি।

ঠিকই তো করেছ।

সেটা বুঝতে পারছি না। ধরো রমেন ভট্টাচার্য যদি সত্যিই রাখীর বায়োলজিকাল বাবা হত, তাহলে আমি অত স্ট্রংলি অপোজ করতে পারতাম না। অলোক হয়তো সেটাই দেখতে এসেছিল, আমি আপত্তি করি কিনা। হয়তো ও জানে যে রাখী রমেনের মেয়ে নয়। কার মেয়ে সেটাও হয়তো জানে।

ঘাবড়ে যেও না। শুধু হানচ থেকে ডিডাকশন করা ঠিক নয়। চুপচাপ থাকো।

আমার মনে হচ্ছে, আমি মনের দিক দিয়ে দুর্বল হয়ে পড়ছি। মেয়েটার এই ঘটনা আমাকে এত ভেঙে ফেলেছে।

রাখীর জন্য আমিও তো ভাবছি। কিন্তু মার্ডার অ্যাটেম্পট বলে তুমি শিবদাসকে ক্ষেপিয়ে তুলছ কেন?

আমার খুব মনে হচ্ছে, ওকে কেউ খুন করার চেষ্টা করেছে।

যে খুন করে সে এভাবে জটিল পথে করবে না। সে টপ করে কাজ সারবে। ছুরি মারবে, গুলি করবে বা গলা টিপে মারবে। বিষ খাওয়াতে যাওয়াটা বোকামি।

একটা কথা বলব? কিছু মনে কোরো না।

বলো। ইদানিং জানতে পেরেছি, বাবলু আর রাখী প্রেমে পড়েছে। কী ঘেন্নার কথা বলো।

উড়ো কথা আমারও কানে এসেছে।

তুমি সামলাও। নইলে কী বিচ্ছিরি ব্যাপার হবে বলো তো।

রাখী ভালো হয়ে উঠলে তুমি ওকে অন্যভাবে বোঝানোর চেষ্টা কোরো।

কী বলে বোঝাব? নিজের পাপের কথা কবুল করব?

পাপ কেন হবে! পাপ বলছ কেন? রমেন ভট্টাচার্যের বাবা হওয়ার ক্ষমতা ছিল না, তাই তোমাকে অন্য পন্থায় মা হতে হয়েছে। পাপের কথা উঠছে কেন?

ওভাবে বোলো না। রমেনের বাবা হওয়ার ক্ষমতা তো পরীক্ষা করা হয়নি। তবে সে বাবা হতে চাইত না। ওই একটা ব্যাপারে তার বিরাগ ছিল। অতিরিক্ত বন্ধন সে পছন্দ করত না। এসব তো তুমি জানো।

ক্ষমতা ছিল না বলেই চাইত না। ঠিক আছে, প্রসঙ্গটা থাক। বলছি, এখন মাথা ঠিক রাখো। পরিস্থিতি জটিল করে তুললে মুশকিল হবে। অ্যাণ্ড ডোন্ট ক্রাই মার্ডার।

নইলে রাখী সুইসাইড করতে যাবে কেন বল। এমন তো কিছু ঘটেনি যাতে মরতে হবে।

এখনকার জেনারেশনকে তুমি কতটা বোঝো? তুমি শিক্ষিকা বটে, কিন্তু জেনারেশন গ্যাপ অতিক্রম করা তো সহজ নয়। রাখীর মনের খবর বা অ্যাটিচুড বা বাবলুর সঙ্গে কতটা ইনভলভমেন্ট তাও তো তুমি জানো না।

ওটা ঠিক কথা নয় বিশু। রাখীর সঙ্গে আমি বন্ধুর মতোই মিশি।

আমাদের মধ্যে খোলামেলা কথা হয়। ও আমাকে সব বলে।

তাহলে বাবলুর কথা বলেনি কেন?

হয়তো সময়মতো ঠিকই বলত।

মৃন্ময়ী, মায়েরা ওরকমই ভেবে নেয় ছেলে-মেয়েদের। আর এটাই ভুল করে।

তুমি কি রাখীকে দেখতে গিয়েছিলে?

না। ইন ফ্যাক্ট, অফিস থেকে বেরিয়ে নার্সিং হোম হয়ে বাড়ি ফিরব বলে বেরোতে। যাচ্ছিলাম, ঠিক এ সময়ে তোমার ফোন এল।

রাখী মাঝে মাঝে আমাকে একটা কথা জিজ্ঞেস করে।

কী কথা?

জিজ্ঞেস করে কার সঙ্গে ওর মুখের আদল বেশি মেলে। মা না বাবা।

তুমি কী জবাব দাও?

কী বলার আছে বলো। যার সঙ্গে ওর মুখের আদলের আশ্চর্য মিল তার কথা তো ওকে বলতে পারি না।

একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বিশ্বদেব বলে, সেটাই দুশ্চিন্তার কারণ মৃন্ময়ী। কখনো কি মিলটা রাখী খুঁজে পাবে? মাস ছয়েক আগে একটা মেয়ের বার্থ সার্টিফিকেটের জন্য এসেছিল আমার কাছে। খুব যেন অবাক চোখে বারবার দেখছিল আমার মুখ। একটু অস্বস্তি হয়েছিল আমার।

বলোনি তো।

মনের ভুলও হতে পারে। মনে পাপ আছে বলেই হয়তো অস্বস্তি হচ্ছিল।

মৃন্ময়ী একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে, কী জানি কী হবে। যাও, একবারটি মেয়েটাকে দেখে এসো।

যাচ্ছি মৃন্ময়ী। চিন্তা কোরো না। ওর চিকিৎসার ভার আমার ওপর ছেড়ে দাও। দরকার হলে কলকাতা থেকে স্পেশালিস্ট আনব। রাখীকে বাঁচতেই হবে।

Pages: 1 2 3 4 5

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress