Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » দুইবোন || Samarpita Raha

দুইবোন || Samarpita Raha

বিমলবাবু ও মৃন্ময়ীদেবীর তিন সন্তান।অগাধ সম্পত্তির মালিক।জয়নগরের ছোটখাটো জমিদার বলা যেতে পারে।

বিমলবাবুর সন্তানেরা যখন ছোট ছোট হঠাৎ সাত দিনের জ্বরে পত্নীর জীবনে “বাজে বিদায় সুর”–সংসারের মায়া ত‍্যাগ করে স্বামীর কাঁধে পরিবারের দায়িত্ব দিয়ে মৃন্ময়ীদেবী মারা যান।প্রচুর সম্পত্তির মালিক হয়েও স্ত্রীকে বাঁচাতে পারেননি।

মাধব,মধুপর্ণা ও স্মৃতিপর্ণা হল তিন ভাই বোন।স্মৃতিপর্ণা ওদের তুলনায় অনেকটায় ছোট।
স্মৃতিপর্ণা ভীষণ ছটফটে,ধবধবে ফর্সা, সুশ্রী,পড়াশোনাতেও খুব ভালো।

মধুপর্ণা বড় মেয়ে।ছোটতে মা মারা যাবার জন্য গৃহকর্মে নিপুণা ,শান্ত স্বভাবের ছিল।গায়ের রঙ শ‍্যামলা।

বোন ও দিদির মধ্যে বোন অনেক বেশী সুশ্রী ও সুন্দরী ছিল।
মাধব ছিল দুই বোনের মাঝে।ছোট থেকে রুগ্ন ছিল।

মধুপর্ণা কলেজে সবে ভর্তি হয়েছে—তখন যাদবপুর থেকে পাস করা সিভিল ইঞ্জিনিয়ারের সাথে —–ঘটক মারফৎ সম্বন্ধ দেখে বিবাহ হয়।

ব‍্যাস পড়াশোনা বন্ধ করে স্বামীর সেবায় ব্রতী হয়—-তার একটায় চিন্তা বরকে কি করে ভালো রাখবে—-বর একটা হাঁচি দিলে সাথে সাথেই নানান ঘরোয়া চিকিৎসা শুরু করে দেয়—-একটা ছোট বাচ্চাকে মা যেমন আগলে রাখে—-তেমনি মধুপর্ণা ও বরের দেখাশুনা করত—-অফিস থেকে আসতে দেরী হলে বাড়ির কাজের লোক বটুকদাকে বলত দেখোতো একটু এগিয়ে।

বর শুকনো মুখে বাড়ি ফিরলে বুঝতে পারত—-বরের এই চাকরিতে অসুবিধা হচ্ছে—মধুপর্ণা বরকে বলতো চাকরি ছেড়ে দাও।-এরপর দুজনে মিলে ঠিক করে ব‍্যবসা করবে—-বর সুখেন বলে টাকা কোথায় পাব??

মধুপর্ণা বলে —-সেতো তার বাবার কাছ থেকে প্রচুর টাকা পেয়েছে।আর আমার টাকা মানে তোমার টাকা।
বিমলবাবু শুধু নিজের সন্তানেদের মানুষ করেননি।তাঁর আশ্রয়ে বহু মানুষ ছিলেন।

বিমলবাবু এক অনাথ ছেলেকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে পড়াশোনা শেখান —-ডাক্তার হয় ঐ অনাথ ছেলে—–সেই ডাক্তার প্রতুল বিমলবাবুর ছোট মেয়েকে পড়াতেন—-কথা ছিল লন্ডন থেকে রিসার্চ করে এসে স্মৃতিকণাকে বিয়ে করবে—-এতদিন প্রতুলের যা দায়িত্ব সব বিমলবাবু করেছেন—-তার বদলে ছোট মেয়ে যাতে ডাক্তার হয় সেটা লক্ষ্য রাখতে হবে— ছোট মেয়ের ভবিষ্যৎ অভিভাবক হতে হবে।

হঠাৎ ওদের “বাবা ও ভাই ” কলেরাতে মারা যায়।

মধুপর্ণা জানতে পারে ওর দূর সম্পর্কের দাদা মথুরদা—যিনি মধুপর্ণাদের বাড়িতে মানুষ হয়েছেন—উনিএকটা ব্রিজ করার দায়িত্ব পেয়েছেন—-তাই দাদার কাছে যায় মধুপর্ণা–বরের কাজের কথা বলে—দেড় লাখ টাকা দেয় দাদাকে—-যাতে বরের সমান শেয়ার থাকে—-বর মনে কষ্ট না পায়।

এরপর বর এত কাজে ব‍্যস্ত হয়ে পড়ে —
বৌকে সময় দেয়না—–বাচ্চা যে হচ্ছিলনা —-তার জন্য কোনো ডাক্তার দেখাবে–সেদিকে কোন ভ্রূক্ষেপ ছিলনা—-সেই চিন্তায় অসুস্থ হয়ে পড়ে বৌ —–কোন ডাক্তার রোগ ধরতে পারেনা—–ছোট শালি এসে সংসারের হাল ধরে—জিজু বলে শালিজি তোমার ডাক্তারি পড়া কি হল?
শালি বলে হবে —-আগে দিদি ভালো হোক—জিজু সুন্দরী শালি পেয়ে—কাজকর্ম না করে সারাদিন শালিকে নিয়ে ঘুরে বেড়ায়—-মথুরদাদা এসে মধুপর্ণাকে বলে তোর বরতো কাজে যায়না—
মধুপর্ণা বলে না দাদা আমি অসুস্থতো তাই সময় পাচ্ছেনা—নারে বোন তোর বরকে এতটা বিশ্বাস করা উচিৎ নয়।

তারপর দিদি বোনকে বলে বোন তুই অনেক ছোট।তোর বদনাম হয়ে গেলে—তোর বিয়ে হবেনা—তুই বাড়ি চলে যা।

বোন বাড়ি যায়—দেখে তার ডাক্তার লন্ডনে গিয়ে বিয়ে করেছে।আর ভারতে ফিরবে না।
জিজু তক্কে তক্কে ছিল,শালিকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। আর বলে তোমার দিদির ইচ্ছা তোমাকে বিয়ে করি।এরপর
আমরা তিনজনে বাইরে চলে যাব।

স্মৃতিপর্ণা বলে জিজু তোমার বৌয়ের কোনো অসুখ নেয়।তুমি এক পরিচিত ডাক্তার দেখাচ্ছ কেন??এরপর আমিও অসুস্থ হয়—তারপর আবার বিয়ে করবে!!!
তোমরা পুরুষরা বৌ ছাড়া অন্য নারী জীবনে আসলে—বন্ধু বা বোন ভাবতে
পারোনা!!!
তুমি ভাবলে কি করে জিজু —আমি আমার নিজের দিদির সতীন হবো।
দিদি বলেছে আমায় বিয়ে করতে।আসলে মশায় ঐটায় যে দিদির রোগ।তুমি ছাড়া তার জীবনে কেউ নেয় ।তুমি সময় দাও দিদিকে—ও আমার দিদিকে তোমার যেমন পছন্দ গড়েপিঠে তৈরী করে নাও।

স্মৃতিপর্ণা একটি কাগজে লেখে—দিদি আমি তোর সংসারে হাত বাড়ায়নি।
তুইতো জানিস আমায় ডাক্তার হতেই হবে।জিজুকে আষ্টেপৃষ্ঠে প্রেম দিয়ে বেঁধে রাখিস।বুঝতেই পারছিস সুন্দরী দেখলে প্রেমের খেলা খেলতে চাই।আমি ডাক্তার হয়েই ফিরব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress