দীপাবলি
দীপাবলি বা দেওয়ালি কথার অর্থ প্রদীপের সমষ্টি।ভারত তথা বিশ্বের বহু দেশে এই উৎসব পালন করা হয়। হিন্দু মত অনুসারে আশ্বিন মাসের কৃষ্ণা ত্রয়োদশীর দিন ধনতেরস অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই উৎসবের সূচনা হয়।নানা দেশে দিনটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ।বিভিন্ন রাজ্যে এইদিন কালীপূজা করে প্রদীপ জ্বালিয়ে রাখার রীতি আছে।প্রদীপ জ্বালানোর ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট আছে।কথিত আছে অষ্টাদশ শতাব্দীতে নদীয়ার রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রায় কালীপূজার প্রচলন করেন। তাঁর পৌত্র অমঙ্গল বিতাড়নের উদ্দেশ্যে আতসবাজি পোড়ানো রীতি প্রচলন করেন। আবার দীপাবলির দিনেই শ্রীরামচন্দ্র ১৪ বছর নির্বাসনের পর অযোধ্যায় ফিরে আসেন। রাজ্যবাসীরা তাঁকে ফিরে পেয়ে ঘিয়ের প্রদীপ জ্বালিয়ে রাজধানী সাজিয়ে রাখেন। জৈন মতে ওই দিন মহাবীর মোক্ষ বা নির্বাণ লাভ করলে প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসব হয়।শিখদের ষষ্ঠ গুরু হরগোবিন্দ ও ৫২ জন রাজপুত্র ওইদিন মুক্তি পেয়েছিলেন বলে শিখরাও প্রদীপ জ্বালিয়ে উৎসব পালন করেন। ধনতেরসের দিন অনেকে নতুন বাসন গয়না কিনে থাকেন।অনেক নিয়ম ও সংস্কৃতির ধারাবাহিকতা বজায় রেখে জাঁক জমকে পালিত হয় দীপাবলি উৎসব। বর্তমানে এই উৎসবের ধারা পরিবর্তিত হয়েছে। মাটির প্রদীপের জায়গায় বৈদ্যুতিক আলো এসেছে। এলইডি আলোয় মুড়ে সাজানো হয় বাড়ির চারপাশ।আতশবাজির রোশনাই যুক্ত পটকা জাতীয় দাহ্য বস্তুর ব্যবহার খুবই বিপদজনক যা দীপাবলির রাতে দুর্ঘটনা ঘটায়। উচ্চশব্দযুক্ত পটকার আচমকা আওয়াজে শ্রবণশক্তি হ্রাস পেতে পারে।হৃদপিণ্ডের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।পটকার শব্দ ও ধোঁয়া বায়ুকে দূষিত করে তোলে।সব ভুলে তবু্ও সবাই আতশবাজি পোড়াতে আনন্দে মেতে ওঠে। যে প্রদীপ জ্বালিয়ে দীপাবলির উৎসব প্রচলিত হয় সেই প্রদীপের ব্যবহার আমরা আর করি না। দেশীয় কুটির শিল্পকে বাঁচাতে এই প্রদীপ ব্যবহার প্রয়োজন।এতে কুটির শিল্পির জীবিকা বজায় থাকে।আতশবাজির ব্যবহার বন্ধ হলে পরিবেশ ওই বাজি নির্গত ধোঁয়ার হাত থেকে মুক্তি পাবে।