Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » দিনের শেষে || Samarpita Raha

দিনের শেষে || Samarpita Raha

সুমনের মা আর শুভমের মার খুব বন্ধু।সুমনের বাবা ছুটির দিনে বাড়িতে পরিবারকে সময় দেয়না।
কোথায় কোথায় ঘুরে বেড়ায়!!
কোথায় যায়! কি করে ?
সুমনের মা কাজল কিছুই জানতে পারেনা।শুধু বর বলে-“তোমায় বড় বাড়ি বানিয়ে দিয়েছি–খাবারের কোন অভাব নেই —কোনদিন প্রশ্ন করবে না ??”
সুচরিতা বলে তোর বর ভালো মানুষ-“দেখবি ঠিক ভালো কাজে যায়।”
কাজল বলে -“আমায় বলেনা কেন??

সুচরিতা বলে-” বাদবাকি দিন তোর কাছে থাকে।ঝগড়া করিস না।তুই কোন সুযোগ দিসনা।এরকম রবিবার যে অন‍্যত্র যায়—মাথা ঘামাস না ।”
কাজল সুচরিতাকে বলে -“তোর বর কত ভালো??”
এই শোভনদা এখন কোথায়??”
সুচরিতা বলে-“অফিস ট‍্যুরে।”

সুচরিতা বাড়ি এসে দেখে শোভন বাড়িতে ,-“আরে তুমি??
আর এই তোমার কপালে কাটাটা
কিসের??
গাড়ি কোথায়??
অ্যাক্সিডেন্ট করেছ??
কি হয়েছে বলো??গাড়ি চুরি হয়ে গেছে??”
সুচরিতা একের পর এক প্রশ্ন করে যায়।শোভন নিরুত্তর থাকে।
এই সময় ফোন-“কাজল বলছি।
-“হ‍্যাঁ বল কাজল—তাড়াতাড়ি বল আমি কাজে ব‍্যস্ত আছি।”
-“জানিস তোর শিশিরদা কোথায় যায় প্রতি রবিবার??
আমার মা ফোন করে জানাল দাদাতো বাবা -মাকে দেখেনা—বর সারা সপ্তাহের খাবার কিনে দিয়ে আসে।

ফোন শেষ করে সুচরিতা বরকে জিজ্ঞেস করে -“কাউকে চাপা দিয়েছ??ট‍্যুরে যাওনি ?

কোন উত্তর মেলেনা ।এবার সুচী রাগে এত জোড় চিৎকার করে ওঠে যে বাড়ির দরজা কেঁপে ওঠে।-“পর পর প্রশ্ন করে যাচ্ছি আর তোমার মুখে কোনও উত্তর নেই।

কিছুক্ষণ পর কলিংবেলের আওয়াজ।সুচরিতা দরজা খুলতেই দেখে পুলিশ।
পুলিশ বলে আপনার স্বামী ফিরেছেন??
সুচরিতা বলে কেন ও কি করেছে?
ট‍্যুর থেকে ফিরেছেন ??
অচেনা লোকজনের গলা শুনে শোভন নিজে বেড়িয়ে এসে বলে—আমি শোভন—।
আপনাদের যা জিজ্ঞাসা অকপটে প্রশ্ন করুন।
পুলিশ বলে শোভনকে তা আপনার এত কাটল কি করে??
শোভন বলে আপনাদের ফোন পায় —তখন গাড়ির গতি কমাতে না পেরে গাছের গুঁড়িতে স‍জোরে মারি।
ঐ একটু কেটেছে,বড় কিছু ক্ষতি হয়নি।
পুলিশ বলে শোভনকে —“আপনার অফিস কলিগের অকাল মৃত্যুর কথা বৌ জানে কি”??

শোভন ইশারায় সুচরিতাকে সামনে আসতে বলে।
পুলিশদেরকে শোভন পরিচয় করায়–আমার স্ত্রী সুচরিতা।
সুচরিতা ভ‍্যাবাচ‍্যাকা খেয়ে পুলিশদের নমস্কার জানান।

পুলিশ শোভনকে বলে পারমিতার সাথে আপনার কতদিনের পরিচয়??

আসলে পারমিতাকে ঐ অফিস কলিগ হিসেবে চেনা।

প্রায় আটমাস ধরে শোভনবাবু আপনি নাকি পারমিতা দেবীর সঙ্গে কাজ করছিলেন একটা প্রজেক্টে ??

শোভন বলে হ‍্যাঁ —-ঐ কাজে আমরা বেশ কয়েকবার দুর্গাপুর যাতায়াত করেছি।

শোভন জিজ্ঞেস করে—-“ঘটনাটা কখন ঘটেছে”??

পুলিশ বলে মাঝরাতে।

পারমিতার স্বামী কি বলছেন??

আপনার সাথে নাকি তিনবছর ধরে চক্কর চলছে—-তাই পারমিতার সঙ্গে তার বরের রোজ অশান্তি হতো।
শোভন লালচোখে বলে—বিশ্বাস করুন—আমাদেরতো কাজ ছাড়া কোনো সাংসারিক কথাবার্তা ও হতোনা।
পারমিতা চিঠি লিখে যায়নি??

শোভন বলে আপনাদের একটা কথা বলি—পারমিতার স্বামী হঠাৎ হঠাৎ কাজের ফাঁকে ফোন করত।কিছু রাগারাগির কথা কানে আসত—পারমিতাকে জিজ্ঞেস করেছি “কিছু সমস্যা হয়েছে??”–ও এক গাল হেসে বলত —না শোভনদা আমার বর ঐ জিজ্ঞেস করে কি করছি??

তাছাড়া আমি আগেও যা প্রজেক্টে কাজ করেছি অন‍্যান‍্যদের সাথে।তাদের আপনারা জিজ্ঞেস করতে পারেন—আমি কাজ যখন করি —প্রচণ্ড পরিশ্রম করে তাড়াতাড়ি সেই কাজ শেষ করবার চেষ্টা করি।

শোভন বলে –পারমিতার প্রিয় বান্ধবী হল রীনা।ওর ফোন নম্বর লিখে নিন৯৮৩-১৯৪-৬০-৭৯।আপনারা রীনার সাথে কথা বলতে পারেন।রীনার বাড়ি আমার বাড়ি থেকে দশ মিনিটের রাস্তা।

রীনার বাড়ি যেতেই—-রীনা বলে পুলিশদের—শোভনদার মতো ভালো কাজের মানুষ কম হয়।

তবে???

পারমিতার স্বামী সন্দেহবাতিক।প্রচুর মারধর করে। নিজে চাকুরী করে যা পায়–তা দিয়ে মদ–জুয়া চলে।টাকার ঘাটতি পড়লেই শোভনদাকে পারমিতার সঙ্গে যুক্ত করে— জঘন্য কথা বলে— গালিগালাজ করে।


রীনা বলে পারমিতার পরশু হোয়াটস অ্যাপ করে কি লিখেছেন দেখুন—রীনা আমি মুক্তি চাই।পশুটার অত‍্যাচারে আর পারছিনা।আমাদের প্রজেক্টের কাজ শেষের দিকে।শোভনদাকে নিয়ে এত বাজে কথা বলে ভাবতে পারবিনা।
পুলিশরা পারমিতার স্বামী সুকুমারকে নানান প্রমান জোগাড় করে আটক করে।
সুকুমার নিজেই স্বীকার করেছে—পারমিতাকে ভীষণ ভালোবাসে–তাই অফিসে লোকদের সঙ্গে কাজ করত—সেটা সহ‍্য করতে পারত না—এইজন্য সুকুমার রোজ মারধর করত।তাই পারমিতা গলায় দড়ি দিয়েছে।

হঠাৎ দেখা জীবনের সঙ্গে ভয়ানক তিক্ততার অভিজ্ঞতায় শোভনকে অনেক চুপচাপ করে দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress