দহনকাল
“…কেন “ফালতু” সাহিত্য কর্ম গুলো আমায় পাঠাস’!!
রিদিমার হোয়াটস আপ ম্যাসেজে এই “ফালতু” শব্দটা এমন তীব্রভাবে খোঁচা দিলো তন্ময়কে, মুহূর্তে চোখে জল এসে গেছিলো!
সাহিত্য অনুরাগী তন্ময়কে তার নিত্য নতুন লেখার রসদ জোগানো সহ উৎসাহ, ভুল ত্রুটি, বানান বা বাক্য গঠন যা কিছু শুধরে দেওয়ার অন্ত না থাকা রিদিমা ‘র এমন পরিবর্তন একদিনে আসে নি সেটা বেশ বোঝে তন্ময়।সে বহুবার বুঝিয়েছে, ‘ওরে আমি এড়িয়ে চলি না, তুই তো আমার সেরা বন্ধু’। তবু এটাও সত্য যে তন্ময়ের বোঝা উচিত ছিল বন্ধুত্বের গণ্ডি টপকে যখন দুটি হৃদয় অনেকটা ভরসার খুঁটিতে ভর করছে , ব্যস্ততার মাঝেও পরস্পরকে সময় দেওয়াটা সম্পর্কের সুস্থ স্বার্থের জন্য বেশ প্রয়োজন।
গয়ং গচ্ছ যেমন চলছে চলুক ফলশ্রুতিতে গত ছয় মাস ধরে তৈরি হয়েছে উভয়ের মধ্যে সম্পর্কের ফাটল যা ভীষন ভাবে মনকষ্ট দেয় দুজনকেই । অভিমানের জমা জল উপচে পড়ে ভাসিয়েছে সেরা বন্ধুত্বের সুস্থ সম্পর্কের বাঁধ!
জীবনে প্রেম, ভালোবাসা, বিরহ, ঘেন্না, কষ্ট, সাফল্য যা কিছুর সব অভিজ্ঞতা আছে রিদিমার।অন্যদিকে বয়সেই বেড়েছে কেবল তন্ময়!প্রেম করার সুযোগ বহুবার জীবনে এলেও নির্বিকার থেকেছে। যখন রিদিমা এলো তার জীবনে উৎসাহ অনুপ্রেরণা সহ সত্যি এক ভালো বন্ধু রূপে খামখেয়ালি ভাবুক তন্ময় তখনো কেবল নিজের সাহিত্য কর্ম নিয়ে মশগুল। এগুলো ইচ্ছাকৃত করে এড়ানো নয় বা কাউকে আঘাত করার উদ্দেশ্য তার মোটেও নয় তবু ভালো বন্ধুত্বে প্রেমের ছোঁয়া এসে সবকিছু কেমন ওলটপালট করে দেয়।প্রত্যাশার পারদ বাড়তে থাকে আর ছোটখাটো বিষয়ে মন কষাকষি।”আমি পারবো না রে তন্ময় এমন উপেক্ষা সহ্য করতে, আমি জানি তুই এগুলো জেনেবুঝে করছিস না, আসলে আমার তুই টা এমনই, বড্ড উদাসীন।এমন চললে আমার জীবন, আমার ক্যারিয়ার সব শেষ হয়ে যাবে তাই তুই যেমন আছিস থাক নিজের মতোই আমিও না হয় দূরে সরে থাকি!
বড্ড একা লাগে তন্ময়ের আর ভাবে সত্যিই আমরা মানুষ কতই না স্বার্থপর ! হয়তো এটাই স্বাভাবিক নিয়ম, প্রত্যাশার আবর্তে কালো মেঘ ঘনীভূত হয়। সম্পর্কের রাজপ্রাসাদ নৈলে কঙ্কাল সার নোনা ধরা কাঠামো হয়ে বিদ্রুপ করে , এটা মেনে নিতে পারে না বলেই হাত বাড়ায়, কোনো কিছু নতুন লিখলে পাঠিয়ে দিয়ে রাগের ওঠানামা উপলব্ধি করতে তন্ময়।। এভাবেই একদা গড়ে ওঠা সু সম্পর্কের পাঁচিলে আগাছা জন্মায় আর তন্ময় মনকষ্ট সইতে সইতে অপেক্ষা করে আলো ঝলমল সুদিনের।