দলের নাম ব্ল্যাক ড্রাগন : 05
চঞ্চল তার দুই হাত তুলে বলল, “আমার হাতে কিছু দেখছিস?”
আমি ভালো করে লক্ষ করে বললাম, “হাতে আংটি পরেছিস? দুই হাতে দুইটা?”
চঞ্চল বলল, “দেখে তোর তাই মনে হচ্ছে?”
“হ্যাঁ।”
“ঠিক আছে। কাছে আয়।”
আমি কাছে গেলাম, তখন সে তার দুই হাত দিয়ে আমাকে ধরল আর সাথে। সাথে কী হল কে জানে ভয়ংকর একটা ইলেকট্রিক শক খেয়ে আমি ছিটকে পড়লাম। আমার মাথা ঠুকে গেল দেয়ালে আর আমি ভয়ে আতঙ্কে যন্ত্রণায় গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে উঠলাম।
চঞ্চল আমার অবস্থা দেখে হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেতে থাকে, আর সেটা দেখে আমার রেগে আগুন হয়ে যাবার কথা কিন্তু ইলেকট্রিক শক খেয়ে এতো অবাক হয়েছি যে আমি রাগতেও পারছিলাম না। আমি উঠে বসে মাথায় হাত বুলাতে বুলাতে জিজ্ঞেস করলাম, “কীভাবে করলি?”
“ইনডাকশন কয়েল।”
“সেটা আবার কী?”
“একটা লোহার উপর কয়েল পেঁচিয়ে তৈরি করতে হয়। একটা ব্যাটারি হচ্ছে মাত্র দেড় ভোল্টের, সেটাকে বাড়িয়ে কয়েক হাজার ভোল্ট করে ফেলা যায়।”
আমি শুকনো মুখে বললাম, “সর্বনাশ!”
“সর্বনাশের কিছু নাই! ভোল্টেজ বেশি কিন্তু কারেন্ট খুবই কম। কোনো ক্ষতি হবে না।”
“কী আজব। আমি ইলেকট্রিক শক খাচ্ছি কিন্তু তুই খাচ্ছিস না কেন?”
চঞ্চল হা হা করে হাসল, বলল, “এই দেখ। আমার দুই হাতে দুইটা আংটি আসলে দুইটা ইলেকট্রন্ড। এই দ্যাখ পিছন দিকে তার লাগানো আছে, সেটা গেছে আমার পকেটে। পকেটে ইনডাকশন কয়েলটা রেখেছি। আংটি দুটির ভিতরের দিকে প্লাস্টিক লাগানো, তাই সেটা আমার শরীরকে ছুঁচ্ছে না, তাই আমাকে শক দিচ্ছে না। যখন তোকে ধরছি তোকে শক দিচ্ছে।”
“কী আশ্চর্য!”
“এটা হচ্ছে আমাদের ব্ল্যাক ড্রাগনের একটা অস্ত্র। আমরা এরকম অস্ত্র তৈরি করে সবাই একটা করে নিয়ে ঘুরব। কেউ আমাদেরকে কিছু করতে এলেই আমরা জ্যাপ করে ইলেকট্রিক শক দিয়ে দিব!”
“একটা তৈরি করতে কত খরচ হবে?”
“খুব বেশি না। টেলিভিশন সারিয়ে দিয়েছি তাই আব্বু কিছু টাকা দিয়েছে। দরকার হলে ফ্রিজটা নষ্ট করে রাখব। তখন আরো কিছু টাকা হবে।”
আমি মাথা নাড়ালাম, চঞ্চল ঠিকই বলেছে। এটা হবে একটা অসাধারণ অস্ত্র! ইনডাকশন কয়েলটা কেমন করে তৈরি করে যখন সেটা নিয়ে চঞ্চলের সাথে কথা বলছি তখন টিটন এসে হাজির হল। কী কারণ কে জানে আজকে তার মুখে বিচিত্র একটা হাসি। আমি টিটনকে বললাম, “চঞ্চল কী তৈরি করেছে দেখ!”
টিটন জিনিসটা দেখার জন্যে এগিয়ে গেল, চঞ্চল তার দুই হাত বাড়িয়ে দেয় আর আমি দেখতে পেলাম পরের মুহূর্তে বিশাল একটা ইলেকট্রিক শক খেয়ে টিটন গলা ফাটিয়ে চিৎকার করে ছিটকে পড়েছে।
এবারে আমি আর চঞ্চল হাসতে হাসতে গড়াগড়ি খেতে থাকি। টিটন প্রথমে অবাক হয়ে আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে তারপর রেগে উঠে চিৎকার করে বলল, “আমাকে ইলেকট্রিক শক দিয়ে মেরে ফেলতে চাইছিস? সেটা দেখে আবার দাঁত কেলিয়ে হাসছিস? ঘুষি মেরে তোদের নাক ভেঙে দেব।”
সেটা অবশ্যি খুব অস্বাভাবিক কিছু না, টিটন রেগে গেলে ঘুষি মেরে নাক ভেঙেও দিতে পারে, তাই আমরা হাসি থামিয়ে ফেললাম। বিজ্ঞানের এতো বড় আবিষ্কার নিয়ে টিটন কোনো কৌতূহল দেখাল না, রাগে গজগজ করতে লাগল। চঞ্চল আর আমি তখন তাকে বিষয়টা বোঝালাম আর তখন আস্তে আস্তে তার রাগটা একটু কমে এলো। শেষে তার মুখে আবার আগের সেই বিচিত্র হাসিটা ফুটে ওঠে।
আমি জিজ্ঞেস করলাম, “তুই এরকম করে হাসছিস কেন?”
“কে বলছে আমি হাসছি?” তার মুখের হাসিটা আরো বড় হয়ে যায়, বলে, “আমি মোটেও হাসছি না!”
“এই যে হাসছিস?”
টিটন হাসি হাসি মুখ করে তার শার্টের হাতাটা একটু তুলে বলল, “এই দেখ।”
আমরা অবাক হয়ে দেখলাম, সেখানে বিশাল একটা তাবিজ কালো সুতা দিয়ে বাঁধা। আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, “এটা কীসের তাবিজ?”
টিটন বলল, “ভূতের।”
“ভূতের তাবিজ?”
“শুধু ভূত না–জিন, পরী, প্রেতাত্মা কেউ এখন আর আমার ধারেকাছে আসতে পারবে না। এখন আর আমার মিশকাত মঞ্জিলে যেতে কোনো ভয় করবে না।”
“সত্যি?”
“হ্যাঁ। আমি চাইলে একা একা যেতে পারব।”
চঞ্চল জিজ্ঞেস করল, “তুই কেমন করে জানিস এই তাবিজটা কাজ করে?”
টিটন বলল, “আমি জানি।”
“কেমন করে জানিস?”
টিটন প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তাবিজটা খুলে চঞ্চলের দিকে এগিয়ে দিয়ে বলল, “তুই এটা হাতের মুঠোয় ধরে রাখ, দেখবি আস্তে আস্তে তাবিজটা গরম হয়ে উঠছে।”
চঞ্চল হাতের মুঠোয় ধরে রাখল, টিটন একটু পরে জিজ্ঞেস করল, “গরম হয়েছে? হয়েছে গরম?”
“বুঝতে পারছি না।”
“অবশ্যই বুঝতে পারবি। ধরে রাখ।”
চঞ্চল হাতের মুঠো খুলে বলল, “আসলে একটা থার্মোমিটার ধরে দেখতে হবে গরম হচ্ছে না কী।”
চঞ্চল বলল, “দেখ।”
চঞ্চল বলল, “তুই তাবিজটা রেখে যা। আমি সত্যি সত্যি পরীক্ষা করে দেখব। আমার হাতের তালুর তাপমাত্রা মাপতে হবে, তাবিজের তাপমাত্রা মাপতে হবে। গ্রাফে প্লট করতে হবে।”
টিটন বলল, “ঠিক আছে প্লট কর। কিন্তু সাবধান”
“কী?”
“নাপাক অবস্থায় তাবিজটা ধরবি না।”
চঞ্চল বলল, “ঠিক আছে। ধরব না।”
আমি জিজ্ঞেস করলাম, “তুই কোথায় পেয়েছিস এই তাবিজ?”
টিটন চোখ বড় বড় করে বলল, “তোর লাগবে?”
“না, লাগবে না। আমি শুধু জানতে চাইছি কোথায় পেয়েছিস?”
“রাস্তার ধারে একজন তোক বিক্রি করছে। মহা কামেল মানুষ। সবকিছুর জন্যে তাবিজ আছে। ভূত, জিন থেকে শুরু করে বিয়ে-শাদি, বিছানায় পিশাব, ব্যবসা-বাণিজ্য এমনকি জিপিএ ফাইভের জন্যেও তাবিজ আছে।”
“কত করে দাম?”
“অষ্ট ধাতুর তাবিজটা সবচেয়ে ভালো, কিন্তু সেটার অনেক দাম। আমি সস্তারটা কিনেছি। ছোট বলে আমাকে অর্ধেক দামে দিয়েছে। মাত্র বিশ টাকা!”
আমি আর চঞ্চল একজন আরেকজনের দিকে তাকালাম, শুধু টিটনের পক্ষেই এরকম জিনিস বিশ্বাস করা সম্ভব।
টিটন আমাদেরকে জিজ্ঞেস করল, “আমরা মিশকাত মঞ্জিল কখন যাব?”
“আয় সবাই মিলে ঠিক করি।”
“এখন?”
“উঁহু।” চঞ্চল মাথা নাড়ল, বলল, “এখন না। এইবার গেলে আমরা দেয়ালটা ভেঙে ভিতরে ঢুকব। সেই জন্যে আমাদের সবকিছু নিয়ে রেডি হয়ে যেতে হবে।”
“সবকিছু কী কী নিতে হবে?
“এই মনে কর শাবল, হাতুড়ি, টর্চ লাইট, দড়ি, ম্যাচ, মোমবাতি, ব্যাটারি, তার, ম্যাগনিফাইং গ্লাস, কম্পাস, কাগজ, কলম, মেজারিং টেপ, টুল বক্স, করাত, ক্যামেরা, মোবাইল ফোন–”
টিটন অবাক হয়ে বলল, “এতো কিছু কেন?”
“ভিতরে কী আছে তা তো আমরা জানি না। কখন কোনটা দরকার লাগবে কে বলতে পারে? সেই জন্যে সবকিছু নিয়ে যেতে হবে।”
“ও।” টিটন সবকিছু বুঝে ফেলেছে এরকম ভঙ্গি করে মাথা নাড়ল।
আমি বললাম, “আয় আগে একটা বড় লিস্ট করি তারপর লিস্টটা ভাগাভাগি করে আমরা চারজনকে দিয়ে দিই। সবাই মিলে জিনিসগুলো রেডি করব।”
চঞ্চল মাথা নেড়ে লিস্ট তৈরি করতে লেগে গেল।
প্রথম লিস্টটা হল অনেক বড়। সেই লিস্টের সবকিছু নিতে হলে আমাদের আস্ত একটা ট্রাক লেগে যাবে। তাই প্রথম লিস্টটা কাটছাট করে দ্বিতীয় লিস্টটা করা হল। দেখা গেল তার সবকিছু নিতে হলে একটা টেম্পো লাগবে। তখন সেই লিস্টটা আরো কাটছাট করা হল আর তখন সেটা দেখে মনে হল এবারে সবকিছু আমরা মোটামুটি নিজেরাই আমাদের ব্যাকপেকে করে নিয়ে যেতে পারব। তখন আমরা লিস্টটা ভাগাভাগি করে ঠিক করে নিলাম কে কোনটা জোগাড় করবে। অনু এখনো আসেনি তাই সবচেয়ে কঠিন কঠিন জিনিসগুলো জোগাড় করার দায়িত্বটা দিলাম তার ঘাড়ে।
চঞ্চল তার বৈজ্ঞানিক গবেষণা নিয়ে ব্যস্ত। মিশকাত মঞ্জিলের ভেতরে ঢোকার জন্যে আরো কী কী যন্ত্রপাতি তৈরি করতে হবে, সে সেগুলো তৈরি করছে। তাই আমি আর টিটন বের হলাম অনুর লিস্টটা নিয়ে, সেইটা অনুর কাছে পৌঁছে দেব।
টুনিদের বাসার সামনে দিয়ে যখন মাঠটা পার হচ্ছি তখন দেখতে পেলাম টুনি আর মিথিলা বাসার সামনে নাচ প্র্যাকটিস করছে, তবে এমনিতে মেয়েরা যে রকম করে নাচে সে রকম নাচ না–অন্য রকম নাচ। আমাদের দেখে তারা থেমে গেল। আমি জিজ্ঞেস করলাম, “কী করছিস?”
টুনি বলল, “কিছু না।”
মিথিলা বলল, “আপু আমাকে কারাটে শিখাচ্ছে।”
টিটন চোখ কপালে তুলে বলল, “তুমি কারাটে জান না কি?”
“এই একটু একটু। ঢাকায় শিখতাম।”
আমি বললাম, “আমাদের দেখাবে?”
“এটা তো দেখানোর জিনিস না। কোনো একদিন যদি আমাকে পিটিয়ে তক্তা বানাতে চাও তা হলে হয়তো একটু ব্যবহার করা যাবে।”
আমার মনে পড়ল, প্রথম দিন টিটন টুনিকে পিটিয়ে তক্তা বানিয়ে ফেলবে বলে ভয় দেখিয়েছিল, মনে হচ্ছে টুনি সেটা ভোলেনি।
মিথিলা বলল, “টুনি আপু আসলে ব্ল্যাক–”
টুনি মিথিলাকে কথাটা শেষ করতে দিল না, থামিয়ে দিয়ে বলল, “ব্ল্যাক ড্রাগন।“
“হ্যাঁ, ব্ল্যাক ড্রাগন।” মিথিলা মাথা নাড়ল, “ব্ল্যাক ড্রাগন।”
টুনি বলল, “তোরা কী ঠিক করেছিস আমাদের দলে আসবি কি আসবি না?”
টিটন মুখ শক্ত করে বলল, “এর মাঝে ঠিক করার কিছু নাই। তোরা আমাদের ব্ল্যাক ড্রাগন দলটা হাইজ্যাক করে নেওয়ার চেষ্টা করছিস! তোদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করা দরকার। হাইকোর্টে কেস করা দরকার।”
টুনি বলল, “হাইকোর্টে কেস করতে হবে না। আয় অ্য একটা কাজ করি।”
“কী কাজ?”
“ব্ল্যাক ড্রাগন নামটা আমার আর মিথিলার। তোরা চারজন ব্ল্যাক ড্রাগনের বাংলা নামটা নে।”
আমি রেগে গিয়ে বললাম, “কী বললি? বাংলা নাম?”
“হ্যাঁ।” টুনি হাসি হাসি মুখ করে বলল, “ব্ল্যাক এর বাংলা হচ্ছে কালা আর ড্রাগনের বাংলা যেন কী হবে?”
টিটনটা গাধার মতো বলল, “গুইসাপ।”
আমি ধমক দিয়ে বললাম, “মোটেও গুইসাপ না।কিন্তু ততক্ষণে দেরি হয়ে গেছে। মিথিলা হাততালি দিয়ে বলতে লাগল, “কালা গুইসাপ! কালা গুইসাপ!!”
টুনি হি হি করে হাসতে হাসতে বলল, “তোদের জন্যে একেবারে ঠিক নাম। তোরা চারজন গুইসাপের মতো মুখ ভোঁতা করে মাটির সাথে গড়িয়ে গড়িয়ে আস্তে আস্তে যাবি। আর আমরা যাব ড্রাগনের মতো।”
আমি রেগে গিয়ে বললাম, “খবরদার, আমাদের কালা গুইসাপ বলবি না।”
টুনি বলল, “আমরা তো বলতে চাই না। আমরা তো সবাই মিলেই ব্ল্যাক ড্রাগন করতে চাই। তোরাই তো রাজি হচ্ছিস না।”
টিটন বলল, “কক্ষনো রাজি হব না।”
আমিও বললাম, “কক্ষনো রাজি হব না।”
টুনি বলল, “ঠিক আছে তা হলে।”
মিথিলা বলল, “কালা গুইসাপ! কালা গুইসাপ!!”
চোখ দিয়ে আগুন বের করে কাউকে পুড়িয়ে মারা সম্ভব হলে মিথিলা তখনই পুড়ে ছাই হয়ে যেতো।
অনুদের বাসায় পৌঁছানোর পরেও আমি আর টিটন রাগে ফোঁস ফোঁস করতে লাগলাম। অনুর আম্মু যখন আমাদের খাবার জন্যে কিছু ভালো ভালো নাস্তা দিলেন সেগুলো খেয়ে শেষ পর্যন্ত আমাদের মেজাজটা একটু ঠাণ্ডা হল। পৃথিবীর সব মেয়েরা যদি অনুর আম্মুর মতো এরকম ভালো হত তা হলেই তো পৃথিবীতে কোনো সমস্যা থাকত না। কেউ কেউ মিথিলার মতো, টুনির মতো বের হয়ে যায় সে জন্যেই তো এতো সমস্যা!
রাত্রিবেলা বাসায় আমরা খেতে বসেছি তখন মিথিলা আল্লুকে জিজ্ঞেস করল, “আব্বু ড্রাগন বাংলা কী?”
আব্বু বললেন, “ড্রাগন তো একটা কাল্পনিক প্রাণী, তার বাংলা নাম আছে। বলে মনে হয় না।”
“গুইসাপ ড্রাগনের বাংলা হয় না?”
“করলেই হয়। তবে গুইসাপ হচ্ছে এক ধরনের সরীসৃপ। রেপটাইল।” আব্বু খেতে খেতে জিজ্ঞেস করলেন, “কেন? হঠাৎ করে ড্রাগনের দরকার হল কেন?”
মিথিলা মুচকি মুচকি শয়তানী হাসি দিতে দিতে বলল, “এমনি।”
আব্বু তখন খেতে খেতে আম্মুর সাথে কথা বলতে লাগলেন, জিনিসপত্রের দাম নিয়ে কথা বললেন, রাজনীতি নিয়ে কথা বললেন, দুর্নীতি নিয়ে কথা বললেন, অসুখ-বিসুখ নিয়ে কথা বললেন, শুনতে শুনতে একটু পরেই আমি অন্যমনস্ক হয়ে গেলাম। হঠাৎ করে”মিশকাত মঞ্জিল” কথাটা শুনে আমি সোজা হয়ে বসি। শুনলাম, আবু বলছেন, “মিশকাত মঞ্জিল নিয়ে অনেক দিন ধরে মামলা চলছিল মনে আছে? মামলার রায় হয়েছে।”
আমি জিজ্ঞেস করলাম, “মিশকাত মঞ্জিল নিয়ে কে মামলা করেছিল?”
“মিশকাত খানের নাতি-পুতিরা।”
“এখন কী হবে?”
“যারা মামলায় জিতেছে, তারা এসে দখল নেবে।”
“দখল নিয়ে কী করবে?”
“শুনেছি পুরোটা ভেঙে ফেলবে। ভেঙে সেখানে মার্কেট বানাবে।”
“কখন ভাঙবে?”
“সেটা তো জানি না।”
মিথিলা মুচকি মুচকি শয়তানী হাসি দিতে দিতে জিজ্ঞেস করল, “ভাইয়া, তুমি মিশকাত মঞ্জিল নিয়ে এতো কিছু জানতে চাও কেন?” “আমার ইচ্ছা। তোর কী?”
“আমার কিছু না। কিন্তু এই রকম একটা ভূতের বাড়ি সেই জন্যে জিজ্ঞেস করছি।”
“ভূতের বাড়ি হয়েছে তো কী হয়েছে?”
“না কিছু হয় নাই।” মিথিলা আবার মুচকি মুচকি শয়তানী হাসি হাসতে থাকে। আমার কেন জানি সন্দেহ হয় যে মিথিলা মনে হয় জেনে গেছে আমরা মিশকাত মঞ্জিলে ঢুকব। কিন্তু কেমন করে জানল?
আমি বুঝতে পারলাম আমাদের খুব তাড়াতাড়ি মিশকাত মঞ্জিলের অভিযানটা করে ফেলতে হবে তা না হলে বিশাল ঝামেলা হয়ে যাবে। অ্যাডভেঞ্চার করার আগেই যদি মিশকাত মঞ্জিলটা ভেঙে ফেলে তখন কী হবে?