ত্রিধারা -9
উপমার পরিচয় কি? সেটাই তো বললে না।
সে বিশাল ব্যাপার। ইটচুনা রাজবাড়ীর বংশধর।
সত্যি? একদম।বেশ অবাক লাগছে তাই না।
হ্যাঁ। ও তোমাকে পছন্দ করল?
হ্যাঁ। ও নিজেই আমাকে প্রস্তাব দেয়। আমি ছেড়ে
দিই কি করে বল।আমি প্রথম থেকেই তৈরী ছিলাম।সুযোগ যদি আসে তবে আবার বিয়ে করব।
তাই কি ম্যাট্রিমনি সাইটে তুমি ঘুরে বেড়াতে। বারবার সকলের সাথে আলাপ করে খোঁজ নিয়ে
দেখতে যদি প্রস্তাব আসে?হঠাৎ পরিস্থিতি ঘুরে গেল কিভাবে?
মন চাইল। মনে প্রেমের বাতাস লাগল। ভাবলাম পাখি যদি আবার বিয়ে করতে পারে,নতুন করে
ঘর সংসার গড়ে আনন্দ ফূর্তি করতে পারে তবে
আমিই বা কেন সন্ন্যাসী হয়ে নিরামিষ থাকি বাকি
জীবন। আমিও নতুন করে স্বপ্ন সাজিয়ে নিয়ে স্বপ্ন তরী ভাসিয়ে দিলাম নতুন
পথের দিশারি হলাম।আমি আর উপমা প্রথমে
শান্তিনিকেতনে গেলাম। চারপাশ ঘুরেফিরে দেখলাম। আমি ও উপমা হোটেলে খেয়ে চলে
গেলাম ইটাচুনা।
ইটাচুনার সুন্দর পরিবেশে হারিয়ে গেলাম দুজনেই
নায়ক নায়িকার মতো।ওর পরিজনের সাথে আমার আলাপ হল।ওনারাও আমাকে নিজের মত
করে গ্রহণ করে নিল।আমি সংসারের হাল ধরার জন্য তখন মানসিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করে
নিচ্ছি।আমিও উপমার মোহে মুগ্ধ হয়ে পড়লাম
উপমাও আমার প্রতি আকৃষ্ট হলে দুজনেই প্রথম
ইটাচুনায় ঘনিষ্ট হলাম।
তবে সেদিনই বিয়ে সেরে বাড়ি ফিরলে?
না।সেদিন তো ওদের বাড়ির সাথে আমার পরিচয়
হয়েছিল মাত্র।ওরাও আমার বাড়িতে আসে।আমার বাড়িতে কথাবার্তা পাকা করে ঠিক হয়
রেজিস্ট্রি ম্যারেজ হবে কলকাতায় সল্টলেকে
ঘরভাড়া করে।
ওরাই রেজিস্ট্রি ম্যারেজের সমস্ত ব্যবস্থা করেছিল। দারুণ তত্ত্ব দিয়েছিল। প্রচুর লোক খাইয়েছিল।সে কি এক রাজকীয় ব্যাপার। আমি
খুবই খুশি হয়েছিলাম।
আলাপ হওয়ার কত বছর পরে তোমারা বিয়ে
করলে?
প্রায় আড়াই বছর ঘোরাঘুরি করি একসাথে। দুজনের চেনা জানা পরিচয় হল এইভাবে। তারপরে দুই পরিবারের সিদ্ধান্ত আর বিয়ের মজলিসে আমরা দুজনে।
বাহ্ তবে দুজনে আবার উত্তর পাড়ার ঘরে
ফুলশয্যা যাপন করে সংসারে ফিরলে রেডিমেড
মেয়ে নিয়ে?
তুমি না বৌদি বলতেও পারো।হা হা হা।
রেডিমেড ছেলে আমি যে ওকে দিলাম।
উপমাকে ওর স্বামী ডিভোর্স
দিয়েছিল কেন?
রূপম জানায় অফিস কলিগ এক সুন্দরী মহিলার প্রেমে পড়েছিল ওর স্বামী। তাই শিক্ষিকা হয়ে সহ্য
করতে পারেনি।উপমা এতো ভালো তাকেও আমি
ধরে রাখতে পারলাম না।
কেন তার সাথে আবার কি এমন হল তোমার?
আমরা এক সাথে থাকতাম না।সোম থেকে শুক্র স্কুল করে মা ও মেয়ে আমার কাছে আসত।শনি
রবি এই দুদিন মাত্র কাছে পেতাম।আমি ওই দুটো
দিন ওকে খুশি করতে পারতাম না।আমার ভালো
লাগত না।ইচ্ছে করত কিন্তু মন সায় দিত না।সেটা
ও কেমন করে টের পায়।ওর মধ্যেও অনীহা জাগে। একদিন নিজেই আমার কাছে ডিভোর্সের
প্রস্তাব নিয়ে আসে।আমি বাধা দিই নি।মাত্র দেড়
বছর এইভাবে কাটাবার পর আবার আমাদের
সংসার ছারখার হয়ে গেল।