ত্রিধারা -3
এর পর রূপমের কোন খবর নেই।দুই একবার
ওর কথা মনে হলেও ওকে ফোন করিনি এইভেবে যে অতি কৌতুহল দেখানো হয়ে যাবে।বিকেল মরে
গিয়ে সন্ধ্যা নাবছে।আমাকে এবার সন্ধ্যা দিতে যেতে হবে ভাবছি এমন সময় রূপমের ফোন এলো।রূপম বলল,কিগো বৌদি কেমন আছো?
আমি তো ভালো আছি।তোমাদের খবর বল।
মেয়েটির সাথে দেখা হয়।
মাঝে মাঝে হয়।
সে থাকে কোথায়?
আমাদের পাড়ার মেয়ে।ওদের চিনি আমি।
মেয়েটা ভালো বলেই জানি।
আচ্ছা তবে ওরা আইনত ডিভোর্স করে নি কেন?
হা হা হা।একেই বলে প্রেমের বিয়ে গো বৌদি। প্রেম
পালিয়ে গেছে মনের জানলা দিয়ে।
তুমিও তো দুজনকে ডিভোর্স দিয়েছো।নিশ্চয়ই আইনত।
হ্যাঁ।
ওদের খোরপোশ দিতে হয় না তোমার?
হ্যাঁ কিছুটা ।বিশেষ কিছু নয়।
ছেলে নীলু তো তোমার কাছে থাকে?
হ্যাঁ ও আমার কাছেই থাকে।
দেখ ছেলে কি বলে। ও কি মানবে এসব।ও কতটা
কিভাবে নেবে,ওর সাথে খোলামেলা আলোচনা
করে নিও। ওতো ক্লাশ নাইন হয়ে গেল। তাই না।
হ্যাঁ গো বৌদি ছেলেটা বেশ বড় হয়ে গেছে।
এখনও তো অনেক দূর এগোই নি। বলতে পারো সবে শুরু ।একদিন তোমার বাড়ি যাব।গিয়ে খুলেমেলে সব তোমাকে বলবো।
তোমার সেই ছোট্ট প্রিন্স আজ নেদারল্যান্ডস।
ভাবতে পারছি না কি করে এতো বড় হয়ে গেল।
মনে পড়ে সেই দুই বছর বয়সে যখন ১০৪° জ্বরে দাঁতে দাঁত লেগে গিয়েছিল।ওদিকে রান্নাঘরে
কয়লার উনানে ভাত টগবগ করে ফুটছে।বাড়িতে
ঢুকেই বললাম কি বৌদি প্রিন্স কোথায়। দাদার
ডাকে ছুটে গেলাম ঘরে কিছু জানার আগেই দাদা
বলল একটা রিকশা ডেকে দাও যেতে হবে এখুনি।
হ্যাঁ নীচে হৈচৈ শুনে তোমার মা নেবে এসে বললেন আগে ছেলের মাথায় জল ঢালো।তারপর
ছেলের ভেজা শরীর কোন রকম তোয়ালে জড়িয়ে গেলাম ডাক্তারের কাছে। বাড়ি এসে দেখলাম তোমার মা ভাতের ফ্যান ঝরিয়ে রেখেছেন।আর উনান তো নিবে ছাই।আবার সেই
ছাই পরিষ্কার করে নতুন করে আঁচ ধরিয়ে রান্না
সারলাম।কি দিন গেছে সেসব।তোমাদের মত
পরিবারে এসে অনেক সাহায্য আমি পেয়েছি।
তোমাদের প্রতি কৃতজ্ঞ আমি।
এভাবে কেন বলছো বৌদি। আজ অনেক রাত
হয়ে গেল রাখি।
ঠিক আছে এসো সময় করে একদিন।জমিয়ে বসে আড্ডায় তোমার নতুন খবর সব শুনবো।