Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

ত্রিধারা -16

কি সাংঘাতিক পরিস্থিতি।
তোমাদের গাড়িতে তবে ধাক্কা লাগেনি?
লাগেনি বৌদি।আমাদের ড্রাইভার সাবধানে
গাড়ি সহ সকলকে বাঁচাতে গিয়েও আমাদের
গাড়িটা কিভাবে পাক খেয়ে পাহারের ঘাঁজে ঢুকে গেছিল চারদিক অন্ধকার দেখলাম।
নিশ্চয়ই ধাক্কা লেগেছিল।তবে পাক খেল কিভাবে?
ঠিক বুঝতে পারিনি। কিছুক্ষন পর আর্ত-চিৎকার ভয়ার্ত আর্তনাদ কানে এলো ……
গাড়ির কাঁচ,নামিয়ে মুখ বাড়িয়ে দেখলাম আপাদমস্তক কাঁচের ধুলোয় ছোট্ট ছেলেকে বুকে চেপে ক্রমাগত চিৎকার করছে তার বাবা। ছেলেটার মাথা থেকে কাঁচের টুকরো ঝর্নার মতো ঝরলো বাবার কোলের ওপর।
ওদের দেখে ভয়ে আমার দম বন্ধ হয়ে আসছিল।ভাবছিলাম কিভাবে তাদের বের করবে? মৃত্যুভয় আমি সেই মুহূর্তে পাখির চোখেমুখে প্রত্যক্ষ করলাম।
আমরা বেঁচে আছি কিনা সেটাইতো ক্ষণিকের জন্য ভুলে গেছিলাম। সামনের গাড়িটাতে দেখলাম গাড়ির ড্রাইভার ভাই আটকে গেছে ওর সিটে। গাড়িতে একটাও কাঁচ আস্ত নেই। ড্রাইভারের দিকে সামনের ও তার পরের দরজা প্যানেল সমেত ভেঙে ভেতরে ঢুকে গিয়ে ড্রাইভার ভাই আটকে পড়েছে।।
আমাদের গাড়িটাও পাহাড়ের খাঁজে ঢুকে গেছে এমন ভাবে বেরোবো তার কোনো উপায় ছিল না। রাস্তায় লোকজন ঘিরে ফেলেছে ট্রাকের চালককে। তারাই এসে দরজা ভেঙে একে একে সবাইকে বের করে আমাদের।
রাস্তা জুড়ে যানজট দেখেছিলাম সেদিন। ট্রাকটা কে সাইড করা হলো। উত্তেজিত জনতা ছেলেটাকে বাইরে এনে দেখল কোথায় লেগেছে? ওদিকে বাকিরা ট্রাকের চালককে ধরে মারতে যায়। ছেলে ও ছেলের বাবা জানালার ধারে বসায় আঘাত তাদেরই লাগে।আঘাত লাগে তাদের ড্রাইভার ভাইটির। শুধু তার সাদা টি শার্টের কলারে একফোঁটা রক্ত লেগে থাকতে দেখেছিলাম।
যেহারে কাঁচের বৃষ্টি দেখলাম আমি ভেবেছিলাম ছেলেটা বোধ হয় বেঁচে নেই।
ঈশ্বরের কৃপায় সেদিন আমরা এক্কেবারে অক্ষত অবস্থায় ছিলাম।
এখন বল তোমরা ফিরলে কি করে?
সেদিন কোনক্রমে ঋষিকেশ এসেছিলাম। সেখান থেকেই আমাদের ফিরবার গাড়ির ব্যবস্থা করলাম।আমাদের দেব দর্শনে যাওয়া হল না। সেখান থেকে আমরা হরিদ্বারের উদ্দ্যেশ্যে রওনা দিলাম। আধাঘণ্টার মধ্যে হরিদ্বার পৌঁছে গাড়ি ছেড়ে দিলাম।এবার ব্যাগপত্তর গুছিয়ে যে
যার,বাড়ি।
পরদিন ছিল কালীপুজো। বাড়ির কাছেই এক ক্লাবে কালী পুজো হয়। আমার স্ত্রী পাখি ঠিক করেছে কালীপুজোর উপোস করবো। সারাদিন নির্জলা থেকে রাতে পুজো দিয়ে তারপর খাবো। সেই মতো ব্যবস্থা করলাম।
পুজোতে ঘর বাড়ি অন্ধকারে রেখে পাখির ঘুরতে যাবার ইচ্ছে একেবারেই ছিলোনা। তাই হয়তো ভগবান শিবশম্ভু অ্যাক্সিডেন্টের অছিলায় তোমাদের ঘরেই ফেরৎ পাঠালেন। ভেবে দেখলাম এতো বড় ঘটনা ঘটলো কিন্তু কোনো ইনজুরি নেই কারো? এটাই তো অবিশ্বাস্য আমার কাছে
জানো বৌদি সেই থেকে আমারও ধারণা এটা ভগবান তুঙ্গনাথের ই খেলা।পাখি যেহেতু এক মনে ওনাকে দেখতে যেতে চায়নি। বাড়িতে থেকেই কালি মন্দিরে পুজো ও বাড়ি ঘর দুয়ারে আলোর দীপ জ্বালতে চেয়েছিল।তাই ভগবান আমাদের বাড়ি পাঠিয়ে দিলেন।
আসলে ভগবানকে একমনে না ডাকতে পারলে ভগবান ভক্তের ডাকে সাড়া দেন না। সেদিন তোমাদের তাই দুর্ঘটনায় পড়তে হয়েছিল।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *