Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।

ত্রিধারা -15

রূপম আমার আর উপমার কুকুরের গল্প শুনে
বলল জানি ওরা প্রভুভক্ত হয়।মানুষ আপনজনকে ঠকাতে পারে কিন্তু কুকুর মনিবকে কখনো ঠকায় না।
কুকুরের৷ মালিকের বাড়ি পাহারা দেওয়া থেকে শুরু করে মালিকের সুরক্ষায় নিজের জীবন বিপন্ন করতেও পিছপা হয় না। দুই প্রজাতির অমোঘ
ভালোবাসা।এবার পাখির সাথে কোথায় কোথায় বেড়াতে গেছিলে বল।
হ্যাঁ হানিমুনে প্রথমবার গেছিলাম হরিদ্বার। বিয়ের আগেই আমি ছোট্ট করে ঘুরে এসেছিলাম মুসৌরি।
বিয়ের পরেই সামনেই তখন কালি পুজোর ছুটি।
মনে মনে প্ল্যান করে রেখেছিলাম তুঙ্গনাথ যাব
দুজনে কালি পুজোর ছুটিতে। ছোটি দিওয়ালী, দিওয়ালী, গোবর্ধন পূজা, ভাইদুজ আর রবিবার নিয়ে পাক্কা পাঁচদিন সেখানে থাকব দুজনে।দারুণ
মজায় হানিমুন কাটাব।
এদিকে সেই প্ল্যান বাড়িতে বলতেই আমার
স্ত্রী বেঁকে বসল। কারণ পুরো কালি পুজোতে বাইরে থাকতে হবে শুনেই তার যাবার ইচ্ছে মরে গেল। কারণ সবাই বাড়িতে আলো জ্বালাবে, প্রদীপ দিয়ে সাজাবে, বাজি পোড়াবে আর এসব
থেকে সে আমার সাথে হানিমুনে কাটাবে সেটা তার একদম ভাল লাগলো না। কালিপুজোয় তার যাবার ইচ্ছে নেই বলে দিল আমাকে।
কিন্তু কে শোনে কার কথা? বৌকে ট্যাঁকে বেঁধে বেড়িয়ে পড়লাম।
বাড়ির প্রবীণরা শুনেই বলল ওখানকার একটা স্থানীয় প্রবাদ আছে সেটা হলো বিয়ের একবছরের মধ্যে নতুন দম্পতিক্র হরিদ্বারের গঙ্গায় স্নান করতে নেই । একটা অঘটন ঘটতে পারে।
আমার মা পই পই করে এক বছর জলে নামতে
বারণ করে দিয়েছিলেন। আমি ও আমার বউ জলে নামব না ঠিক করলাম।পরদিন
সকলে আমরা কালি পুজোর আগেরদিন তৈরি হলাম তুঙ্গনাথ দর্শনে।
ভোরবেলায় একটি ঝকঝকে গাড়ি এসে দাঁড়ালো বাড়ির দরজায়। ঘড়ির কাঁটা ছয়টায়। মনে হল গাড়িটা নতুন। আমরা মোট চারজন গাড়িতে উঠে সেঁধিয়ে গেলাম। অক্টোবর মাস বলে ভোরবেলায় বেশ ঠান্ডা লাগছিল । ভোরবেলা জ্যাকেট পরা থাকলেও হাতের আঙ্গুল আর নাকের ডগা ঠান্ডায় অবশ হয়ে যাচ্ছিল । তাই গাড়ির কাঁচ তুলে রেখেছিলাম। এইসময় গরম থাকে না।
সেই ভোর ছটা থেকে একটানা গাড়ি চলতে থাকে কুয়াশা মাখা ভোরের চাদর ছিঁড়ে সূর্যদেবের ওঠার সাথ।আমারা ঋষিকেশ বদ্রিনাথ হাইওয়ের ওপর দিয়ে চলেছি তৃতীয় কেদার দর্শনে। পাহাড়ের বাঁকে বাঁকে সবুজ রঙে রোদের মাখামাখি মনকে ভালোই আরাম দিচ্ছে। পাহাড়ি রাস্তা ডাঁয়ে বাঁয়ে বাঁক নিয়ে উঠে গেছে। বাঁপাশে পাহাড় আর ডানদিকে গভীর খাদ। অনেক নিচে দিয়ে গঙ্গা বয়ে চলেছে। শীতকালে জল পান্নার মতো সবুজ। আমরা দেবপ্রয়াগের পথে। বেশ কিছুটা যাবার পর একটা বাঁক এলো, সামনে সরকারি বাস, তারপর একটা ফোর হুইলার আর তারপরেই আমরা। সঙ্গের ড্রাইভারটি ইয়ং, বেশ হাসিখুশি। গাড়িতে গান বাজছে।ভোরবেলা উঠেছি বলে ঝিমুনি আসছিল। পাখি মানে আমার প্রথমা তখন
জানালা দিয়ে বাইরে দেখতে ব্যস্ত। বাকি দুজন অফিসের ফালতু আলোচনায় ব্যস্ত। আর আমি পাশে বসে পাখিকে পর্যবেক্ষণ করতে ব্যস্ত।
সামনের বাসটা একটু থামার পর চলতে শুরু করলো। সামনের গাড়ি এবং আমাদের গাড়িও একটু থেমে তাকে অনুসরণ করলো। হঠাৎই দেখি সামনে এক দৈত্যাকার ট্রাক আমাদেরকেই লক্ষ করে ওপর থেকে ধেয়ে আসছে। এবং মুহূর্তের মধ্যেই এক বিকট আওয়াজে সব অন্ধকার! আমি শুধু দেখলাম ট্রাকের মুখ আমাদের সামনের গাড়ির জানালার দিকে।

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *