তাহলে সে কে?
সুনীতার অফিস থেকে ফিরতে আজও দেরি হয়ে গেল। হঠাৎ কালবৈশাখী ঝরে ট্রেন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায়, বাসে ব্রেক জার্নি করে আসতে আসতে প্রায় সাড়ে দশটা বেজে গেছে। রাস্তাঘাট শুনসান। এমনিতে সুনীতা একটু ভিতু প্রকৃতির।বাড়ি যাওয়ার পথে কাঁচা রাস্তায় পার হয়ে যেতে দূরে খালপাড়ে একটা শ্মশান। সুনীতা ঐ জায়গাটায় ভয় পায় বেশ। লোডশেডিং। ঝোপে ঝাড়ে, ডোবায়, ঝিঁঝিঁ আর ব্যাঙের ডাক। জোনাকির মিটমিট আলো রাতের নির্জনতা আরও যেন তীব্র করে।সুনীতা মোবাইলে মা’কে জানায় একটু যেন এগিয়ে এসে তাকে সঙ্গে করে নিয়ে যায়।
বাস থেকে নেমে মা তখনো আসেনি দেখে সুনীতা হাঁটতে শুরু করে। মাঝে মাঝে ঝোড়ো হাওয়ার পরশে সুনীতার ভয় দ্বীগুন হয়। দূরে শ্মশানে কারা যেন দাঁড়িয়ে। টর্চ, লণ্ঠন হাতে। সুনীতা ভয় উর্ধ্বশ্বাসে দৌড়াতে শুরু করে। ঠিক সেইসময় সুনীতা ডাক শুনে চমকে দাঁড়ায়। মোবাইলের টর্চে দেখে পাড়ার নোটন দা। একটু স্বস্তি পায়, বলে তুমি এখানে? কী ভয় লাগছিল , তোমাকে দেখে শান্তি।
নোটন’দা বললো, তোর হাঁটা দেখেই বুঝতে পেরেছ। চল এগিয়ে দিচ্ছি। বাড়ির কাছাকাছি আসতেই নোটন’দা বলে, তুই যা আমি একটু কাজ সেরে পরে আসছি। বললো বেশ।
বাড়ির পথ এগোতেই দেখে মা’ টর্চ নিয়ে আসছে। সুনীতা বললো, এত দেরি করলে, একা রাস্তায় ভাগ্গিস নোটনদা ছিল, আমায় পৌঁছে দিয়ে গেল।
মা বললেন নোটন! তাকে তো শ্মশানে সৎকার করতে এইমাত্র নিয়ে যাওয়া হলো। মোটরসাইকেল অ্যাক্সিডেন্টে স্পট ডেথ্।
সে কি , তাহলে সে কে ? পাড়া থমথমে। মা’কে সব বললো সুনীতা।
ভয়ে সুনীতার হাত পা কাঁপছে। মা’কে জড়িয়ে ধরেছে। পাড়ার সবাই অবাক! বলছে এ কী করে সম্ভব! তাহলে নোটনের আত্মা কী ওখানে ঘুরছে ?ভয়ে সুনীতা দু’চোখ এক করতে পারেনি সেদিন। ট্রমা মত হয়ে গেছিল। একা একা থাকা, অফিসে যাওয়া অনেক দিন করতে পারেনি সুনীতা।