স্রুরা অবজারভেশন টাওয়ারে গিয়েছিল
স্রুরা অবজারভেশন টাওয়ারে গিয়েছিল মন ভালো করবার জন্যে। কোনো একটি বিচিত্র কারণে তার মন ভালো নেই। কেন জানি অস্বস্তি লাগছে। এ রকম যখন হয়, তখন অবজারভেশন টাওয়ারে গিয়ে বসলে ভালো লাগে। বাইরের অদ্ভুত দৃশ্য মনকে অভিভূত করে দেয়।
এ গ্রহের চাঁদ তিনটি। তিনটি চাঁদের জ্যোৎস্না এমন অদ্ভুত লাগে দেখতে। কেমন একটি গোলাপি আলো প্রাণহীন গ্রহটিকে রাঙিয়ে তোলে।
স্রুরা একটি চেয়ার টেনে অবজারভেশন টাওয়ারের স্বচ্ছ কাচের পর্দার কাছে বসল।
স্রুরা!
স্রুরা চমকে দেখে নীম। সে কখন যে চুপি চুপি এসেছে, বুঝতেই পারা যায় নি। নীম বলল, বুঝতে পারছি, কোনো একটি কারণে তোমার মন ভালো নেই।
তা ঠিক।
কোনো একটা সমস্যা নিয়ে ভাবতে বসে যাও। দেখবে ভালো লাগছে।
নীম, মন খারাপ হলে আমরা সমস্যা নিয়ে ভাবতে পারি না।
তোমাদের যতই দেখছি, ততই অবাক হচ্ছি। মন খারাপ হলে কী কর তোমরা?
আমি কিছুই করি না। অনেকে গান-টান শোনে, কবিতা পড়ে।
কবিতা কী?
ছন্দ মিলিয়ে লেখা এক ধরনের ভবিপূর্ণ বিষয়।
উদাহরণ দিতে পার?
স্রুরা খানিক ভেবে বলল,
হে অনন্ত নক্ষত্রবীথি
বিদায়।
আজ রাতে তোমাকে বিদায়।
নীম অবাক হয়ে বলল, এ তো নিতান্তই যুক্তিহীন কথা। রাতে বা দিনে। কখনোই নক্ষত্রবীথিকে বিদায় দেয়া যাবে না। তারা থাকবেই।
স্রুরা কিছু বলল না। নীম বলল, তোমার যুক্তি এবং অযুক্তি–এ দুয়ের অদ্ভুত মিশ্রণ।
আমাদের তোমার ভালো লাগছে না, নীম?
নীম খানিকক্ষণ চুপ করে থেকে বলল, লাগছে। তোমাদের ভালো লাগছে। তোমরা অনেক কিছুই জান, আবার অনেক কিছুই জান না। তোমাদের পাশে পাশে থেকে আমরা অনেক কিছুই শিখব। হয়তোবা নিওলিথি রহস্যও ভেদ করে ফেলব।
স্রুরা বলল, তুমি কি কখনো ঐ ঘরগুলির ভেতর গিয়েছিলে?
নীম সে কথার জবাব না দিয়ে বলল, আমি তোমাদের কবিতা শিখতে চাই। তুমি কি দয়া করে নক্ষত্রবীথির কবিতাটি আবার বলবে?