Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ডালু দা || Abhijit Chatterjee

ডালু দা || Abhijit Chatterjee

আমাদের পাড়ায় থাকে। নাম প্রসেনজিৎ ডাক নাম ছোটন। তবে ডালু কেন ? দাদা বৌদিকে ডার্লিং বলে। বৌদি অজ পাড়াগাঁয়ের। তার ওপর আদৌ লেখাপড়া শেখেনি। তাই ডার্লিং উচ্চারণ করতে পারে না। তাই বলে ডালু। সেই ছোটন দা হয়ে গেল ডালু দা। ওনাদের সন্তানাদি নেই। বেশ আছেন। দাদা মাঝে মাঝেই গান ধরেন। আর ঐ গান শুনে প্রথমেই পাড়ার নেড়ি গুলো ল্যাজ গুটিয়ে আশ্রয় খোঁজে। বুঝতেই পারছেন আমাদের হাল। তা এ হেন ডালু দাদার ইচ্ছে হলো সিনেমার নায়ক হবার। আমাদের বললো। আমরা অবাক। বয়স তো প্রায় পঞ্চাশ ছুঁইছুঁই। আমাদের গ্রুপে ছিল মনোজ। মহা ধারিবাজ। সে ডালু দাকে বলল – তুমি কি কোন যোগাযোগ পেয়েছ , না নিজেই লড়ে যাচ্ছো ? দাদা বলল সে না’কি লাইন পেয়েছে। মনোজ চুপ। কেটে গেল এক মাস । একদিন দেখি ডালু দা একটা মস্ত বড় দই-এর হাঁড়ি নিয়ে বাড়ি ফিরছে। আমাদের কৌতুহল চরমে। মনোজ ছুটে গিয়ে ধরে আনলো ডালুকে। তারপর বাপীকে কানে কানে কি যেন বললো। বাপী প্রায় দৌড়ে গিয়ে চা এনে দাদাকে দিল , আমরাও পেলাম। শুরু হলো আড্ডা। হাতে ঝোলানো হাঁড়িটা দাদা রকে রেখে দিল। হটাৎ দেখি মনোজ ধাঁ। দূরে মোড়ের মাথাতে দেখতে পাচ্ছি মনোজ কিছু একটা নিয়ে তৎপর। কিছু পরেই মনোজ একটা বড় হাঁড়ি নিয়ে হাজির, ঠিক যেমনটা ডালু দা নিয়ে যাচ্ছে। ব্যাস ডালু দার হাঁড়ি বদলে গেল। ঘন্টা খানেক পরে ডালু দা বাড়িতে গেল। মনোজকে বললাম কি করলো সে। মনোজ গম্ভীর হয়ে বললো আমরা না কি একটু পরেই জানতে পারবো। সত্যি তাই অল্প কিছু পরেই বৌদি তুমুল খিস্তি করছে শুনে ডালুর বাড়ির কাছে জমায়েত হলাম। শুনি বৌদির বাপের বাড়ির লোকেদের আসার কথা। দুপুরে খাবে। তাই দই আনতে দাদাকে বলেছিল। দাদা না কি দই না এনে এক হাঁড়ি চূণ কিনে এনেছে। সবটাই মনোজের কারসাজি। আরেক দিনের কথা। দাদা খাসির মাংস কিনে বাড়িতে এসেছে। আমার মগজে একটু দুষ্টু বুদ্ধি খেলল। রান্নাঘরের পাশে উঁকি দিয়ে দেখি বৌদি মাংসতে হলুদ তেল লঙ্কা গুড়ো মেখে ম্যারিনেট করছে। তমালকে ডেকে বললাম কি করতে হবে। কিছুক্ষন পরেই তমাল আর বাপী দাদা দাদা বলে ডালুর বাড়িতে ঢুকলো। আমরা জানি দাদা বাড়িতে নেই। বৌদি রান্নাঘর থেকে এসে ওদের সঙ্গে দু চারটে কথা বলতে শুরু করল। তারপরেই বোম ফাটালো। নিজেদের মধ্যে কথা বলছে। দেশে বাজে লোক ভর্তি হয়ে গেছে। যেমন বাজারের ভুতো সে খাসির বদলে নেড়ি কুকুরের মাংস বিক্রি করে যার জন্য পাড়া থেকে ককুর হাওয়া হচ্ছে। সত্যিটা হলো আগে পাড়াতে গোটা ছয়েক কুকুর ছিল এখন মাত্র একটা আছে।
বৌদি শুনে ‘থ’। আমতা আমতা করে বলল তাহলে ডালু দা আজ যে মাংসটা এনেছে ভুতোর কাছ থেকে সেইটা কি …… . । শুনেই তমাল নাক চাপা দিয়ে ওয়াক তুলতে আরাম্ভ করলো। বৌদি এক দৌড়ে রান্নাঘরে। বাপী পেছন পেছন গিয়ে মাংস দেখে নাকে হাত রেখে দরদ দেখিয়ে বলল সে মাংসটা রাস্তার ডাস্টবিনে ফেলে আসছে। বৌদি খুশি। তারপর …… মাংস চলে এলো আমার কাছে। রাতে ক্লাবে একটা ছোটখাটো ফিস্ট হয়ে গেল। ডালু দা’র আর একটা মহাগুণ ছিল। তুমুল খিস্তি মারতো , একদম কাঁচা। একদিন দু হাতে ব্যাগ ঝুলিয়ে বাজার করে ফিরছে। তমাল চুপিচুপি পেছন থেকে পায়ে নখ দিয়ে টিপে ধরে কুকুরের মত ডেকে উঠলো। ডালু দা ভয় পেয়ে , যেন কুকুরে কামড়েছে হাঁউমাঁউ করে ব্যাগ ফেলে পেছনে কুকুরটা দেখতে গিয়ে দেখে তমাল দাঁত বের করে হাসছে । শুরু হলো ডালুর গালাগাল দেওয়া , বাজারের ব্যাগের দিকে হুঁশ নেই। সামনের দিক থেকে দুটো ব্যাগই হাওয়া। আর তারপরেই বৌদির চিৎকার শুনে পাড়া থেকে নেড়ি আর কাকগুলো উধাও।
আজ এইটুকু থাক , পরে ফের ডালু দার গল্প বলবো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *