ঠিকানা
আজ আল্টিমেটলি “না” শোনার পর অবসাদে ভুগছি, একটা স্থায়ী বাসস্থান সরকারের অনুমোদনে, ঘরহারা দূর্বল মানুষগুলোর জন্য চাই ঠিকানা। রাঘব সুরি গ্রাম পঞ্চায়েতের পয়সাওয়ালা মাতব্বর আমারই মামা, বারো বিঘা জমি বৃদ্ধা আশ্রমের জন্য দান করবে বলেও হাত টেনে নিল সব মাতুলই কি শকুনি হয়! মা’র সাথে পারিবারিক কথা কাটাকাটিতে নিগৃহীত হল এই অসহায় লোকগুলো। কোথায় যাব এদের নিয়ে? বাসা খালি করার জন্য বাড়িওয়ালা তিনমাসের নোটিস দিয়েছে…. যদি কিছু চমৎকার হ’ত!
“দীপ জ্বেলে যাই” চ্যারিটেবল ট্রাস্টের সাথে যুক্ত হই ১৯৯০তে সজলদার হাত ধরে। বাইস থেকে আজ চুয়াত্তর জন সদস্য একটা ভাড়া বাসাতে, “দীপ জ্বলে যাই ” এর আস্থানা।
বিরাজ দত্ত (বড় ব্যাবসায়ী) বয়স বাহাত্তর, বারবার জিজ্ঞেস করছে, দীপু আমি কি তোমাকে কোনভাবে সাহায্য করতে পারি?..যার স্থান আজ পাঁচ বছর ধরে রিহেবিলিটেশনের সেন্টার থেকে সোজা এই আশ্রমে একমাত্র সন্তানের কৃতিত্বই। আজও বিরাজ দত্তের মনে মানুষের জন্য ভালবাসা বিরাজ করে সব হারিয়েও।
মিসেস ডেকার ছেলে ; মা কে পূজো দেখানোর নাম করে মাঝরাস্তায় চায়ের দোকানে বসিয়ে হাওয়া। পরের দিন পুলিশ খবর নিয়ে জেনেছে ছেলে বিদেশে মেয়ের কাছে চলে গেছে এবং ওখানেই শেটেল্ড হওয়ার কথা ভাবছে। আজ মিসেস ডেকা ডিমেনশিয়ার পেসেন্ট, নিথর চোখ শুধু অপেক্ষায়। মালতি মাসি ক্যান্সার পেসেন্ট কেমো চলছে, আর ভাবতে পারছি না…
রিক,ববিতা, নাজিরা,সচীন পাগলের মতো দৌড়াদৌড়ি করছে একটা শেল্টার চাইই…
হঠাৎ দেখি চারপাশ আলো করে আলাউদ্দিনের জীন সামনে দাঁড়িয়ে বলল, কি চাই জাঁহাপনা…
সময় নষ্ট না করে একটা রাজপ্রাসাদ চেয়ে ফেললাম।
কপালে সজোরে আঘাত, প্রদীপটা ছুঁড়লো বোধহয় জীন!
চমকে জেগে উঠে দেখি আশ্রমের ডিজিটাল ঘড়ির রক্তচক্ষু, বলছে সবে রাত বারোটা।ভোর হতে অনেক দেরি!