Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ট্রেকার্স || Bani Basu » Page 21

ট্রেকার্স || Bani Basu

ঘষা কাচের মতো ভোর। একটা নীলচে কুয়াশা ছড়িয়ে রয়েছে চারদিকে। অদ্ভুত শান্ত, নির্জন ভোর। শীত-শীত করছে। দিয়া উঠে বসল। সে, সে-ই একমাত্র গাঢ় ঘুম ঘুমিয়েছে। শুয়েছিল মাঝখানে। একদিকে শুকতারা, আর এক দিকে বাবাই। এত চমৎকার ঘুম সে বহুদিন ঘুমোয়নি। বাবাইকে ঠেলল, বাবাই ভোরের দিকে ঘুমিয়েছিল, জাগল না। তখন সে শুকতারাকে ঠেলল।

শুকতারা চোখ কচলে উঠে বসল, “হিসি, পটি নাকি?”

“আহ, চেঁচাস না,” দিয়া বিরক্ত হয়ে বলল।

দু’জনে ছোট ঝোলা ব্যাগ নিয়ে বাইরে বেরিয়ে এল। চোখে পড়ল ঘষা কাচের মতো সেই ভোর, নীলচে কুয়াশা, ঘাসের ওপর টুলটুলে শিশির, পাখিদের ঘুমভাঙা গলার আধো-আধো ডাক। কাঠবেড়ালি ছুটে গিয়ে একটা শিরীষ গাছে উঠে পড়ল তুরতুর করে। বোঁ-বোঁ করে একটা গাঢ় হলুদ বোলতা ঘুরছে। সোঁদা-সোঁদা গন্ধ উঠছে মাটি থেকে।

দিয়া বলল, “পৃথিবী একদিন এমনই ছিল। দ্যাখ শুক, আমরা পৃথিবীর শৈশব দেখছি।”

“হল কী তোর ?” শুকতারা আড়চোখে চেয়ে বলল।

ধুপধাপ শব্দ। দু’জনেই চমকে ওঠে, বাঁদর নাকি?

বাবাই ছুটতে-ছুটতে এসে উপস্থিত হল, “আমাকে ডাকিসনি?”

“কতবার ঠেললাম তুই চোখ চাইলিই না,” দিয়া বলল।

“কী করব বল, সারারাত ঘুমোইনি। এরকম অদ্ভুত পরিস্থিতিতে ঘুমোনার অভ্যেস আছে নাকি?”

“আমি তো খুব ঘুমোলাম,” দিয়া চোখেমুখে একটা আরামের ভঙ্গি করল।

“সে তুই মাঝখানে ছিলি বলে।”

বাবাই আরও কিছু বলতে গিয়ে সামলে নিল।

তিনজনে উপর দিকে উঠতে লাগল জলের সন্ধানে।

ওদের প্রাতঃকৃত্যে রেখে আমরা ফিরে আসি তাঁবুর ভেতরে। জেগে গিয়েছে উজ্জ্বল, রূপ। খালি আরিয়ান অঘোরে ঘুমোচ্ছে।

“এই কি ট্রেকিং-এর নমুনা?” আড়চোখে আরিয়ানের বাঁকাচোরা শরীরটার দিকে চেয়ে উজ্জ্বল বলল, “মুণ্ডা বস্তিতে গিয়ে নাচা-গানা-পিনা।”

“ওর মুখোশটা খুলে দিতে চাইছিলুম,” রূপ বলল। “এসব জায়গায় এসে আদিবাসীদের নাচ-গান দেখতে অনেকেই যায়। আমরাই হয়তো যেতুম, অন্য সময়ে। সেটা কিছু না, পাল্লায় পড়ে এরকম মহুয়া গেলাও হয়ে যেতে পারে। কিন্তু ও একা-একা চুপিচুপি গেল কেন? আমাদের সঙ্গে যাচ্ছে, একেবারে আমাদের মতোই হাসিঠাট্টা করছে, যেন…”

উজ্জ্বল ঠোঁটে আঙুল রাখল, রূপ থেমে গেল। উজ্জ্বলের ইশারায় তাঁবু থেকে বেরিয়ে এল।

বাইরে ভোরের গায়ে একটু রোদ-রোদ রং লেগেছে।

“ছেমরিগুলো গেল কোথায়?” উজ্জ্বল এদিক ওদিক চাইতে লাগল, “ও কিন্তু ভাল অ্যাক্টিং করতে পারে রূপ। মহুয়া গিলে ঘুমোচ্ছে বলে মনে করিস না ও সেফ, সামনে কোনও কথা বলবি না।”

রূপ বলল, “তোকে বলতে চাইছিলুম ও অ্যাক্টিংটা ভালই পারে, আই নো দ্যাট। আমি অনেকদিন ধরে চিনি, ফান্টু একটা। ও যে এখানে আমাদের সঙ্গে এল, এইভাবে কথাবার্তা বলছে, যেন আমাদেরই একজন, এসব কাউকে ইমপ্রেস করার জন্যে।”

“ইজ হি রিয়্যালি ইন লাভ?”

রূপ সঙ্গে সঙ্গে উত্তর দিল না। একটু পরে দাঁতে নখ কাটতে কাটতে বলল, “তুই আমাকে বলতে পারিস উজ্জ্বল, হোয়াট দ্যাট ওয়র্ড রিয়্যালি মিন্স!”

উজ্জ্বল একটু যেন ভাবুক। বলল, “সে যাই হোক, উদ্দেশ্য যদি ভাল না হয় তো?”

“উদ্দেশ্য ভাল নয় মানে?”

“মানেটা তুমি জানো না, ভড়কি দিচ্ছ উজ্জ্বল মিত্তিরকে?”

“না, না, বিয়ে-টিয়ের কথা বলছিস?”

“অতদূর না ভাবলেও অনেস্টলি মেলামেশা কর। হ্যাভ সাম রেসপেক্ট ফর হার। সিম্পলি পজেসিভ না হয়ে প্রোটেকটিভ হও। প্রধান হচ্ছে, ভাল লাগাটা কমন গ্রাউন্ডস-এর উপর কিনা।”

“দু’জনকে এক রকম হতে হবে বলছিস? এ নিউজিল্যান্ডকে সাপোর্ট করে বলে, ওর শ্রীলঙ্কাকে সাপোর্ট করা চলবে না?”

“ভাবালি তুই,” উজ্জ্বল হেসে ফেলল।

এই সময়ে উপর থেকে শুকতারাকে পাথর টপকে-টপকে আসতে দেখল ওরা।

মুখে জল চিকচিক করছে, চুল খোলা, ফ্রেশ দেখাচ্ছে। শর্টস আর ঢোল্লা টপ পরে, শুকতারাকে এই শিরীষ-মহুল বনে বিদেশি গাছের মতো দেখায় যেন। ওদের দেখেই শুকতারা গলা সপ্তমে চড়িয়ে একখানা ইংরিজি পপ গান ধরল।

উজ্জ্বল বলল, “প্রাণে পুলক জেগেছে রে, কী ভাগ্য অযোধ্যা পাহাড়ের!”

নেমে এল শুকতারা। বলল, “তোদের স্পটটা চমৎকার, ট্রেকিং দুর্ধর্ষ হবে। খিচুড়িটাও ব্যাপক বানাচ্ছিস। কিন্তু হিসু-পটি পেলে মাইল-মাইল পাহাড় ভেঙে ঊধ্বর্শ্বাসে দৌড়ানো শুকতারার পোষাবে না।”

রূপ বলল, “তা তুমি কি ভেবেছিলে, এখানে তোমার জন্যে ওয়েস্টার্ন স্টাইল ডব্লু সি কোলে নিয়ে বসে আছে প্রকৃতি?”

“আজ্ঞে না, কিন্তু নিজেরা যেখানে-সেখানে ছেড়ে দিতে পারো বলে আমাদের অসুবিধে বুঝবে না? অন্য দুই মক্কেলও আসছে তাদের জিজ্ঞেস কর। আমি কিন্তু আজকেই নেবে যাচ্ছি” গলা নামিয়ে বলল। “মোটামুটি স্পটটা আমার জানা হয়ে গেল, আই’ল ওয়েট ফর ইউ।”

“না না শুক, তা হয় না। দিস ইজ আনএক্সপেক্টেড, এভরিবডি ইজ নিডেড।”

“আরে বাবা, আই নো। কিন্তু ফিরে গিয়েও আমি তোদের যথেষ্ট সাহায্য করতে পারব।”

শুকতারা সাঁ করে টেন্টের মধ্যে ঢুকে গেল।

রূপ বলল, “চেষ্টা করে লাভ নেই। ওকে আটকাতে পারবে না।”

“বাট দিস ইজ বিট্রেয়াল।”

“আজ্ঞে না, বিট্রেয়াল নয়। আরিয়ানকে বলে দিবি শুকের শরীর খারাপ, পেট খারাপ তাই নেমে গিয়েছে। ইট ইজ পার্টলি ট্রু,” শুকতারা টেন্ট থেকে বেরিয়ে এসে বলল। তারপর আবার ঢুকে গেল। মিনিট পাঁচেকের মধ্যে নিজের ব্যাকপ্যাক, ঝোলাঝুলি সব গুছিয়ে পোশাক পরে তৈরি।

“এই যদি তোর মনে ছিল তো এলি কেন,” রূপ বলে ফেলল।

“ইউ জাস্ট ট্রাস্ট মি ইয়ার,” শুকতারা দু’জনের দিকে তাকাল। তারপর তরতর করে এগিয়ে গেল। নামতে-নামতে বাঁকের মুখে অদৃশ্য। দু’জনে আপাদমস্তক হতাশ ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে আছে, এমন সময়ে কলকল শোনা গেল। বাবাই আগে, দিয়া পিছনে আসছে। তাদের চান সারা। জামাকাপড় বদলানো হয়ে গিয়েছে, দু’জনেই ট্র্যাক্‌স পরেছে। মুখ খুশিতে উজ্জ্বল।

বাবাই উচ্ছ্বসিতভাবে বলল, “বাঁকের মুখে ঝরনাটা কী সুন্দর, কী সুন্দর। বলে বোঝাতে পারব না, ফিরতে ইচ্ছে করছিল না।”

“যাক, বাবা-মায়ের দুলালির মুখে হাসি ফুটেছে,” রূপরাজ বলল।

দিয়া হাত ছড়িয়ে বলল, “এত বড় আকাশটা আমাদের, জঙ্গলটা আমাদের, ঝরনাটা, সব, স—ব আমাদের। না, আমার একার।”

বাবাই হঠাৎ টেন্টে ঢুকে চেঁচাতে লাগল, “আরিয়ান, এই আরিয়ান ওঠো। আমরা সবাই কিন্তু তৈরি হয়ে গিয়েছি।

তড়াক করে উঠে বসল আরিয়ান, “এক কাপ কালো কফি দিতে পারো হানি, ওহ সরি।”

“বাইরে বেরিয়ে আয়। আকাশের তলায় বসে খাব আমরা। খোলা আকাশ দেখেছিস কখনও?”

একটু পরে ওদের খেয়াল হল শুক কোথায় গেল?

উজ্জ্বল বলল, “ওর খুব পেট খারাপ হয়েছে, মাইল-মাইল চড়াই ভেঙে অনবরত যাওয়া-আসা নাকি অসম্ভব, তাই ওকে আপাতত ওষুধটষুধ দিয়ে নীচে পাঠিয়ে দিয়েছি।”

আরিয়ান একটু রেগে বলল, “মানে, ও তো ওষুধ খেয়ে এখানেই শুয়ে থাকতে পারত। কে বলেছে, ওকে তিন মাইল দূরে যেতে হবে?”

“আমিও তাই বলেছিলুম,” রূপ বলল। “কিছুতেই রইল না। বলল, রাত্তিরে যাওয়ার দরকার হলে কী করব?

দিয়া বলল, “ছাড়, শুক ওরকমই। ভীষণ খেয়ালি। কোনও প্ল্যান ওর জন্যে করা যায় না।”

বাবাই বলল, “যাঃ, ভীষণ আনস্পোর্টিং। আমি ভাবতেই পারছি না, শুক চলে গিয়েছে।”

“চলে না-ও যেতে পারে, নীচে তো আপাতত নেমেছে। দেখা যাক।”

“এতটা বাস জার্নি করে যাবে অসুস্থ অবস্থায়?” আরিয়ান যেন গজরাচ্ছে।

“আরে না না, মাঠাবুরুতে একটা ডাকবাংলো আছে না? ওখানে দু’দিন থেকে ঠিকঠাক হয়ে চলে আসবে। যদিও তখন আমাদের চলে যাওয়ার সময় হয়ে যাবে।”

“আসলে শুক্‌স এত কষ্ট করতে পারে না। কষ্ট বলতে ফিজিক্যাল নয়, লিভিং-এর কষ্ট। ওর হট এন কোল্ড শাওয়ার, ওর এসি সুইমিং পুল… ওর নানান রকম আউটফিটস,” আরিয়ান বলল।

“তা হলে তো কোনও দিনই অ্যাডভেঞ্চার করতে পারবে না। নতুন নতুন জায়গা দেখাও হবে না,” বাবাই আশ্চর্য।

“কেন হবে না? ফাইভ স্টার ফোর স্টার হোটেলে থাকবে, স্কুবা ডাইভিং করবে কোরালরিফে, ওয়াটার স্কিয়িং করবে…এইসব অ্যাডভেঞ্চার।”

হতাশ গলায় বাবাই বলল, “ও কি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক্‌স-এর অ্যাডভেঞ্চারগুলো দেখে না? ফার্স্ট ওয়র্ল্ডে জন্মালেই পারত। তবে সেখানেও স্কুল ডে’জ থেকেই বাচ্চাদের নানা এক্সকারশনে নিয়ে যায়। সেগুলো বুনো, পাহাড়ি, জংলি জায়গাতেই হয়।”

আরিয়ান তার দিকে তাকিয়ে কালো কফিতে চুমুক দিল, “আমি কিন্তু ওর মতো নই।”

উজ্জ্বল বলল, “স্বাভাবিক, তুই আফটার অল একটা পুরুষমানুষ। কিছু হল না হল, পালিয়ে যাওয়ার কাপুরুষতা তোর কাছ থেকে এক্সপেক্ট করা যায় না।”

“দেখ, আমরা কে কতটা কাপুরুষ, কে কতটা মিন, কার অ্যাডজাস্ট করার ক্ষমতা কতটা, দায়িত্ববোধই বা কীরকম, সবটারই কিন্তু পরীক্ষা হয় এইরকম পরিস্থিতিতে।” বাবাই এত কথা বলে ফেলবে কেউ ভাবেনি।

দিয়া বলল, “শুধু তা নয়, আমরা কে কতটা ওপ্ন, একটা ছোট দল তারই মধ্যে পরস্পরের প্রতি কতটা দায়িত্বশীল, এগুলো খুব জরুরি। ওই সব ডিস্কোথেক-টেক কিন্তু এসব শেখায় না। তফাতটা এখানে এসে আমার আরও মনে হচ্ছে। থ্যাঙ্কিউ উজ্জ্বল, থ্যাঙ্কস রূপ। শুকস ঠিক করল না, ভেরি আনস্পোর্টিং।”

“ডিস্কোথেকের অন্য দিক আছে,” আরিয়ান বলল। “মডার্ন ওয়র্ল্ডের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে তো হবে? সে দিক থেকেও অ্যাডাপ্টেবল হতে হবে। তুই গেলি বিদেশে, নাইট ক্লাব-টাবে, জগন্নাথ হয়ে বসে রইলি, চলবে?”

উজ্জ্বল বলল, “বেশ তো। বহু বিদেশি, আমি হিপি-টাইপদের বাদ দিচ্ছি, বহু বিদেশি বাউলমেলায় যায়, তারা কি এসব আসরে নাচে?”

“সে তো এ দেশিরাও নাচে না। কেন বল তো? নাচ আমাদের ট্র্যাডিশনে নেই। নেচে-গেয়ে মজা করাটা আমরা জানি না।”

“বাজে কথা বোলো না,” বাবাই হঠাৎ ঝেঁঝে উঠল। “আমরা যখন দল বেঁধে এক্সকারশনে যাই, পিকনিকে যাই, গান গাই না কোরাসে? গান গাই, তালি দিই। প্লাস আছে আমাদের আড্ডা কালচার। প্রত্যেক দেশেরই কিছু-কিছু নিজস্ব জিনিস থাকে। শান্তিনিকেতনে দোলের দিনে ছেলে-মেয়েরা নাচে না? মাঠে ঘাটে যেখানেই খানিকটা জায়গা পাবে নাচবে, গাইবে। বাইরের লোকও তাতে যোগ দেয়। তাই বলে কি সারা বছর যখন-তখন ধেই-ধেই করা নাচতে হবে?”

“ফ্যান্টাস্টিক,” আরিয়ান সংক্ষেপে বলল।

“কোনটা,” রূপ পাশে বসে ছিল আস্তে প্রশ্নটা রাখল।

“হার প্যাশন,” উত্তর হল। একটু পরেই আরিয়ান বলল, “তোমরা তো নাচতে জানো, আমিও জানি। নাচ-গান একটু না হলে জমে?”

অমনি উজ্জ্বল বলল, “আমি একটা গান জানি,” বলেই সে ধরল, ‘খর বায়ু বয় বেগে, চারি দিক ছায় মেঘে, ওগো নেয়ে, নাওখানি বাইয়ো।’

টপ করে উঠে নাচ ধরল প্রথমে দিয়া। তারপর বাবাই, তারপর আরিয়ান। দিয়ারটা যাকে বলে মডার্ন বা ক্রিয়েটিভ ডান্‌স, বাবাইয়েরটা কত্থক। আরিয়ানেরটা ব্রেক। একটু পরে বেশির ভাগই গানে গলা লাগাল। রূপও দাঁড়িয়ে উঠে তালে-তালে একটু-আধটু কোমর দোলাতে লাগল। সবচেয়ে আশ্চর্য করল উজ্জ্বল, এদিক থেকে ওদিক লাফিয়ে, হাত-পা কারাটের ভঙ্গিতে ছুড়ে এমন জমিয়ে দিল যে, ঘুরে-ঘুরে গানটা হতে লাগল। এবং ওদের ঘিরে বেশ কিছু মেয়ে-পুরুষ জমা হয়ে গেল। হাতের ঝুড়ি, কাস্তে, কোদাল নামিয়ে রেখে ওরা তালে তাল দিয়ে দুলে-দুলে দারুণ উপভোগ করতে লাগল।

আরিয়ান বলে উঠল, “হোয়াই ডোন্ট ইউ জয়েন আস?”

সবাই হেসে উঠল, ওরা কিন্তু ঠিকই বুঝেছে। উঠে দাঁড়িয়ে নিজেদের ভঙ্গিতে ওরা যথাসাধ্য নাচল। ওদের ছেলেগুলো উজ্জলের মতো লাফিয়ে-লাফিয়ে, এদিক থেকে ওদিক, নানান মোচড় দিতে লাগল। শেষকালটায় দাঁড়াল, এরা সবাই হাতে তাল দিয়ে গান করছে, আর উজ্জ্বল ও মুণ্ডারা নাচছে।

শেষ হলে একমুখ হাসি নিয়ে মুণ্ডারা তাদের কাজে চলে গেল। আরিয়ান সবার দিকে তাকিয়ে বলল, “এটা কী হল?”

বাবাই বলল, “মুণ্ডারা ছৌ-এর স্টেপ দিচ্ছিল। মার্শাল ডান্স।”

আরিয়ান বলল, “ওরা দুর্দান্ত। বাট আয়াম ইন্টারেস্টেড ইন উজ্জ্বল’স পার্ফম্যান্স, ওটাকে কী বলে?”

উজ্জ্বল একমুখ হেসে বলল,“অ্যাডাপ্টেবিলিটি।”

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress