Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » ট্রেকার্স || Bani Basu » Page 13

ট্রেকার্স || Bani Basu

কারা এল? সর্বনাশ! আবার দুটি তরুণ-তরুণী। এবার কি মেয়েটিই ছেলেটিকে ওই কথা বলবে নাকি? ‘শোব, কিন্তু বিয়ে-টিয়ে করব না।’ তিনি উৎকর্ণ হয়ে রইলেন, কারণ ভয় পেলেও তাঁর কৌতূহল ছিল। শুনলেন ছেলেটি মেয়েটিকে বলছে, “আমি কিন্তু তোর উপরই ভরসা করছি। তুই-ই ওখানে নিয়ে গিয়েছিলি আমাকে। আধুনিকতায় আমার আপত্তি নেই, কিন্তু বেলেল্লাপনায় আছে। আমি নাচ পর্যন্ত যেতে পারি, যদিও জিনিসটা কেমন অর্থহীন ন্যাকাপনা লাগে আমার। তবু যাই হোক, তুই নাচলি আমি একটু কোমর দোলালুম, কি স্টেপস নিলুম ঠিক আছে। এক পেগ দু’পেগ খেতেও আমার আপত্তি নেই। কিন্তু তাই বলে সিগারেটে কোকেন? না বলে? দ্যাটস ক্রাইম। এবং রিনা, হঠাৎ আলো নিবে যেতে যে খামচাখামচি শুরু হয়েছিল তা সোজা-সরল-ভাষায় ডার্টি, ডার্টি, ডার্টি।”

“বিশ্বাস কর, আমি জানতাম না এরকম হবে,” মেয়েটি ক্ষীণ গলায় বলল। “আমি তো বেশি যাই না। যেদিন যাই মিউজিকের সঙ্গে নাচ হয়, আমার ভালই লাগে।”

“রিনা, বি রেডি ফর ডার্টিয়ার অ্যান্ড মোর ডেঞ্জারাস থিংস। জানিস কী, ওখানে দু’জন মেয়ের ড্রিঙ্কে কিছু ড্রাগ মেশানো হয়েছিল যাতে ওরা অজ্ঞান হয়ে যায়? তারপর তাদের রেপ করা হয়েছে।”

মেয়েটি যেন শক খেয়ে সোজা হয়ে গেল। বলল, “যাঃ!”

“রিনা, অন্ধকার হতেই খামচানি খেতে-খেতে তোকে নিয়ে আমি বেরিয়ে এলুম। আমি ভেবেছি, জাস্ট লোডশেডিং। আমরা বাইরে বেরিয়ে কিছুদূর যাবার পর আলো এসে গিয়েছিল, কিন্তু আমরা আর ফিরিনি। যারা ছিল তারা কী অবস্থায় ছিল আমরা জানি না, কিন্তু উজ্জ্বল মিথ্যে কথা বলার ছেলে নয়।”

খুব চুপিচুপি দু’জনের মধ্যে কিছু কথাবার্তা হল। তার সবটা তিনি শুনতে পেলেন না। রিনা বলে মেয়েটি বলল, “আমি দেখছি কী করতে পারি। কিছু তো জোগাড় করতে পারবই। তুই যা বলছিস তাতে তো… সত্যি বলছি.. ওরা এতদূর যেতে পারে, আমার ধারণায় ছিল না। দূর, আমার বিশ্রী লাগছে, আমি বাড়ি চললাম।”

“যা, কিন্তু যা বললুম, মনে রাখবি। ইনফর্মেশন আমার চাই-ই।”

মেয়েটি উঠে পড়ে হঠাৎ আবার কেমন ভেঙে গিয়ে বসে পড়ল, মুখ ঢেকে কাঁদতে লাগল।

ছেলেটি ওকে সান্ত্বনা দেবার কোনও চেষ্টা করল না। একটু পরে বলল, “কাঁদছিস, রাগতে পারিস না? রাগগুলো কোন অকেশনের জন্য রেখে দিচ্ছিস তবে?”

মেয়েটি বেজার মুখ উপরে তুলে বলল, “সব কান্নাই কান্না নয় রূপ, দিস ইজ অ্যাঙ্গার, অ্যান্ড অ্যাঙ্গার হ্যাজ মেনি মেনি এক্সপ্রেশন্স,” উঠে চলে গেল। ছেলেটি চুপচাপ বসে রইল। এই তা হলে রূপরাজ! আসলে কম দেখেছেন, তাই চিনতে পারেননি সাঁঝবেলার আলোয়।

একটু পরে সাহস করে তিনি বললেন, “তুমি তো বেশ কড়াধাতের ছেলে দেখছি ইয়ংম্যান।”

সে চমকে উঠল, তারপর তাঁর দিকে ফিরে বলল, “ও, আপনি, কিছু বলছিলেন?”

“বলছিলাম, তুমি তো বেশ কড়া ধাতের।”

“কেন?”

“গার্লফ্রেন্ড কাঁদতে কাঁদতে চলে গেল, একটু সান্ত্বনা পর্যন্ত দিলে না। দিস ইজ টু ব্যাড।”

“রিনা গার্লও বটে, ফ্রেন্ডও বটে। কিন্তু গার্লফ্রেন্ড নয়।”

“আহা, শুধু বন্ধু হলেও কিছু দায় বর্তায়।”

“ওটা দায়ের ব্যাপার নয়। মানে, দু’জনেরই দায়ের ব্যাপার। আপনি বুঝবেন না। একটা ঘটনা ঘটেছে, তাতে আমরা দু’জনেই খুব ডিসটার্বড। উই শুড ডু সামথিং অ্যাবাউট ইট।”

ছেলেটির ঠোঁটের রেখা দৃঢ়তর হল। একটু পরে সে হঠাৎ তাঁর দিকে ফিরে বলল, “আপনি হলে কী করতেন?” তারপর তিনি যা ইতিমধ্যেই জেনে গিয়েছেন, সেই দিয়া আর বাবাইয়ের ঘটনাটা নাম না করে সে তাঁকে বিশদ বলল।

“আমরা যখন তোমাদের বয়সি ছিলাম, এরকম ঘটত না,” তিনি বললেন। “আমাদের মধ্যে এসব জিনিস তখন আসেনি। উই ওয়্যার ব্লেসেডলি পুওরার ইন আওয়ার রিসোর্সেস। ছোটদের মধ্যে মদ-হুল্লোড়ের পার্টি, এ তো বিজ্ঞাপনের সৃষ্টি। এইসব পোশাক, এইসব নাচ, সবই এইসব ঘটনার জন্য তোমাদের প্রস্তুত করে তোলা। একটা বিষচক্র, যাকে বলে ভিশাস সার্কল। তোমাদের জন্যেই পণ্যগুলো চলছে, ওরা চালাচ্ছে তোমরাও চলছ। কোনও সমাজ যখন সম্পূর্ণ টাকার খেলায় পরিণত হয়, তখন তার কোনও মূল্যবোধ থাকে না। তোমাদের দায় কেউ নেবে না রূপরাজ। আগুনের চক্র দাউ দাউ করে জ্বলতে জ্বলতে ঘুরছে। তার ভেতর দিয়ে তোমাদের সার্কাসি লাফ দিতে বলা হচ্ছে। বেশিরভাগই ঝলসে যাবে, একেবারে পুড়ে কাঠকয়লা যদি না-ও হয়।”

“আপনি হলে কী করতেন?” ছেলেটি দ্বিতীয়বার জিজ্ঞেস করল। “ঠিক আছে আপনাদের সময়ে ছিল না, এখন হয়েছে। এখন এই সময়ে আপনি একজন প্রকৃত গুরুজন হলে আমাকে কী করতে বলতেন?”

“তোমাদের পুলিশে যাওয়া উচিত ছিল।”

“ভুল বলছেন, পুলিশ কাউকে ধরতে পারবে না। ওরা যদি তক্ষুনি ওই অবস্থাতেই যেত, তবু একটা চান্স ছিল। কিন্তু এই পাবলিসিটি, ওদেরও দোষ দিতে পারি না। অজ্ঞান করা হয়েছিল বলে ওরা তো কাউকেই শনাক্ত করতে পারবে না, দে আর ডেডলি ক্লেভার।”

ধ্রুবজ্যোতি বললেন, “চিনতে পারার চান্স থাকলে মেরে ফেলত। যাতে খুন করতে না হয়, তাই প্ল্যান করেই করেছে।”

রূপরাজ একটু চমকে উঠল, তারপর গুম হয়ে গেল। কিছুক্ষণ পর স্প্রিং-এর মতো উঠে দাঁড়াল।

“কী হল, চললে?”

সে কোনও কথা বলল না। একেবারে অন্যমনস্ক বা বলা যায়, কিছু ভাবতে ভাবতে চলে গেল। ঘাসটুকু পেরিয়ে যাবার পরে হঠাৎ পেছন ফিরে বলল, “থ্যাংক ইউ।”

Pages: 1 2 3 4 5 6 7 8 9 10 11 12 13 14 15 16 17 18 19 20 21 22 23 24 25

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress