Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » টক ঝাল মিষ্টি পরিবার || Samarpita Raha

টক ঝাল মিষ্টি পরিবার || Samarpita Raha

আরে বড়বৌমা কোথায় গেলে ??
ঐ দেখো ছোটখোকা ছোটবৌমাকে নিয়ে এলো।
শঙ্খ বাঁজা ,উলু দে….
গ‍্যাসে দুধটা কমানো আছেতো?
বড়বৌমা মিচকে হেসে ভাবে আমি বাড়িয়ে এসেছি মা।
এরপর আপনি ঐ দুধে ছোটবৌমাকে নিয়ে সাঁতার কাটবেন।বাড়িতে চায়ের দুধ লাগবে।তাই ছয় প‍্যাকেট দুধ চাপিয়ে দিয়েছি একেবারে।সাত বছরের তিন্নি জানে দুধটা পড়ে গেলে মায়ের কষ্ট হবে।ও ফুলতে দেখে গ‍্যাসটা বন্ধ করে দেয়।

ছোটবৌমার সব নিয়ম মেনে রান্নাঘরে যায় দুধ উতলানো দেখতে।আরে বড়বৌমা গ‍্যাসটা জ্বালিয়ে দাওনি আগে।হ‍্যাঁ মা দেখুন গরম।তাহলে গ‍্যাসটা শেষ হয়ে গেছে।
কাজের মাসি বলে পরশু নুতন গ‍্যাস লাগিয়েছি।তোমাদের বলতে ভুলে গেছি।
তিন্নি বলে মা তুমি আজ ঠাম্মার কাছে বকুনি খেতে!!!
কেনরে মা?
দুধটাতো পড়ে যাচ্ছিল।আমি গ‍্যাস বন্ধ করে দিয়েছি।
দেখছেন মা তিন্নি কেমন বানিয়ে কথা বলতে শিখেছে।কমানো আঁচে দুধ ফুলে উঠেছিল।
গ‍্যাস ধরাতেই দুধ ফুলে উঠে।
দেখলে তুমি ভুল করে হয়ত বাড়িয়ে দিয়ে গেছো।হয়ত ভেবেছ বোনকে আর কষ্ট দেবে না।
কষ্ট না ছাই। এটা ফসকে গেল ।ভেবে নাও উত্তুরে বাতাস শুরু।ওর শরীর হীম করে দেবো।এরপর ছোট বৌয়ের দেমাক ..শীতের আগমনে গাছের পাতা খসে ন‍্যাড়া হয়ে যায় ঠিক ওর দেমাকের পাতা খুলে দেব।দেখতে গেছিলাম যখন ,আমাকে জিজ্ঞেস করে দিদি তুমি ও এম -এ পাশ।কোন রকমে দুবারের পর মাধ্যমিক পাশটা করেছিলাম।
এইভাবে দুইছেলে ও দুইবৌমা নিয়ে বন‍্যাদির সংসার কাটছিল।বড় ছেলের বিয়ের পর পর কর্তাকে হারিয়ে বৌমাকে আঁকড়ে ধরেছিলেন।বড় ছেলের চেয়ে ছোট ছেলে আট বছরের ছোট। ভায়েদের মধ্যে বেশ সুসম্পর্ক।
ছোটবৌ তরকারি কাটে ,শাশুড়ি রান্না করে।ছোটবৌ বলেছে মা আমিও অল্প রান্না পারি।শাশুড়ির বলেছেন তিনি রান্না ভালোবেসে করেন।অসুস্থ হলে করো।
বড়বৌ মেয়েকে নিয়ে ব‍্যস্ত।দ্বিতীয় শ্রেণীতে খুব চাপ।তাই দিদিমনি দিয়েছে।কোচিং এ বসে থাকে।ছোটবৌ বড়জাকে বলে দিদি তিন্নি আমার কাছে পড়তে পারে।তাহলে তোমাকে বাইরে কাটাতে হবেনা।বাড়িতে এসে আবার কোচিং এর পড়া,স্কুলের পড়া।।
নারে ছোট আমি ওর ভিত পোক্ত করার জন্য শিক্ষিকা দিয়েছি।
খাবার টেবিলে বড়বৌ বলে মা তিন্নি যে পড়তে যায়।যাতায়াতে কত খরচ!!তাই একবার পড়িয়ে নিয়ে বাড়ি ফিরি।তাতে ছোট বৌয়ের আপত্তি আছে।
ও দিদি আমি কি তাই বলেছি।বল..লাম তো
থাক ছোটবৌমা আর বড়দের মুখে তর্ক করতে হবে না।
ও তোমার বড় জা।

বর ঘরে এসে বলে তোমাকে যতটা বুঝেছি খারাপ কথা বলার নয়।শিক্ষিত ছেলে ঘর ও বাইরে সামলাতে গেলে কিছুটা নরম হতেই হয়।
সব শুনে বলে তুমি এই বলেছিলে।হ‍্যাঁ তাই।তাহলে বৌদিও তো খারাপ নয়।এমন সময় তিন্নির আবির্ভাব।
কাকু আজ আমি দশটা অঙ্ক বেশি করেছি।তাই মা ফোন ধরতে দিয়েছিল।আজ যেন আমি ভিডিও করেছি।
দেখছ সুকন‍্যা আমাদের তিন্নি মা ভিডিও করেতে শিখে গেছে। সুকন‍্যা তিন্নির মায়ের সব বানানো কথা ভুলে গিয়ে সজিব,সুকন‍্যা ও তিন্নি ভিডিও দেখতে বসে।তাতে সজিব অবাক হয়ে যায়..সুকন‍্যা যা বলেছি সব ঠিক।
সুকন‍্যা টুক করে ভিডিওটা নিজের মোবাইলে নিয়ে নেয়।জায়ের হোয়াটস আপ মুছে দেয়।
তিন্নির মায়ের চিৎকারে তিন্নি পালায়।উত্তুরে বাতাস শুরু…যা পালা এক্ষুনি ।
হ‍্যাঁ গো কাকি চললাম মা না হলে খেঁজুরের রস করে খাবে।আসলে ঠাম্মা ও বাবাকে এই ভিডিওটা দেখাতে হবে।কাকু বলে এবার মা কে মাপ করে দাও।
ঠিক আছে তুমি বললে তাই আর দেখাব না।

সজিব সংসারে আগুন যাতে না লাগে..বৌদি মাকে বাবার মৃত্যুর পর যা যা ভালো করেছে বলতে থাকে।বৌকে আদরে ভরিয়ে দেয়।
সুকন‍্যা সারা বাড়িতে প্রচুর ফুল গাছ লাগিয়েছে।
জবা,টগর,গোলাপ,গন্ধরাজ নানান গাছ।সব ফলন্ত গাছ বাপেরবাড়ি থেকে এনেছে।সব গাছ সুকন‍্যার প্রাণ।ফুলের উপর প্রজাপতির আগমন দেখে মন খুশিতে ওঠে।গোলাপ অবশ্য তুলতে দেয়না।তিন্নি গোলাপ তো ফুলের রানী ..তাই আমরা তুলবনি।তারপর দুজনে খিলখিল করে হেসে ওঠে।
দুর্গা পূজায় বাড়ি যাওয়া হয়নি।দিদি বাপের বাড়ি গেছিল।লক্ষ্মীপূজার আগের দিন ফিরেছে।
সুকন‍্যার ও সাত মাস বিয়ে হয়েছে,এবার ওদের প্রথম পূজা…বাপের বাড়ি যেতেতো ইচ্ছে ক‍রবে।
বরকে সুকন‍্যা বলে উত্তুরে হাওয়া শুরু হয়েছে তুমি ভোরবেলায় তিন্নির জন্য গরুর দুধ আনতে যাওতো একটা টুপি বা মাফলার প ড়ে যেও।আর শোনো কালিপুজোয় আমরা বাপের বাড়ি যাব প্রথমে ,তারপর বাবার থেকে গাড়িটা নিয়ে পিসির বাড়ি চাকদহ যাব।এই প্রাকৃতিক পরিস্থিতির জন্য রাস্তাও ফাঁকা পাব।
বর তারপর বলে আমরা দুজনে রস,গুড় খেতে মড়তে পারব না।কেন আমিতো নিজে গাড়ি চালিয়ে কলেজ যেতাম।বলো কি?
এই মাকে রাজি করাবে?
এখনো বেশ কয়েকদিন বাকি আছে।
না গাড়িটা নিয়ে আসব।তোমাদের বড় বাগানে একটা শেড করে দিও।দেখ সাতমাস ধরে বাবা স্টার্ট দেয়।
বরতো গদগদ ভাবে বলে আমাকে অফিস দিয়ে আসবে।নিশ্চয়।
সুকন‍্যা শীত করছে..উত্তুরে বাতাস শুরু…তাড়াতাড়ি এসো ঘুমিয়ে পড়ি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress