জ্ঞানোদয়
কারণে-অকারণে তক্কো জুড়ে দেয় অধীর।হৃদমাঝারে ছটপটে পাখীটাই এসবের মূলে।তার ছেলে আখর মাঝে-মাঝেই শুধোয়, বাবা, তোমার এত মাথাগরম কেন? প্রশ্নের জবাব না দিয়ে নিরুত্তর থাকে অধীর।আবার কখনো হুঙ্কার, তোর এত মাথাব্যথা কেন? বিষ্ময়ে থ ছেলে। একদিন জবাব দেয়, তোমার সন্তান হয়ে আমি উদ্বিগ্ন হব না।
-না,হবি না।
বাবার সাথে চোপা করতে ইচ্ছে জাগে না। তখন ছেলের সর্মথনে মা সুমতি বলে, ছেলে বড় হয়েছে।ও কিছু খারাপ বলে নি।বোঝার চেষ্টা করো।
-তুমি ছেলের হয়ে ওকালতি করো না।উগ্ররাগে দিকবিদিক শূন্যতায় বিস্ফোরণ অধীরের মুখে।
আখর ভাবে, অবুঝ লোককে বোঝালেও বুঝবে না।আসলে মা ও ছেলের মগজে অশান্তি ও আতঙ্কের যুগপৎ বিচরণ। এভাবেই কাটে দিনগুলো।শান্তির প্রত্যাশায় উভয়েই এখন যেন চাতক।কিন্তু তুচ্ছাতিতুচ্ছ ব্যাপারে অধীরের ক্রমবর্ধমান অশুভ তেজের বহিঃপ্রকাশে অর্গলচ্যুত মানসিকতা।সে বোঝে না, তার ঝাঁঝালো আচরণে পরিবেশে কলুষতার কত দাপাদাপি! অদৃষ্টে ভাগ্যদেবীর লিখন চোখের অন্তরালে।তবে একদিন না একদিন প্রকাশ্যে আসে। কয়েকদিন বাদে তেমনই ঘটে।প্রথমে মুদিখানা,পরে মোবাইলের দোকানে গেল অধীর। পথিমধ্যে আচম্বিতে অন্ধকার চারপাশে।সামনের কিছুই দৃশ্যমান নয়।অবশেষে রাস্তার ওপর ভূলণ্ঠিত…।
অনেকক্ষণ বাবা না ফেরায় আখর মা-র সাথে অকুস্থলে যায়।জানতে পারে, অসুস্থ অধীর এক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
জলবৎ তরলম দুজনের কাছেই। খোঁজ নিয়ে সেই আরোগ্যনিকেতনে রোগীর সন্ধান মেলে। জ্ঞান ফিরেছে অধীরের। ডাক্তার জানায়,উচ্চ রক্তচাপ ও সুগারে আক্রান্ত রোগী।
অস্ফুট স্বরে সে জানায়, অযথা মাথাগরমে আর গলাব না মাথা।অবশেষে জ্ঞানোদয়! আখর ও সুমতি আপাতত স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে।