Skip to content

Banglasahitya.net

Horizontal Ticker
বাঙালির গ্রন্থাগারে আপনাদের সকলকে জানাই স্বাগত
"আসুন শুরু করি সবাই মিলে একসাথে লেখা, যাতে সবার মনের মাঝে একটা নতুন দাগ কেটে যায় আজকের বাংলা"
কোনো লেখক বা লেখিকা যদি তাদের লেখা কোন গল্প, কবিতা, প্রবন্ধ বা উপন্যাস আমাদের এই ওয়েবসাইট-এ আপলোড করতে চান তাহলে আমাদের মেইল করুন - banglasahitya10@gmail.com or, contact@banglasahitya.net অথবা সরাসরি আপনার লেখা আপলোড করার জন্য ওয়েবসাইটের "যোগাযোগ" পেজ টি ওপেন করুন।
Home » জিয়ল, হিজল, সোনাঝুরি আর বনযুঁই || Purabi Dutta

জিয়ল, হিজল, সোনাঝুরি আর বনযুঁই || Purabi Dutta

ঐখানে মা পুকুরপাড়ে
জিয়ল গাছের বেড়ার ধারে
হোথায় হব বনবাসী—
কেউ কোথাও নেই।
………………………….

বিশ্বকবির বড়ো সুন্দর এই কবিতাটি শিশু থেকে টানা শেষ বয়সেও মন টানে ঐ ‘জিয়ল’ নামের গাছটি। বিশাল গাছ খাল বিল জলের ধারে সে বৃহৎ — ফুল ফল নিয়ে ঝুকে থাকে জলের দিকে — বাবলা গাছের মতন তার আঠা প্রয়োজন যোগায়। প্রায় অবলুপ্ত। সব ছাপিয়ে কবিত্ব খুঁজে নেন কবিরা।

আমার বক্তব্য আরও একটি প্রায় বিলুপ্ত এমন নামের এক গাছ- ‘হিজল’
হিজল গাছ কিন্ত জিয়ল গাছের মতো মানুষের বন্ধু নয় বরং শত্রু।

বৈশাখ জ্যেষ্ঠ মাসে ফুল ফোটে আর ঝিরি ঝিরি ঝরে তার পাপড়ি, জলের ‘পরে। হ্যাঁ, জলাশয়ের পাড়েই এ বৃক্ষের স্বভাবগত জন্ম ও জীবনকাল। এই জলে পাপড়ি বিসর্জনের হিজল ফুলের গাছ আজ প্রায় আর দেখাই যায় না। নদীর ধারে ,পুকুরপাড়ে অর্থাত জলাশয়ের কাছেই বিশাল গাছ, মোটা গাছের গুঁড়ি ফুল ফোটে রাতে অথচ সাদা নয় হালকা গোলাপী ও লাল আর এক মাদকতাময় সুরভি, যেমন থাকে ছাতিম ফুলে। রাতের ফুল সাদা হয় সুগন্ধী থাকে কিন্ত মাদক মিষ্টি গন্ধ ছাড়াও এ ফুল, রঙ কোথা থেকে পেলো? রবির প্রভা না পড়লে ত রাতের ফুলে রঙ ধরে না। খুব সম্ভবত অরুনালোকের স্পর্শেই তার সেই আশীর্বাদ।

একটু বেলা হলেই তা ঝরে পড়ে যায়।

ঝিরি ঝিরি পাপড়ি তার হিজল নামের দোসর , জলাশয়ে পড়ে তার স্বপ্নলালিম ছায়া । এখন এ গাছ ও ফুল বিলুপ্ত প্রায়। হয়ত তা সমাজের পক্ষে মঙ্গল কারণ এর ফল বিষাক্ত।  ইংরেজী নাম Indian Oak।

গ্রীষ্মকাল এলেই গাঢ় রঙের ফুলে ছেয়ে যায় কয়েক প্রজাতির বৃক্ষের ডালপালা। হলুদ, বেগুনি, গোলাপি কিংবা লাল রং। ঝরে পড়া ফুলে ছেয়ে যায় কোনো সবুজ মাঠ বা গাছতলা।

আবার প্রচন্ড দাবদাহে, হলদে আলোয় ছেয়ে থাকে পথের ধারে আরও একটি গাছ,নাম যার “বাঁদর লাঠি”– পোষাকি নাম “অমলতাস” রবীন্দ্রনাথের দেওয়া। ফলগুলো লম্বা লাঠির মতো ভেতরের শাস খেতে টকমিষ্টিঝাঁজ। এই লম্বা ঝুটির হলুদ রঙের ফুলের অনেক নাম বাঁদর লাঠি , সোঁদালু , সোনাঝুরি (Golden shower tree) গনগনে সোনারঙের ফুল। বৈশাখ জ্যেষ্ঠ মাসে কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়ার সাথে পাল্লা ভারীর দাপট। ফলগুলি লাঠির মতো, আর ভেষজ গুন আছে। প্রসঙ্গত আরও একটি ফুলগাছের কথা মনে পড়ে– ভাঁট ফুল, বা বনযুঁই যার আবার একটা বুনো নাম ঘেটু। না বাগানে কেউ সখ করে এ গুল্মজাতীয় গাছ লাগান না, আগাছা জঙ্গলেই তার স্থান। এ অবহেলিত গাছের ফুল বেগুনি- সাদা রঙবাহারি গড়ন আর মন মাতানো বেল/যুঁই সুগন্ধি। তবে বদনামও আছে বিষ হাওয়ার প্রাবল্য। গ্রীষ্মপ্রধান দেশে ফুলের সমারোহের ত সীমারেখা নেই– গন্ধরাজ, বকুল, স্বর্ণচাঁপা, আর গন্ধবিহীন নানা রঙের কাঞ্চন। আরও কত কি… এরা সব আমাদের জীবনসাথী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Powered by WordPress